ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্যবসায়ীদের ধ্বংস না করে উন্নয়নের সুযোগ দিন ॥ কাজী আকরাম

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১৭ মার্চ ২০১৫

ব্যবসায়ীদের ধ্বংস না করে উন্নয়নের সুযোগ দিন ॥ কাজী আকরাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রাজনীতির নামে হরতাল-অবরোধ দিয়ে ব্যবসায়ীদের ধ্বংস না করে উন্নয়নের সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ। সোমবার দুপুরে এফবিসিসিআই সম্মেলন কক্ষে কাউন্সিল অব চেম্বার প্রেসিডেন্টদের সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবসায়ীদের অবদান সবচেয়ে বড়। কিন্তু হরতাল-অবরোধের কারণে ব্যবসায়ীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। রাজনীতির নামে হরতাল-অবরোধ দিয়ে ব্যবসায়ীদের এভাবে ধ্বংস না করে উন্নয়নের সুযোগ দিতে হবে। যাতে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে পারে। এফবিসিসিআইর প্রথম সহ-সভাপতি ও কাউন্সিল অব চেম্বার প্রেসিডেন্টদের সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন। একই দিন সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংলাপ অনুষ্ঠানে কাজী আকরাম উদ্দিন বলেন, আন্দোলন করেছি, রাস্তায় নেমেছি, আলোচনা করেছি। এমনকি বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গেও আলোচনা করেছি। কিন্তু কোন ফল পাইনি। তাই এখন বাংলাদেশের বড় জামাতের ইমাম (শোলাকিয়া) ফরিদ উদ্দীন মাসউদকে নিয়ে দোয়া দরুদ পড়ছি। আর কান্নাকাটি করছি। যারা বিভেদ সৃষ্টি করছেন, তাদের মনে আল্লাহ যেন রহমত করেন। তিনি বলেন, ‘জ্বালাও-পোড়াওয়ের কারণে যে ক্ষতি হয়েছে সেটা আর ফিরে পাব না। এ ৭০ দিনের হরতাল-অবরোধে মূল বাজেটের প্রায় অর্ধেকের বেশি পরিমাণ অর্থ ক্ষতি হয়ে গেছে। দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন কোটি ব্যবসায়ী। তারা এখন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। আর এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পরিবহন খাত। কাজী আকরাম প্রশ্ন রেখে বলেন, যারা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন, তারা কি সরকারের কোন ক্ষতি করতে পেরেছেন? কিন্তু আমাদের অর্থনীতির ক্ষতি তো হয়ে গেছে। যে ক্ষতি হয়ে গেছে, তাতো আর ফিরে পাব না। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, এ আন্দোলনটা তখনই হচ্ছে, যখন ২০২১ সালে দেশটা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। যখন দেশের অর্থনীতি মডেলে রূপান্তরিত হচ্ছিল। তার মতে, ক্ষতির বিষয়টি বেশি প্রচার করলে তারা (বোমা হামলাকারীরা) বেশি উৎসাহিত হবে। ধরেন, যে ছেলেটা বোমা মারছে, সে যদি জানে সাতটা লোক তার বোমায় মারা গেছেন, তাহলে সে উৎসাহিত হবে। আর যদি না জানে তাহলে সে আর উৎসাহিত হবে না। তাই ক্ষতির বিষয়টি জানানো যাবে না। তবে আমি বলব, এখনও সময় আছে। জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন বন্ধ করেন। আগে আমি ওনাদের (বিএনপি) বলছি, জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ করেন। পরে আমরা অন্যদিকে (সরকারের কাছে) যাব শান্তির জন্য। কিন্তু তা হলো না। তিনি বলেন, নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব সরকারের। আর অন্য দলকে বলব, সঠিক পথে আসেন। সরকারকে বলব, সংলাপ বলেন আর যাই বলেন, দেশে শান্তি আনেন। বিরোধী জোটকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনারা এটাকে রাজনৈতিক আন্দোলন বলছেন। এখানে রাজনীতির তো কিছু দেখছি না। শুধু অর্থনীতির ধ্বংস দেখছি। আমিতো বুঝতে পারছি না কি করব। সব তো করেছি। এখন কান্নাকাটি শুরু করেছি। অযৌক্তিক কাজ করে যৌক্তিক সমাধান আশা করা যায় না। তবে কয়েকদিনে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিছুটা ভাল হয়েছে। আশা করি, আরও ভাল হবে। ‘অর্থনীতিতে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব’ শীর্ষক এ সংলাপের আয়োজন টাইমওয়াচ নামের একটি সংবাদ ম্যাগাজিন। সংলাপে সভাপতিত্ব করেন নওগাঁ চেম্বারের সভাপতি মোহাম্মদ আলী দ্বীন। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোঃ মজিবুর রহমান। আলোচনায় অংশ নেন বিডি সিএনজি ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মাসুদ খান, টিডাবের চেয়ারম্যান জামিউল আহমেদ, রিহ্যাবের সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামীন প্রমুখ।
×