ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে সঙ্কটের জন্য প্রধানমন্ত্রী দায়ী ॥ বি চৌধুরী

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ১৬ মার্চ ২০১৫

দেশে সঙ্কটের জন্য প্রধানমন্ত্রী দায়ী ॥ বি চৌধুরী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী করে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট ডাঃ একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, এবার ক্ষমতা নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালন না করে ক্ষমতা দেখাচ্ছেন, অহমিকা করছেন। রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপিপন্থী সিভিল রাইটস সোসাইটি আয়োজিত ‘চলমান পরিস্থিতি উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন। সাবেক ঢাবি উপাচার্য প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় বক্তৃতা করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, রুহুল আমিন গাজী, আবদুল হাই শিকদার, এ্যাডভোকেট ড. মোহাম্মদ শাহজাহান, এ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আজাদ প্রমুখ। বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, দেশে যে হারে গুম-খুন-অপহরণ-নিখোঁজ চলছে, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চলছে তাতে কেউই নিরাপদ নয়। পেট্রোলবোমার আগুনে হত্যা ও ক্রসফায়ারে বিচারবহির্ভূত হত্যা- কোনটিই জনগণ পছন্দ করে না উল্লেখ করে বি. চৌধুরী বলেন, কতজন পেট্রোলবোমার আগুনে পুড়ে মরেছে, কতজনকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে, গুম-অপহরণ করা হয়েছে তা জানতে হাইকোর্ট রুল জারি করতে পারেন। তিনি এসব হত্যাকা-ে জড়িতদের খুঁজে বের করতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে বলেন, বিচারপতিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে কারা এসব পেট্রোলবোমা হামলা চালিয়ে মানুষ মারছে, কারা ক্রসফায়ার চালাচ্ছে, মানুষ গুম-অপহরণ করছে তাদের খুঁজে বের করতে হবে। বি. চৌধুরী বলেন, সালাহউদ্দিন আহমেদের মতো একজন সাবেক মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা, ভাল মানুষ এভাবে হারিয়ে গেলেন? সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা তাঁর নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারটি অস্বীকার করে বলছেন, খালেদা জিয়া ময়লার বস্তার সঙ্গে তাঁকে পাচার করে দিয়েছেন। এটা যে কত বেশি অহঙ্কার, অহমিকা আর ক্ষমতার কথা তা যে কারোরই বোধগম্য। তিনি শুধু ক্ষমতা প্রয়োগ করছেন। শুধু সালাহউদ্দিন আহমেদই নন, সরকার তিন বছরেও সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যাকারীদের ধরতে পারেনি অভিযোগ করে বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন এ মহাসচিব বলেন, নিখোঁজের তালিকা আর কত বড় হবে? ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ অনেকের খোঁজ পাওয়া যায়নি আজ পর্যন্ত। এটা আমাদের জন্য লজ্জার নয়, ঘৃণারও ব্যাপার। উচ্চ আদালত সালাহউদ্দিন আহমেদকে খুঁজে বের করে হাজির করার নির্দেশ দিলেও সরকার আদালতের কথায়ও কর্ণপাত করছে না অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, তাঁরা এখন কেবলই ক্ষমতা দেখাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে যে বক্তব্য দেন তা শুনলে কেবল লজ্জাই পাই না, দুঃখও লাগে। এই ধরনের সংসদ আমরা কেউ চাই না। আসলে ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচনে যে সংসদ গঠিত হয়েছে সে সংসদে এ ধরনের কথা হবে এটাই স্বাভাবিক। দেশে কী ধরনের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চলছে এটা এখন সবাই বুঝে গেছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার যেভাবে ক্ষমতা দেখাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে তাদের মন্ত্রী-এমপি আর নেতাকর্মী-সমর্থকরা ছাড়া আর কেউ দেশে থাকতে পারবে না, সবাই নিখোঁজ-গুম হয়ে যাবে। জনগণকে এই অহমিকার বিরুদ্ধে জেগে উঠতে হবে। সভায় ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সুস্থ থাকলে কিছু ভাল কথাও বলেন, তখন শুনতেও ভাল লাগে। কিন্তু মাঝে-মধ্যে এমন কিছু কথা বলেন তখন আরও সমস্যার সৃষ্টি হয়। তিনিই এ সমস্যার সৃষ্টি করেছেন, তাঁকেই এর সমাধান করতে হবে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বলেন, দেশে যে হারে খুন-গুম-অপহরণ হচ্ছে তাতে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের বিচার দাবি করেন এবং এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।
×