ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সেরা ব্যবস্থাপনা পুরস্কার পেল চার প্রকল্প

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ১৬ মার্চ ২০১৫

সেরা ব্যবস্থাপনা পুরস্কার  পেল চার প্রকল্প

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অদক্ষতার কথা বরাবরই বলে আসছে বিভিন্ন দাতা সংস্থা। কথায় কথায় অর্থ ছাড় বন্ধ, অর্থ প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছে এ সব সংস্থা। সময়ের উল্টো স্রোতে প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষতা দেখিয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) স্বীকৃতি পেয়েছে চার প্রকল্প। বাংলাদেশে চলমান এডিবির সেরা চারটি প্রকল্পের কর্মকর্তাদের পুরস্কার দিয়েছে সংস্থাটি। রবিবার এডিবির ঢাকায় নিযুক্ত আবাসিক প্রতিনিধি কাজুহিকো হিগুচি সেরা প্রকল্পের কর্মকর্তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, এডিবির অর্থায়নে বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালক ও সংস্থাটির ঢাকা অফিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কাক্সিক্ষত সুফল ও সেরা ব্যবস্থাপনা দেখিয়ে শীর্ষ দুই প্রকল্পের পুরস্কার পেয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। সেরা চার প্রকল্পের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে টেকসই পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। দ্বিতীয় স্থানে থাকো নগর এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পও বাস্তবায়ন করছে এলজিইডি। সংস্থার অর্থায়নে তৃতীয় সেরা প্রকল্প হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের তৃতীয়পর্যায় (পিইডিপি-৩)। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। আর চতুর্থ সেরা প্রকল্প হয়েছে পুঁজিবাজার উন্নয়ন কর্মসূচীর দ্বিতীয় পর্যায়। এডিবি জানায়, বাস্তবায়নে দক্ষতা, কাক্সিক্ষত ফলাফল অর্জনে সফলতা, নারীদের সক্ষমতা বাড়ানো, স্বচ্ছতা ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে সেরা প্রকল্প নির্বাচন করা হয়েছে। ২০০১ সাল থেকেই সেরা প্রকল্প নির্বাচন করে আসছে এডিবি। এডিবি সূত্র জানায়, টেকসই পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৬ কোটি মার্কিন ডলার। আয় বাড়িয়ে দারিদ্র্য দূর করতে ২১টি জেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে উপকূলীয় জেলাগুলোর লোকজন জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়। তা ছাড়া এ সব এলাকায় নারীদের বাজার সুবিধা নিশ্চিত করা হয়। নগর এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পে এডিবি ১২ কোটি ডলার ঋণ দেয়। নগর পরিকল্পনা, অবকাঠামো এবং দুটি বড় মহানগরীতে নাগরিক সুবিধা বাড়াতে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এ প্রকল্পের ফলে জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশসম্মত নাগরিক সেবার উন্নতি হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকা ও খুলনা মহানগরীর নাগরিক সেবা ব্যবস্থার সক্ষমতা বেড়েছে। তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পে এডিবি ৩২ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন, শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতকরণ ও শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দক্ষতা বাড়াতে ২০১১ সালে এ কর্মসূচী হাতে নেয় সরকার। এ কর্মসূচীর ব্যয় ধরা হয় ২২ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা বিদেশী সহায়তা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। অবশ্য সম্প্রতি প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়িয়ে বরাদ্দ ১৮ হাজার ৮০৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে। বরাদ্দ কমলেও প্রকল্পটির বিদেশী সহায়তা উন্নীত হচ্ছে ৪ হাজার ১৯৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকায়। জানা যায়, বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর এডুকেশন (জিপিই) প্রকল্পে সহায়তা বাড়াচ্ছে। মোট নয়টি দেশ ও সংস্থা এতে সহায়তা দিচ্ছে। কর্মসূচীর অধীনে দেশব্যাপী ৩ হাজার ৬৮৫টি শ্রেণীকক্ষ নির্মাণ, ২ হাজার ৭০৯টি বিদ্যালয় পুনর্নির্মাণ, ৪০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন করে শিক্ষকের নিশ্চয়তা, ১ লাখ ২৮ হাজার ৯৫৫টি টয়লেট নির্মাণ, ৪৯ হাজার ৩০০টি নলকূপ স্থাপন, ৫৩ হাজার ৭৫০টি প্রস্রাবখানা নির্মাণ, ১১ হাজার ৬০০টি শ্রেণীকক্ষ মেরামত ও জেলা-উপজেলায় রিসোর্স সেন্টার নির্মাণ করা হচ্ছে।
×