ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশই আজ এগিয়ে!

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১৩ মার্চ ২০১৫

বাংলাদেশই আজ এগিয়ে!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আজ হ্যামিল্টনে বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ গ্রুপ ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড। টানা ৫ ম্যাচ জিতে ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষে থাকা নিউজিল্যান্ড নিশ্চিতভাবেই চলতি আসরে শিরোপা জয়ে অন্যতম দাবিদার। আর আন্ডারডগ হিসেবে আসলেও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের নৈপুণ্যে কোনভাবেই সহজ প্রতিপক্ষ ভাবা যাচ্ছে না তাদের। বিশেষ করে আগের ম্যাচে শক্তিশালী ইংল্যান্ডকে পরাভূত করা বাংলাদেশের আজকের এ লড়াইয়ে ইতিবাচক অনেক দিকই আছে। বিশ্বের ক্রিকেটবোদ্ধারা বিশ্লেষণ করে দাবি করছেন অন্যতম সেরা দল হিসেবে এবারের আসরে নিজেদের প্রমাণ করলেও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বেশ কিছু দিক থেকে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। দেখা যাক সেই দিকগুলোÑ বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের সর্বশেষ মোকাবেলা হওয়া ১০ ম্যাচের দিকে তাকালে অনেকখানি এগিয়ে আছে টাইগাররাই। পরস্পরের মধ্যে সর্বশেষ ১০ ম্যাচের মধ্যে ৭ বারই কিউইদের পরাস্ত করেছে বাংলাদেশ আর নিউজিল্যান্ড জিততে পেরেছে মাত্র ৩ ম্যাচ। ২০১০ সালের পর আর কোন প্রতিপক্ষের কাছে এত জয়হীন থাকেনি নিউজিল্যান্ড। কিন্তু সে বছর অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত তাদের জিততে দেয়নি বাংলাদেশ। যদিও দেশের বাইরে এখন পর্যন্ত কিউইদের বিরুদ্ধে জিততে পারেনি টাইগাররা তবে সর্বশেষ এ মোকাবেলার চিত্রটা মানসিকভাবে এগিয়েই রাখছে বাংলাদেশকে। এবার বিশ্বকাপে রানের বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে বাধ্যতামূলক পাওয়ার প্লেগুলোয় প্রতিপক্ষ বোলারদের তুলোধুনো করছেন বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে পারঙ্গমরা। তবে বাংলাদেশী বোলারদের এক্ষেত্রে কৃতিত্ব দিতেই হবে। ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারে বাধ্যতামূলক পাওয়ার প্লে-তে নিউজিল্যান্ডের আগ্রাসী ব্যাটসম্যান অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককুলামকে বেশ সমস্যায় পড়তে হতে পারে আজ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। কারণ চলতি বিশ্বকাপে এই ১০ ওভারে যে রান দিয়েছেন বাংলাদেশী বোলাররা তার ইকোনমি মাত্র ৪.১০। এক্ষেত্রে অবশ্য বাংলাদেশের চেয়ে সেরা শুধু জিম্বাবুইয়ের বোলাররা, তারা রান দিয়েছেন ৩.২০ ইকোনমিতে। তবে এ বিষয়টিই কিউইদের চেয়ে এগিয়ে রাখবে বাংলাদেশকে। কারণ ম্যাককুলামের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের ওপরই দলের বড় সংগ্রহ গড়ার ক্ষেত্রে অন্যতম সহায়ক ভূমিকা রাখে। কারণ তিনি এখন পর্যন্ত বাধ্যতামূলক পাওয়ার প্লে থেকে আগের ম্যাচগুলোয় করেছেন ২১২ স্ট্রাইকরেটে ২২৯ রান অথচ পুরো আসরে এখন পর্যন্ত তাঁর রান ২৪৯! মিডলঅর্ডারের শক্তিতেও নিউজিল্যান্ডের তুলনায় এখন পর্যন্ত এ বিশ্বকাপে এগিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। স্কটল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কিউই মিডলঅর্ডার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু গত চার ম্যাচে বাংলাদেশের মিডলঅর্ডাররা সর্বমোট রানের ৬০.১ ভাগই করে দিয়েছেন। চলতি বিশ্বকাপে যা দ্বিতীয় সেরা অবদান মিডলঅর্ডারদের কাছ থেকে। বাংলাদেশী পেসার রুবেল হোসেন এখন অন্যতম আলোচনার বিষয়বস্তু। ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডকে প্রথমবার হোয়াইটওয়াশ করার পেছনে ভয়ঙ্কর ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি দুটি ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করে। ২০১৩ সালেও এক ম্যাচে হ্যাটট্রিকসহ ৬ উইকেট নিয়ে ল-ভ- করে দিয়েছিলেন তিনি কিউই ব্যাটিং লাইনআপ। এছাড়া রুবেলের বিরুদ্ধে ম্যাককুলামের রেকর্ডটাও বেশ। তিনবার রুবেলের কাছে উইকেট দিয়েছেন তিনি। আর সেজন্য রুবেল খরচা করেছেন মোটে ১০ বল! তাঁর জন্য ভীতিকর আরেক বোলারকেও আজ স্কোয়াডে দেখা যেতে পারে। তিনি শফিউল ইসলাম। তিনিও ম্যাককুলামকে ৩ বার শিকার করেছেন মাত্র ৩৪ বল খরচায়। ১৭ ইনিংসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মাত্র ২০.১৮ গড়ে রান করেছেন ৩২৩! সবমিলিয়ে ৮ বার দ্বিতীয় অঙ্ক ছুঁতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি টাইগার বোলারদের বিপক্ষে! সর্বশেষ ৫ ইনিংসের মধ্যে দুটি শূন্যও আছে তাঁর। দুই ব্যাটসম্যান মুশফিক-মাহমুদুল্লাহর ধারাবাহিক সাফল্য কিউইদের বিরুদ্ধে এগিয়ে রাখছে বাংলাদেশকে। চলতি আসরে এখন পর্যন্ত ৩টি অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৪ ইনিংসে ২৫৬ রান করেছেন মুশফিক। এক বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে যা সেরা সংগ্রহ। এক বিশ্বকাপে এর আগে আর কোন বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান তিন ফিফটিও হাঁকাতে পারেননি। দুর্দান্ত ফর্মে আছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরির মালিক (আগের ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে) হওয়া মাহমুদুল্লাহ ২১৬ রান করেছেন এখন পর্যন্ত।
×