ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিদায় বেলায় রাঙিয়ে গেলেন টেইলর

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১৫ মার্চ ২০১৫

বিদায় বেলায় রাঙিয়ে গেলেন টেইলর

জিএম. মোস্তফা ॥ ‘শেষ ভাল যার সব ভাল তার’ প্রবাদটি যেন ব্রেন্ডন টেইলরের জন্যই প্রযোজ্য। বিশ্বকাপের বিশাল মঞ্চে নিজের শেষ একদিনের ম্যাচেই শতরানের মাইলফলক স্পর্শ করলেন জিম্বাবুইয়ের অধিনায়ক টেইলর। কিন্তু দুভার্গ্য বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিপক্ষে তার ১৩৮ রানের অসাধারণ ইনিংসও জয় এনে দিতে পারেনি দলকে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ে ব্রেন্ডন টেইলরের দল। একাদশতম বিশ্বকাপের ‘বি’ গ্রুপের দল জিম্বাবুইয়ে। একটি মাত্র জয় নিয়েই শনিবার শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল যারা। টুর্নামেন্ট থেকে আগেই ছিটকে পড়ায় ভারতের বিপক্ষে জিম্বাবুইয়ের ম্যাচটি কেবলই নিয়ম রক্ষার। তবে ব্যক্তিগতভাবে জিম্বাবুইয়ের অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলরের কাছে ম্যাচটির গুরুত্ব ছিল অন্যরকম। কেননা এটিই যে তার ক্যারিয়ারের শেষ একদিনের ম্যাচ! আর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচেই করলেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। এর ফলে ইতিহাসের অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের শেষ ওয়ানডে ম্যাচে শতরানের ইনিংস উপহার দিতে সক্ষম হলেন ব্রেন্ডন টেইলর। স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত টেইলর। ব্রেন্ডন টেইলরের আগে মাত্র ৭ জন ব্যাটসম্যান তাদের ক্যারিয়ারের শেষ ওয়ানডে ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন। শেষ ম্যাচে সেঞ্চুরি করার তালিকায় সর্বোচ্চ রান করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের জেমস মার্শাল। মার্শাল মাত্র ১০টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলেন। আর তার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে করেন সর্বোচ্চ ইনিংস। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে জেমস মার্শাল ১৬১ রানের অসাধারণ এক ইনিংস উপহার দেন। এরপরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্রেন্ডন টেইলরের সংগ্রহে ১৩৮ রান। শনিবার বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিপক্ষে। ক্যারিয়ারের শেষ ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করা বাকি ব্যাটসম্যানরা হলেন ভন নর্টউইক। তিনি ১৩৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন। এছাড়া অন্যরা হলেন ক্লপেনবার্গ (১২১), ক্লাইভ রেডলি(১১৭), ডেসমন্ড হাইন্স (১১৫), ডেনিস এমিস (১০৮), রায়ান টেন ডেসকাট (১০৬)। শুধু তাই নয়, অকল্যান্ডের ইন্ডন পার্কে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে আরও বেশ কিছু মাইলফলক স্পর্শ করেন টেইলর। জিম্বাবুইয়ের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে দুটি সেঞ্চুরি করার গৌরব অর্জন করেন। তার আগে অবশ্য জিম্বাবুইয়ের চার ব্যাটসম্যান তিন অঙ্কের কোটা ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন। তারা হলেন, এ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, ডেব হটন, নেইল জনসন এবং ক্রেইগ উইশার্ট। আর বিশ্বের নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপের মঞ্চে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শতরানের ইনিংস খেলেন টেইলর। তার একদিন আগেই বিরল এই কীর্তি গড়েন বাংলাদেশের মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান রিয়াদ। এছাড়া বাকি ব্যাটসম্যানরা হলেন, কুমার সাঙ্গাকারা, মার্ক ওয়াহ, রাহুল দ্রাবিড়, এবি ডি ভিলিয়ার্স, ম্যাথু হেইডেন, রিকি পন্টিং এবং সাঈদ আনোয়ার। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ৬ ম্যাচ খেলে ৪৯৬ রান সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষে আছেন শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারা। আর দ্বিতীয় স্থানটি দখল করে রেখেছেন ব্রেন্ডন টেইলর। ছয় ম্যাচে ছয় ইনিংসে তার মোট রান ৪৩৩। এখানে দ্বিতীয় হলেও জিম্বাবুইয়ের ইতিহাসে এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষে এখন টেইলর। এর আগে এই স্থানটি দখল করে রেখেছিলেন নেইল জনসন। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে তার ব্যাট থেকে এসেছিল সর্বোচ্চ ৩৬৭ রান। ২০০৪ সালের ২০ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেক ঘটেছিল ব্রেন্ডন টেইলরের। এরপর প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে জিম্বাবুইয়ের মতো দলের হয়ে খেলে গেছেন টেইলর। তার বিদায় অনেকটা রাজকীয়ভাবেই হওয়ার প্রয়োজন ছিল। দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে সেই বিদায়টাকে আরও উজ্জ্বল করে রাখলেন তিনি নিজেই। ভারতের বিপক্ষে হারা ম্যাচের পর নিজের আনন্দের কথা জানিয়েছেন টেইলর। সেই সঙ্গে সতীর্থদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে তার অভিমত হলো, ‘যখনই এই জার্সিটা পড়তে পারব না তখনই মিস করব।
×