ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শক্তি ফুরিয়ে আসছে আইএসের

প্রকাশিত: ০৪:১০, ২০ মার্চ ২০১৫

শক্তি ফুরিয়ে আসছে আইএসের

বিশ্বের শীর্ষ জঙ্গী সংগঠনের শক্তি ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে। আরবীতে যাকে ‘দায়েশ’ বলা হয়, সেই ইসলামিক স্টেট বা আইএস ভেতর থেকেই ক্ষয়ে পড়তে শুরু করেছে। জঙ্গী দলটি এর বিদেশী ও স্থানীয় সমর্থকদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে জটিল সমস্যায় যেমন পড়েছে, তেমনি যুদ্ধের ময়দানে প্রতিপক্ষের কাছে পরাজয় বরণ করে চলছে। এখন আর সামরিক তৎপরতা চালানোর ক্ষেত্রে তেমন কার্যকর পরিচয় দিতে পারছে না। কোন্দল, স্বপক্ষ ত্যাগ এবং রণাঙ্গনে বিপর্যয় সংগঠনটির প্রাণশক্তি নিঃশেষ করে দিচ্ছে। কোথাও কোন জনসমর্থন পায়নি এরা। নৃশংসভাবে তারা মানুষ হত্যা যেমন করছে, তেমনি জনপদ, ঘরবাড়ি, প্রাচীন ঐতিহ্য ধ্বংস করে দিচ্ছে। শুধু প্রাচীন স্থাপত্য ভাঙ্গা নয়, জাদুঘরে সংরক্ষিত ভাস্কর্য, প্রাচীন নগরীর স্থাপনা, এমনকি পিরামিড ভাঙ্গার কাজও করছে। এই জঙ্গীরা নিজেদের ‘অজেয়’ এমন ধারণা দিয়েছিল। তাদের সহিংস স্বেচ্ছাচারী শাসনাধীনে বসবাসরত মানুষের মন থেকে বিভীষিকা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তাদের দখল করা এলাকার মানুষ অত্যন্ত অসহায়। নির্মমতা, নৃশংসতার শিকার তারা। জঙ্গীরা ধর্মকে সামনে রেখে সব অপরাধমূলক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা এক কল্পিত ‘খেলাফত রাষ্ট্র’ নামক ইসলামিক রাষ্ট্রের আওতায় বিভিন্ন গোত্রের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিল। ইরাক, সিরিয়া ও লিবিয়ার বিশাল এলাকা এবং মিসরের কয়েকটি শহর তারা দখল করে সেখানে বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে। গত বছরের গ্রীষ্মে ইরাক ও লিবিয়াতে জঙ্গীগোষ্ঠীটি বিশাল এলাকা দখল করে। দেশ দুটোতে তখন অস্থিতিশীল অবস্থা। যার সুযোগ তারা নেয়। গত বছর তাদের প্রবল উত্থানের পর কেবল আইএসের বিজয়গাথাই শোনা গেছে। এরা বিভিন্ন শহর থেকে সরকারী কিংবা প্রতিপক্ষের লোকজনদের বিতাড়িত করছে। চালিয়েছে নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ। নয় মাস পর ইরাকের বিশাল অংশ আইএস জঙ্গীদের দখলমুক্ত হয়েছে। এই প্রথম আইএসকে বিতাড়িত করার খবর শোনা গেল। গত এক সপ্তাহ ধরে ইরাকী সেনা ও শিয়া মিলিশিয়া যোদ্ধারা মিলিতভাবে অভিযান চালিয়ে জঙ্গীদের হটিয়ে দিতে সক্ষম হয়। সব রণাঙ্গনেই তারা পর্যুদস্ত হয়ে এখন পালিয়ে যাচ্ছে। পালানোর সময় তারা ধরা পড়ার ভয়ে নারীর ছদ্মœবেশে পালাচ্ছে। ইরাকী সেনারা এ রকম ২০ জনকে আটক করেছে। বোরকার নিচে নারী সেজে, মুখে প্রসাধনী মেখে তারা যুদ্ধক্ষেত্রে থেকে পালাচ্ছে। কিন্তু পালিয়ে তারা বেশিদিন থাকতে পারবে না। ইরাক আইএস মুক্ত হওয়ার পর সিরিয়া, লিবিয়া ও মিসরও আইএস মুক্ত হবে। যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য আশঙ্কা করছে আইএস জঙ্গীরা সেদেশে অনুপ্রবেশ করতে পারে। আইএস জঙ্গীতে বাংলাদেশের সন্ত্রাসী দল জামায়াতের কিছু কর্মীও যোগ দিয়েছে বলে প্রচার রয়েছে। কয়েকজন যুদ্ধ থেকে পালানোর সময় আইএসের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে। বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের যে প্রসার ঘটেছে দীর্ঘদিন ধরে, তা হঠাৎ আইএসের হাত ধরে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। কিন্তু নানামুখী কারণে তাদের দিন ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে। এদের বিনাশই কাম্য যে কোন দেশের জন্য।
×