ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের ৩০০তম ম্যাচ বলেই আশা

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১৬ মার্চ ২০১৫

বাংলাদেশের ৩০০তম ম্যাচ বলেই আশা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আর ১৫ দিন বাকি। ৩১ মার্চ ওয়ানডের ২৯তম বছরপূর্তি পালন করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট। এর আগে কী সাফল্যই না বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা ক্রিকেট ইতিহাসে যুক্ত করে নিলেন। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলবে বাংলাদেশ! সেই ম্যাচটিও আবার বিশেষ দিনেই হচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য বিশেষ দিনই বয়ে আনছে। বৃহস্পতিবার যে ভারতের বিপক্ষে মেলবোর্নে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ, সেই ম্যাচটি বাংলাদেশের ৩০০তম ওয়ানডে ম্যাচ। স্মরণীয় দিন বলেই আবার ভারতকে হারানোর আশাও আছে। বার বার যে স্মরণীয় দিনে ভারত বধ হয়েছে। ১০০তম ও ১৫০তম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে খেলেছে বাংলাদেশ। দুইবারই জিতেছে বাংলাদেশই। হাটি হাটি পা পা করে সেই ১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ থেকে শুরু হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের আন্তর্জাতিকভাবে পথ চলা। প্রথমবার ওয়ানডে ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। যা ক্রিকেট ইতিহাসে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে হিসেবেই লিপিবদ্ধ আছে। সেই থেকে শুরু করে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত ৩০৭ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। কিন্তু ৮টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় ২৯৯ ম্যাচই ধরা হচ্ছে। সেই হিসাবে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটিই হচ্ছে বাংলাদেশের ৩০০তম ম্যাচ। এই ম্যাচ যখন খেলতে নামবে বাংলাদেশ, তখন অতীত ইতিহাস বাংলাদেশের পক্ষেই কথা বলছে। এক এক করে ৫০, ১০০, ১৫০, ২০০, ২৫০ ম্যাচের মাইলফলক অতিক্রম করেছে বাংলাদেশ। এবার ৩০০ ম্যাচের মাইলফলক অতিক্রম করার পালা। ৫০তম ম্যাচে পাকিস্তান, ১০০তম ম্যাচে ভারত, ১৫০তম ম্যাচেও ভারত, ২০০তম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২৫০তম ম্যাচে জিম্বাবুইয়ে প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশের। পাকিস্তান, জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে দিনটি স্মরণীয় করা না গেলেও, ভারতের বিপক্ষে দুইবার ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে স্মরণীয় দিনে স্মরণীয় জয়ই মিলেছে। স্মরণীয় দিনে ভারত দুইবার মুখোমুখি হয়েছে, দুইবারই হেরেছে। এবার তাই ৩০০তম ম্যাচেও আশা দেখা হচ্ছে। নিজেদের ৫০তম ম্যাচ পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলে বাংলাদেশ। ২০০২ সালে ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে হারে ৮ উইকেটে। ১০০তম ম্যাচ ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে খেলে ১৫ রানে জেতে। সেটিই ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয় ছিল। এরপর ১৫০তম ম্যাচেও বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ থাকে ভারত। এবার ম্যাচটি হয় বিশ্বকাপেই। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বের প্রথম ম্যাচেই ভারতকে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ, ৫ উইকেটে। এ হারে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নেয় ভারত! ২০০তম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাটিতে ২০০৯ সালে ৩ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। ২৫০তম ম্যাচে অবশ্য জিম্বাবুইয়ের কাছে হারারেতে ৫ রানের হার হয় বাংলাদেশের। তবে বোঝাই যাচ্ছে, স্মরণীয় দিনে ভারত সামনে পড়লেই বাংলাদেশের জয় হয়েছে। ভারত অনেক অভিজ্ঞ ও শক্তিশালী দল। কোয়ার্টার ফাইনালে যখন ভারত ৮৭৯তম ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে নামবে, তখন বাংলাদেশ নিজেদের ৩০০তম ম্যাচ (৮৮ জয়, ২০৭ হার ও ৪ ম্যাচের রেজাল্ট হয়নি) খেলতে নামবে। বর্তমান ম্যাচে কোন কাজেই আসে না অতীত পরিসংখ্যান কিংবা অতীত অভিজ্ঞতা। এরপরও শক্তিশালী প্রতিপক্ষের ভেতর তাদের চেয়ে ‘দুর্বল’ দল নিয়ে একটু হলেও ভয় থাকে। আর সেই ভয় অতীত অভিজ্ঞতা থেকেই মেলে। কোয়ার্টার ফাইনালে যখন বিশ্বকাপের শক্তিশালী দল ভারত মুখোমুখি হবে তাদের চেয়ে দুর্বল দল বাংলাদেশের বিপক্ষে, তখন অতীত স্মৃতিই সামনে আসবে। সেই স্মৃতিই ভারতকে ভয় ধরাচ্ছে, চাপেও ফেলছে। একেতো ২০০৪, ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ ও ২০১২ সালের এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরেছে ভারত। আবার যখনই বাংলাদেশের স্মরণীয় মুহূর্তের কোন ম্যাচ এসেছে, তখনই ভারত হেরেছে। তাই বাংলাদেশ যখন ভারতের বিপক্ষেই আবার নিজেদের ৩০০তম ম্যাচ খেলতে নামবে, তখন জয়ের আশাও দেখা হচ্ছে। জিতলেই তো ইতিহাস আরও সমৃদ্ধ হয়ে যাবে বাংলাদেশের।
×