ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চীনা ব্যাংক মার্কিনী উদ্বেগ

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ১৭ মার্চ ২০১৫

চীনা ব্যাংক মার্কিনী উদ্বেগ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বলয়ের বিপরীতে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রতিপক্ষ গড়ে উঠেছে। যা দেশটিকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। তারা চায় না এই শক্তি বিকশিত হোক। বিশেষ করে মার্কিন বলয়ের দেশগুলোর এই নয়া অর্থনৈতিক তৎপরতার সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রকে ভাবিয়ে তুলেছে। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের বিপরীতে এই নয়া উদ্যোগ তাদেরও বিচলিত করে তুলছে। এতে এই ব্যাংকগুলোর একক কর্তৃত্ব আর থাকবে না বলে তারা শঙ্কিত। পিছিয়ে পড়া এশিয়ার দেশগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নে গঠিত হচ্ছে চীনের নেতৃত্বাধীন এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক। চীন এই ব্যাংকের উদ্যোক্তা ও বড় মূলধন যোগানদাতা। এই ব্যাংকে যোগদানের ইচ্ছা ব্রিটেন প্রকাশ করায় মার্কিন প্রশাসন তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ব্রিটেনের এই ঘোষণায় কার্যক্রম শুরুর আগে ব্যাংকটি পশ্চিমা বিশ্বে আলোচিত হয়ে উঠেছে। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও লুক্সেমবার্গ যাতে এর সঙ্গে যুক্ত না হয় সেজন্য চাপ প্রয়োগ করছে। নতুন এই ব্যাংক ভৌত যোগাযোগ, টেলিযোগাযোগ ও জ্বালানি খাতের প্রকল্পে এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোকে অর্থায়ন করবে। চীনের প্রেসিডেন্ট ২০১৪ সালের অক্টোবরে এই ব্যাংকটির উদ্বোধন করেন। তখনই বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অর্থায়ন সংস্থা বিশ্বব্যাংকের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে একে ধরা হয়। যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, এই ব্যাংকের মাধ্যমে চীন এশিয়ার দেশগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তার করবে। এমনকি নীতি-নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে। ফলে, এই সব অঞ্চলে মার্কিন প্রভাব হ্রাস পাবে। ব্রিটেনের পথ ধরে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের এই ব্যাংকে যোগ দেয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। এসব দেশ যদি ব্যাংকটিতে যোগ দিয়ে অর্থায়নকারী সদস্য হয়, তবে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ব্রিটেন এই ব্যাংকে যোগদানকে এশিয়ায় বিনিয়োগ ও একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ হিসেবে দেখছে। ব্রিটেনের এই যোগদান ব্যাংকটির গুরুত্ব বাড়িয়ে দেবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। ব্রিটেনের যোগদানের ঘোষণার পর অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়াও তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে দেশ দুটিকে নেতিবাচক অবস্থান নিতে চাপ প্রয়োগ করে আসছে। তবে এশীয় দেশগুলো এই ব্যাংককে স্বাগত জানাবেই। কারণ এতে উপকৃত হবে দেশগুলো। অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্র তৈরি হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যতই বিরোধিতা বা উদ্বেগ প্রকাশ করুক না কেন এই ব্যাংকটি চালু হলে এশিয়া উন্নত হবে। মানুষের জীবন প্রবাহ আরও গতিশীল হবে। প্রবৃদ্ধি বাড়বে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের এই ব্যাংকের দ্বারা উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যধিক। এই ক্ষেত্রে অবকাঠামো খাতে উন্নয়ন হলে বাংলাদেশ আরও অধিক অগ্রসর হতে পারবে।
×