ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাহমুদুল্লাহর সেঞ্চুরি ॥ কোয়ার্টারে প্রতিপক্ষ ভারত

লড়াই করেই হারল টাইগাররা

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ১৪ মার্চ ২০১৫

লড়াই করেই হারল টাইগাররা

মিথুন আশরাফ ॥ নিউজিল্যান্ড স্বাগতিক দল। আবার এ বিশ্বকাপের সবচেয়ে শক্তিশালী দলও। বাংলাদেশকে তো দুমড়ে-মুচড়ে দেবে নিউজিল্যান্ড। অনেকের মনে এমন ধারণাও ছিল অথচ কিউইদের চরম লড়াই করতে হলো। বাংলাদেশও শেষ পর্যন্ত হাল না ছেড়ে লড়াই করেই ৩ উইকেটে হারল। এ হারে ‘এ’ গ্রুপ থেকে পয়েন্ট তালিকায় চতুর্থ দল হয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে খেলবে বাংলাদেশ। যেখানে ‘বি’ গ্রুপের সেরা দল ভারত হচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ। আর নিউজিল্যান্ড জিতলেও এখনও তাদের প্রতিপক্ষ নির্ধারণ হয়নি। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকেই সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ ধরা হচ্ছে। বাংলাদেশের এ হারে আফসোস রয়েই গেল! এখনও ‘রিভিউ’য়ের ব্যবহার পুরোপুুরি করতে পারছে না বাংলাদেশ। তা যদি করতে পারত, গাপটিল ১৯ রানে আউট হয়ে গেলেই তো ম্যাচটিতে জিতে যেত বাংলাদেশই! কিন্তু রিভিউয়ের সুযোগটি কাজে লাগাতে পারল না বাংলাদেশ। গাপটিলও এলবিডাব্লিউ হওয়া থেকে বেঁচে গিয়ে ১০৫ রানের ইনিংস খেললেন। যা নিউজিল্যান্ডকে জয় এনেও দিল অথচ ম্যাচটিতে জেতার মতো অবস্থাতেই ছিল বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ কী দুর্দান্ত ব্যাটিংই না করলেন। বিশ্বকাপের মতো আসরে টানা দুই ম্যাচে দুই শতক করলেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৩ বলে ১২ চার ও ৩ ছক্কায় করা তাঁর অপরাজিত ১২৮ রানের ইনিংসেই তো বাংলাদেশ ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৮ রানের বড় স্কোর গড়ল। সৌম্য সরকারও (৫১) অসাধারণ ব্যাটিং করে ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক করলেন। শেষে সাব্বির রহমানও ৪০ রানের ইনিংস খেলেন। এরপর ৪৮.৫ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৯০ রান করে ম্যাচ জেতে নিউজিল্যান্ড। গাপটিল ১০০ বলে ১১ চার ও ২ ছক্কায় করেন ১০৫ রান। নিউজিল্যান্ডের হয়ে দ্রুততম ৫০০০ রান করা টেইলর ৫৬, ইলিয়ট ও এ্যান্ডারসন ৩৯ রান করে করেন। সাকিব একাই নেন ৪ উইকেট। যেখানে টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট, মিচেল ম্যাকক্লেনাগান, ডেনিয়েল ভেট্টরি, কোরি এ্যান্ডারসন, গ্রেন্ট ইলিয়টদের মতো বোলাররা কিছুই করতে পারেননি। সেখানে এক ‘রিভিউ’ না নেয়ার ভুলের খেসারতই যেন দিতে হলো বাংলাদেশকে। তখন নিউজিল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে ২৭ রান। গাপটিলের ১৯ রান হয়েছে। রুবেল হোসেন ওভারের শেষ বল করলেন। সরাসরি গাপটিলের পায়ে লাগল। মনে করা হয়েছিল ব্যাটে স্পর্শ করেই বল পায়ে লেগেছে অথচ টিভি রিপ্লেতে দেখা গেছে বল পায়েই লেগেছে। মিডল স্টাম্পও উড়ে যাচ্ছে। দ্বিধাদ্বন্দ্ব থেকে রিভিউ নেয়া হলো না। রিভিউ নিলে গাপটিল আউট হয়ে যেতেন। তখনই গাপটিলের উইকেটের পতন ঘটে যেত। বাংলাদেশও জয় পেয়ে যেতে পারত। যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হয়েছে, গাপটিল ১০৫ রানের জায়গায় ১৯ রানে আউট হলে ৮৬ রানের কমতি থাকত। তখন নিউজিল্যান্ড চাপে পড়ে যেত অথচ সেই ব্যাটসম্যানটি কিনা আউট হলেন দলীয় ১৬৪ রানে গিয়ে। গাপটিলের পর টেইলর, ইলিয়ট, এ্যান্ডারসনরা হাল ধরলেন, তখনও বাংলাদেশের জয়ের আশা তৈরি হলো কিন্তু সেই আশায় নিশ্চয়তা মিলল না। গাপটিল ১৯ রানে আউট হয়ে গেলে জয় পেয়েই যেত বাংলাদেশ। ২৬৯ রানে গিয়ে যে নিউজিল্যান্ড ৭ উইকেট হারাল তখন একটু আশা জাগল। কিন্তু ভেট্টরি ও সাউদি মিলে ম্যাচ বের করে নিলেন। ম্যাচ সেরাও হলেন সেই গাপটিলই। গাপটিলের মতো মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও অবশ্য ‘নতুন জীবন’ পেয়েছেন। গাপটিলকে আউট করার জন্য ‘রিভিউ’ নেয়া হয়নি। আর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ তো ১ রানেই আউট হওয়া থেকে বেঁচেছেন। সাউদির বলে দ্বিতীয় সিøপে এ্যান্ডারসন ক্যাচটি ধরতে পারেননি। সেই যে মাহমুদুল্লাহ সুুযোগ পেলেন আর থামলেনই না। অপরাজিত থেকেই মাঠ থেকে বের হয়েছেন। ২৭ রানে ইমরুল ও ব্যর্থ হয়েই চলা তামিম আউটের পর যে সৌম্য ও মাহমুদুল্লাহ মিলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন, তৃতীয় উইকেটে ৯০ রানের জুটিই গড়ে ফেলেন। সৌম্য ৫৬ রান করে থামলেও মাহমুদুল্লাহ এগিয়েই চলেছেন। এক এক করে সাকিব (২৩), মুশফিক (১৫), সাব্বির (৪০), নাসির (১১) আউট হয়েছেন। কিন্তু মাহমুদুল্লাহ ঠিকই দলকে জয়ের ভিত গড়তে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। দলও বড় স্কোরই গড়েছে। কিন্তু জয় আর মেলেনি।
×