ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অনিশ্চয়তায় উগ্র ডানপন্থীরা

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ১৮ মার্চ ২০১৫

অনিশ্চয়তায় উগ্র ডানপন্থীরা

ইসরাইলের উগ্র ইহুদীবাদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আভিদগর লিয়েবারম্যান গত মাসে টেলিভিশনে প্রচারিত প্রাক নির্বাচনী বিতর্কে খোলাখুলিভাবে নিজের আরববিরোধী মনোভাব প্রকাশ করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি ক্ষুদ্র আরব দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার পাশাপাশি নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে করে তুলেছেন অনিশ্চিত। ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস। প্রতিপক্ষের আরব রাজনীতিককে উদ্দেশ করে লিয়েবারম্যান বলেন, গাজা বা রামাল্লায় না যেয়ে কেন আপনি এখানে (টিভি স্টুডিও) এসেছেন? কেনইবা আপনি এখানে (ইসরাইল নিয়ন্ত্রিত ভূখ-ে)? আপনি এখানে বাঞ্ছিত নন কারণ আপনি ফিলিস্তিনী নাগরিক। লিয়েবারম্যান প্রকাশ্যে সব সময় ইসরাইলের আরব নাগরিকদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে থাকেন। তার মতে, এরা বিশ্বাসঘাতক এবং আরব অধ্যুষিত এলাকাগুলো ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষের অধীনে ন্যস্ত করা উচিত। লিয়েবারম্যানের প্রতিপক্ষ আরব রাজনীতিকের নাম আইমান ওদেহ। জবাবে তিনি বলেন, ‘নিজ মাতৃভূমিতে আমি সব সময়ই স্বাগত। এই প্রকৃতি এর চারপাশে যা কিছু আছে আমি এসবেরই অংশ।’ আরবী ধাঁচের হিব্রুতে ওদেহ এ কথাগুলো বলেন। অন্যদিকে লিয়েবারম্যান সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র মলদোভা থেকে আগত একজন অভিবাসী। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইসরাইলী টেলিভিশন চ্যানেল টুতে ওই বিতর্ক প্রচারিত হয়। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী আইসাক হারজাগের মধ্যে একটি বিতর্কও চ্যানেলটি প্রচার করেছে। তবে এবারের টিভি বিতর্ক হাইফার আইনজীবী ৪০ বছর বয়সী ওদেহের জন্য একটি বিরাট সুযোগ এনে দিয়েছে। ওদেহ এখনও পর্যন্ত নির্বাচিত হয়ে পার্লামেন্টে যেতে পারেননি। তবে লিয়েবারম্যানের সঙ্গে ফেব্রুয়ারির ওই বিতর্ক তাকে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে যে, এবারের নির্বাচনে তিনি অন্য দলগুলোর ক্ষমতায় যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। ইচ্ছায় হোক অথবা অনিচ্ছায় লিয়েবারম্যান তাঁর দেশের আরব রাজনীতিকদের ভেতরের শক্তি জাগিয়ে তুলেছেন। ঠিক নির্বাচনের আগে দিয়েই তিনি এমন কাজটি করেছেন। ইসরাইলে ১৭ লাখ আরব রয়েছে। এত বছর পর্যন্ত নির্বাচনে তারা তেমন কোন ভূমিকা পালন করতে পারেনি। তাদের ছোট কিছু রাজনৈতিক দলও রয়েছে। যারা এতকাল পর্যন্ত পরস্পর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোন তাগিদ বোধ করেনি। কিন্তু ওই বিতর্কের পর তারা এখন একতাবদ্ধ। দেশটিতে এ পর্যন্ত আটটি ডানপন্থী সরকার ক্ষমতায় এসেছে। এই সরকারগুলো ক্ষমতায় থাকার সময় আরবদের অবস্থা যথেষ্ট কোণঠাসা হয়েছে। সর্বশেষ জনমত জরিপে দেখা গেছে, এবারের নির্বাচনে আরব জোটটি তৃতীয় বৃহত্তম শক্তি হয়ে উঠতে পারে। পার্লামেন্টের মোট ১২০টি আসনের মধ্যে এই জোট পেতে পারে ১৩টি আসন। এর ফলে সরকার গঠনের জন্য নেতানিয়াহুর ৬১টি আসন পাওয়া কঠিন হবে। এছাড়া লিয়েবারম্যানের ইসরাইল বেইতানু দল প্রত্যাশার চেয়ে ৩.২৫ শতাংশ কমে যেতে পারে। আরব দলগুলোর জোট জয়েন্ট লিস্টের প্রচারাভিযানকর্মী ২৫ বছর বয়সী ছাত্র জোসেফ শাকুর বলছেন, ‘জাদু এখন জাদুকরের ওপর খেলা দেখাতে শুরু করেছে’, কেউ যখন নিজেই নিজের ফাঁদে আটকা পড়ে বোঝাতে আরবরা এ ধরনের ভাষা ব্যবহার করে থাকে। যদিও পশ্চিম তীর বা গাজার মতো পূর্ব জেরুজালেমের আরব ফিলিস্তিনী সবার সমান ভোটাধিকার নেই তবুও নির্বাচনে তাদের উপস্থিতির হার একদম কম নয়। তবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হওয়ায় তারা এতকাল নির্বাচনের মাঠে কোন বড় ভূমিকা পালন করতে পারেনি।
×