ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

দু’তিন সপ্তাহের মধ্যে নতুন সরকার

নেতানিয়াহুই জিতল

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ১৯ মার্চ ২০১৫

নেতানিয়াহুই জিতল

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মঙ্গলবারের নির্বাচনে সম্পূর্ণভাবে জয়লাভের পর আগামী দু’তিন সপ্তাহের মধ্যে নতুন সরকার গঠনের আশা করছেন। তাঁর দক্ষিণপন্থী লিকুদ পার্টি বুধবার একথা জানায়। পার্টির এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য অবিলম্বে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করতে আগ্রহী।’ এতে আরও বলা হয়, নেতানিয়াহু সম্ভাব্য জোট শরিকদের নিতে রাতে ক্ষুদ্র দলসমূহের নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন। খবর এএফপির। এর আগে নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়, নেতানিয়াহু তার একরাশ দুর্বলতাকে তুলে ধরে চালানো নির্দয় প্রচারাভিযান অগ্রাহ্য করে মঙ্গলবারের নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। এখন তিনি চতুর্থ মেয়াদে একটি নতুন সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন। নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি পার্লামেন্টের ১২০টি আসনের মধ্যে ৩০টি আসন দখল করে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মধ্য-বামপন্থী জায়োনিস্ট ইউনিয়ন জোটকে অনায়াসে পরাস্ত করতে সক্ষম হয়। নেতানিয়াহু ও তাঁর মিত্ররা এর আগের একটি বুথ ফেরত জরিপে আত্মহারা হয়ে নেচে-গেয়ে বিজয় উৎসব করতে থাকেন। জরিপে লিকুদরা সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছে দেখানো হয়। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীরা জোর লড়াইয়ের অঙ্গীকার করলেও ইসরাইলী রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সকল ভোট গণনার আগেই একমত হন যে, নেতানিয়াহু সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন এবং তাঁর প্রতি সম্ভাব্য সমর্থন প্রদানকারী ডানঘেঁষা দলগুলো অধিক আসনে জয়ী হচ্ছেন। গত শুক্রবার প্রকাশিত প্রাক-নির্বাচনী জরিপ থেকে এটা একটা বিস্ময়কর ঘুরে দাঁড়ানো। সে সময় বলা হয়েছিল আইনজাক হারজাগের নেতৃত্বে জায়োনিস্ট ইউনিয়ন ৪ থেকে ৫টি আসনে এগিয়ে থেকে শক্ত অবস্থানে আছে এবং লিকুদের আসন সংখ্যা হবে ২০। এই ব্যবধান ঘোচাতে নেতানিয়াহু শেষ মুহূর্তের পোড়া মাটি প্রচারণায় অঙ্গীকার করেন যে, তিনি যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন ততদিন কোন ফিলিস্তিনী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে না। এই বক্তব্য দিয়ে তিনি আরব নাগরিকদেরও অপমান করেন। নেতানিয়াহু ১৯৯০ এর দশকে তিন বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০০৯-এ আবার ক্ষমতায় ফিরে আসেন। তিনি উল্লসিত হয়ে বলেন, এটা ‘একটি বিপুল বিজয়।’ নেতানিয়াহু বলেন, তিনি ‘জাতীয় শিবিরের’ সকল দলীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং ‘আর কোন হৈ চৈ’ ছাড়াই সরকার গঠনে তাঁকে সাহায্যের আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার সকালে তেলআবিবের একটি উন্মুক্ত স্থানে লিকুদের বিজয় সমাবেশে উচ্ছসিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি ইসরাইলী জনগণের জন্য গর্বিত, যারা এই সঙ্কট মুহূর্ত জানে কোনটা গুরুত্বপূর্ণ আর কোনটা নয় এবং যা গুরুত্বপূর্ণ তার সমর্থনে দাঁড়াতে হবে।’ ‘আমাদের সকলের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সত্যিকারের নিরাপত্তা, সামাজিক অর্থনীতি ও সদৃঢ় বন্ধুত্ব।’ তবে এটা দেখার বিষয় কি করে তার বিভেদ সৃষ্টিকারীÑ অনেকে যাকে বলেন বর্ণবাদী-প্রচারাভিযানের কৌশল একটি ফাটল ধরা ইসরাইল শাসনে তার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করবে। হারজাগও এই নির্বাচনী জয়কে ‘একটি অবিশ্বাস্য অর্জন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, তিনি একটা আলোকে দল গঠন করেছেন এবং এখনও ‘ইসরাইলে একটি প্রকৃত সামাজিক সরকারের’ নেতৃত্বদানের আশা করেন যেটি ‘আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিতে বসবাসের আশা পূরণ করবে।’ ইসরাইলী সংবাদপত্র হারেজকে হারজাগ বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি একমাত্র একটি ঐক্যের সরকারই ইসরাইলী গণতন্ত্রের দ্রুত বিভক্ত হয়ে পড়াকে এবং অদূর ভবিষ্যতে একটি নতুন নির্বাচনের সম্ভাবনাকে রোধ করতে পারে।’
×