ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কোয়ার্টার ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৬ মার্চ ২০১৫

কোয়ার্টার ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিজেদের শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে উড়িয়ে দিয়ে পুল ‘বি’এর চতুর্থ দল হিসেবে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিল সাবেক চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নেপিয়ারে আরব আমিরাতকে ৬ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারায় ক্যারিবীয়রা। সেমির টিকেট পেতে শনিবার চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনালে সহ-আয়োজক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লড়বে তারা। শেষ আটে উত্তরণে জয়ের বিকল্প নেই, এমন ম্যাচে কাল টস জয় থেকে শুরু করে সবই ছিল উইন্ডিজের অনুকূলে। ৪৭.৪ ওভারে প্রতিপক্ষকে ১৭৫ রানে গুঁড়িয়ে দিয়ে ৩০.৩ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় জেসন হোল্ডারের দল। ২৭ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট নিয়ে অধিনায়কই ম্যাচের নায়ক। দিনের অপর খেলায় আয়ারল্যান্ডকে পরাস্ত করে তৃতীয় দল হিসেবে নিজেরা কোয়র্টারে পা রাখার পাশাপাশি উইন্ডিজের পথ পরিষ্কার করে দেয় পাকিস্তান, কারণ ‘পাক-আইরিশ ডু আর ডাই’ ম্যাচটি ‘পরিত্যক্ত বা টাই’ হলে জয় সত্ত্বেও বাদ পড়তে হতো ক্যারিবীয়দের! স্বস্তির জয়ে ম্যাচসেরা অধিনায়ক হোল্ডারকে তাই আগেভাগেই কিউইদের নিয়েও কথা বলতে হয়! ‘সন্দেহ নেই নিউজিল্যান্ড দুর্ধর্ষ দল। তবে কোয়ার্টারে ভাল করতে মানসিকভাবে তৈরি আমরা। ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা, সেখানে একদিনে অনেক কিছুই হতে পারে!’ ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচের’ পুরস্কার নেয়ার সময় বলেন হোল্ডার। ফিটনেস ঘাটতির জন্য এই ম্যাচে ছিলেন না বড় তারকা ক্রিস গেইল। সেমির আগে ‘ড্যাশিং ওপেনার’ পুরোপুরি ফিট হয়ে উঠবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। টানা পাঁচ হারের পর হারানোর কিছু নেইÑ মন্ত্রে শেষ ম্যাচে ভাল খেলার প্রত্যয় ছিল আমিরাত অধিনায়ক মোহাম্মদ তৌকিরের। কিন্তু মাঠে তার ছিটেফোঁটাও দেখাতে পারেননি তাঁরা। জেসন হোল্ডার-জেরমো টেইলরদের গতির তোপে দলীয় ১৭ রানে তৃতীয় ও ৪৬ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে হারার আগেই হেরে বসে তারা! প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের কেউই দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। ঘুরিয়ে বললে করতে দেননি কোণঠাসা ক্যারিবীয় পেসাররা। এরপরও পৌনে দুই শ’ রানের রূপকার আমজাদ জাভেদ ও নাসির আজিজ। সপ্তম উইকেট জুটিতে ১০৭ রান যোগ করেন তাঁরা। সপ্তম উইকেট জুটিতে যৌথভাবে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান এটি! ৯৯ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৫৬ রানে সাজঘরে ফেরেন জাভেদ। ৮৬ বলে ৮ চারের সাহায্যে ৬০ রানের ক্ল্যাসিক্যাল ইনিংস উপহার দেন আজিজ। বিশ্বকাপে আট নম্বরে নামা কোন ব্যাটসম্যানের ৬০-উর্ধ রানের মাত্র চতুর্থ ঘটনা এটি। আগের তিনটি হিথ স্ট্রিক (৭২*, ২০০৩), আব্দুর রাজ্জাক (৬২, ২০১১) ও ডেরেক মুরের (৬১*, ১৯৭৫)। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৬ ছয়জন ব্যাটসম্যান বোল্ড আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। বিশ্বকাপে এমন ঘটনাও মাত্র ছয়টি। হোল্ডার ছাড়া অপর পেসার জেরমো টেইলর ৩টি, আন্দ্রে রাসেল ২টি ও স্পিনার মারলন স্যামুয়েলস নেন ১টি করে উইকেট। ১০-১-২৭-৪; হোল্ডারের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয়সেরা ও চলতি বিশ্বকাপে কোন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানের সেরা বোলিং ফিগার এটি। যেহেতু রান রেটের সঙ্গে কোয়ার্টারে প্রতিপক্ষ নির্ধারণের একটা ক্ষীণ প্রভাব ছিল, তাই শুরু থেকেই পিটিয়ে খেলতে থাকেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা। মাত্র ৭.৪ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৫৩ রান যোগ করে তারা। ডোয়াইন স্মিথ ১৫ ও স্যামুলেস ৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এরপরও থামেনি ক্যারিবীয়দের রানের গতি। চমৎকার ব্যাটিং করেন প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে নামা জনসন চার্লস ও জোনাথন কার্টার। তৃতীয় উইকেটে মাত্র ৭.৪ ওভারে ৫৬ রান যোগ করেন তারা। দু-জনেই তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। চার্লস ৪০ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৫৫ রান করে আউট হন। ৫৮ বলে ৫ চারের সাহায্যে ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন কার্টার। শেষ দিকে দিনেশ রামদিনও ভার ব্যাট চালান। কার্টারের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৫৮ রানের জুটির পথে ৫০ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। নেট রান রেটে পাকিস্তানকে টপকাতে (তখন পর্যন্ত) ৩৭ ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হতো উইন্ডিজকে। ৩০.৩ ওভারেই সেটি করে ফেলে হোল্ডারবাহিনী। অবশ্য পাকিরা জয় পওয়ায় শেষ অবধি রান রেটটা-গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে! পুল ‘বি’এর চতুর্থ দল হিসেবেই কেয়ার্টারে নিউজিল্যন্ডকে পায় ক্যারিবীয়রা।
×