ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মংলায় ভবন ধস ॥ আরও এক লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১৪ মার্চ ২০১৫

মংলায় ভবন ধস ॥ আরও এক লাশ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট/নিজস্ব সংবাদদাতা, মংলা ॥ বাগেরহাটের মংলায় সেনা কল্যাণ সংস্থার এলিফ্যান্ট ব্র্যান্ড সিমেন্ট কারখানার নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসের ঘটনায় উদ্ধার কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। দুর্ঘটনার তেইশ ঘণ্টা পর শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উদ্ধার কাজ সমাপ্ত ঘোষণা করেন ফায়ার সার্ভিসের খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালক মিজানুর রহমান। তিনি জানান, এ দুর্ঘটনায় সাতজনের মৃতদেহ ও মোট ৪৫ জনকে কম-বেশি আহত-জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত যাদের নাম-পরিচয় জানা গেছে তারা হলেনÑ বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার রাজনগর গ্রামের দবির শেখের ছেলে নির্মাণ শ্রমিক আনসার শেখ, একই এলাকার লতিফ হাওলাদারের ছেলে মারুফ হাওলাদার, গৌরম্ভা গ্রামের আকবর আকুঞ্জীর ছেলে আমির আকুঞ্জী, খুলনা শহরের জাহিদুর রহমান সড়কের মোয়াজ্জেম শেখের ছেলে আলামিন, খুলনা বাগমারা এলাকার আদম আলীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম ও সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার নাঙ্গলবাড়ী গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে বাকিবিল্লাহ। অন্য একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার দুপুরে মংলা শিল্প এলাকায় বাংলাদেশ সেনা কল্যাণ সংস্থার মালিকানাধীন ‘এলিফ্যান্ট ব্রান্ড’ সিমেন্ট কারখানার নির্মাণাধীন ওই মিলিং হাউজের ছাদ ধসে পড়ে। ভবন ধসে শ্রমিক হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নিতেও তিনি নির্দেশ দিয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার এবং আহত প্রত্যেককে ১০ হাজার করে টাকা দেয়া হবে বলে খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আব্দুস সামাদ জানিয়েছেন। তিনি জানান, ঘটনা তদন্তে খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ফারুক হোসেনকে প্রধান করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ কমিটিতে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ও একজন প্রতিনিধি, খুলনা গণপূর্ত বিভাগের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক এবং নির্বাহী প্রকৌশলী, সেনাকল্যাণ সংস্থার একজন প্রতিনিধি, খুলনা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক, খুলনা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক, কোস্ট গার্ডের একজন প্রতিনিধি থাকবেন। বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ওই মিলিং হাউজের ছাদ ঢালাই শুরু হয়। ভবনটি প্রায় চার তলা ভবনের সমান উঁচু। শতাধিক শ্রমিক সে সময় কাজ করছিলেন। “বেলা ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে কোন এক সময় ঢালাই চলা অবস্থায় ছাদটি ধসে পড়ে। এতে বেশ কিছু শ্রমিক লোহার সেন্টারিং পাইপ, রড ও ঢালাই সামগ্রীর মধ্যে আটকা পড়েন।” দুর্ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ উদ্ধার কাজ শুরু করেন। আহত শ্রমিক মাসুদ কাজী ও গোলাম মোস্তফা জানান, ছাদের ওপর মসলা (ইট-সুড়কির ঢালাই) দেয়া হচ্ছিল। কাজ অর্ধেকটার বেশি এগিয়েও গিয়েছিল। হঠাৎ বিকট শব্দে সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে। এদিকে, ভবন ধসের খবর পেয়ে খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আব্দুস সামাদ, যশোর সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান, বাগেরহাটের পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্যা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দুর্ঘটনা তদন্তে সেনাকল্যাণ সংস্থা একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে আইএসপিআরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। অন্যদিকে, মংলায় সেনা কল্যাণ সংস্থার এলিফ্যান্ট ব্র্যান্ড সিমেন্ট ফ্যাক্টরির নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসের ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে এক লাখ টাকা করে সহায়তা দেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ফ্যাক্টরির উপ-মহাপরিচালক ক্যাপ্টেন সৈয়দ হেলাল হোসেন। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে তিনি এ ঘোষণা দেন। এ সময় উপ-মহাপরিচালক ক্যাপ্টেন সৈয়দ হেলাল হোসেন বলেন, ফ্যাক্টরি দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে এলিফ্যান্ট ব্র্যান্ড সিমেন্ট ফ্যাক্টরির পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা করে দেয়া হবে। সেই সঙ্গে আহত প্রত্যেকের চিকিৎসা খরচও কোম্পানি দেবে। এদিকে, বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক সাংবাদিকদের জানান, এ দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। পাশাপাশি আহত প্রত্যেকের পরিবারকে প্রাথামিকভাবে ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে মংলা বন্দর হাসপাতালে আহতদের খোঁজ নিতে এসে তিনি এ কথা বলেন। নিহতদের পরিবারপ্রতি এক লাখ টাকা দেবে ফ্যাক্টরি ॥ মংলায় ছাদ ধসের ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে এক লাখ টাকা করে সহায়তা দেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন সিমেন্ট ফ্যাক্টরির উপ-মহাপরিচালক ক্যাপ্টেন সৈয়দ হেলাল হোসেন। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে তিনি এ ঘোষণা দেন। তিনি জানান, সেই সঙ্গে আহত প্রত্যেকের চিকিৎসা খরচও কোম্পানি দেবে। এদিকে, বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক সাংবাদিকদের জানান, এ দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার এবং আহত প্রত্যেকের পরিবারকে প্রাথামিকভাবে ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে মংলা বন্দর হাসপাতালে আহতদের খোঁজ নিতে এসে তিনি এ কথা বলেন।
×