ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তসরিফার ইস্যু মূল্য নিয়ে প্রশ্ন

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ২০ মার্চ ২০১৫

তসরিফার ইস্যু মূল্য নিয়ে প্রশ্ন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আগামী সপ্তাহ থেকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে টাকা তুলতে যাচ্ছে তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ। তবে কোম্পানিটির প্রকাশিত প্রসপেক্টাসের উল্লেখ করা মুনাফা, সম্পদ ও বস্ত্র খাতের অন্যান্য কোম্পানির শেয়ার দর বিশ্লেষণ করে বাজার সংশ্লিষ্টরা ইস্যু মূল্য প্রশ্ন তুলেছেন। তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে ইপিএস ও সম্পদ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে ২৬.৪০ শতাংশ হারে মুনাফা করেছে। সর্বশেষ ২০১৩ সাল শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৪.৪১ টাকায়। সে হিসাবে বিদ্যমান সম্পদের চেয়ে কম দরে পুঁজিবাজারে আসায় আইপিও পরবর্তী সময়ে এনএভিপিএস কমে দাঁড়াবে ৩০.৯১ টাকায়। অর্থাৎ তসরিফায় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার প্রতি ২৬ টাকা বিনিয়োগ করলে ৩০.৯১ টাকা সম্পদের মালিক হবেন। এছাড়া কোম্পানিটি ২০১৩ সালে যে হারে মুনাফা করেছে তার ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আইপিও পরবর্তী সময়ে শেয়ারহোল্ডাররা শেয়ার প্রতি ২.৬৪ টাকা বা ২৬.৪ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। কোম্পানিটি যদি আইপিও পরবর্তী ব্যবসায়িক উন্নতি করতে পারে, তাহলে শেয়ারহোল্ডারদের প্রাপ্তির পরিমাণ আরও বাড়বে। তবে তালিকাভুক্ত হওয়া অন্যান্য কোম্পানির মতো তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের মুনাফার হার কমে গেলে লভ্যাংশের পরিমাণ কমে যাবে। এদিকে অধিকাংশ কোম্পানি মুনাফার সম্পূর্ণ লভ্যাংশ হিসাবে শেয়ারহোল্ডারদের দেয় না। তাই চলমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় কোম্পানিটি আগামীতে কেমন লভ্যাংশ দিতে পারে তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ যদি শেয়ার প্রতি ২.৬৪ টাকা মুনাফা করে সেক্ষেত্রে ওই আয়ের মধ্য থেকে ২ টাকা বা ২০ শতাংশ হারে লভ্যাংশ দিতে পারবে শেয়ারহোল্ডারদের। এমতাবস্থায় একজন বিনিয়োগকারী যদি টাকা ব্যাংকে ডিপোজিট করেন, তাহলে ঝুঁকি ছাড়াই ১০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। এক্ষেত্রে একজন বিনিয়োগকারী ২৬ টাকা বিনিয়োগ করে ২.৬ টাকা বা ২৬ শতাংশ হারে পাবে। আর তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে ব্যবসা করতে গিয়ে নানা ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। এক্ষেত্রে কোম্পানিটি বিগত বছরের তুলনায় মুনাফা বেশি বা কম উভয়ই করতে পারে। এদিকে সম্পদ ও আয়ের তুলনায় তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ে তালিকাভুক্ত ভাল কোম্পানি রয়েছে বিনিয়োগের জন্য। যেসব কোম্পানিতে তসরিফার চেয়ে তুলনামূলক কম দরে বিনিয়োগ করা যাবে। তারপরও বেশি সম্পদের মালিকানা পাওয়া যাবে। সম্প্রতি তালিকাভুক্ত হামিদ ফেব্রিকসের এনএভিপিএস ও ইপিএস বেশি রয়েছে তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ে। কিন্তু তারপরও হামিদ ফেব্রিকসের শেয়ার পাওয়া যাচ্ছে তসরিফার ন্যায় ২৬ টাকায়। দেখা গেছে, ২০১৩ সালে ইপিএস ৫.০৩ ও এনএভিপিএস ৪১.১৪ টাকা ছিল হামিদ ফেব্রিকসের। যে কোম্পানির ২০১৪ সালে আরও বেড়ে দাঁড়ায় ইপিএস ৫.৫৮ টাকা ও এনএভিপিএস ৪৬.৭৮ টাকা। সে হিসাবে তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ে ব্যবসায়িক পারফরম্যান্সে অনেক এগিয়ে রয়েছে কোম্পানিটি। প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের এনএভিপিএস কম ও ইপিএস কাছাকাছি রয়েছে তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের। আর এই কোম্পানির শেয়ার পাওয়া যাচ্ছে তসরিফার নির্ধারিত দর ২৬ টাকার নিচে ১৯.৪ টাকায়। প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ২০১৪ সালে ইপিএস হয়েছে ২.২৩ টাকা ও এনএভিপিএস ২২.৩৬ টাকা। উল্লেখ্য, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের সঙ্গে ১৬ টাকা প্রিমিয়ামে ৬৩ কোটি ৮৭ লাখ ২১ হাজার ২০০ টাকা উত্তোলন করবে। এক্ষেত্রে কোম্পানিটি ২ কোটি ৪৫ লাখ ৬৬ হাজার ২০০ শেয়ার ইস্যু করবে।
×