ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অপহৃতরা হোক উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ১৩ মার্চ ২০১৫

অপহৃতরা হোক উদ্ধার

বিশ্বজুড়ে এখন এক ত্রাসের নাম, আতঙ্কের নাম ইসলামী স্টেট তথা আইএস। নৃশংসতা, অমানবিকতা, সহিংসতা, হত্যা, বর্বরতা, নিষ্ঠুরতাসহ যত অপকর্ম রয়েছে; তার সবই তারা সম্পন্ন করছে। ইরাক ও সিরিয়া সীমান্তে তাদের মূল ঘাঁটি। সেখান থেকে লিবিয়ার কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মানুষ হত্যা করে চলছে তারা। ধর্মের নামে অধর্মের শাসন চালু করে স্বেচ্ছাচারিতা অব্যাহত রেখেছে। মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা ছাড়িয়ে আইএস বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ভিন্ন ভিন্ন নামে একই বর্বরতা চালু রেখেছে। এদের আত্মঘাতী স্কোয়াডও রয়েছে। এই আইএসরা ক’দিন আগে লিবিয়ার তেলক্ষেত্রে কর্মরত ৯ বিদেশী শ্রমিককে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এর মধ্যে দু’জন বাংলাদেশী, যা আমাদের জন্য উদ্বেগের কারণ। এর আগে তারা বিদেশীদের অপহরণ ও জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় ও শিরñেদের ভিডিওচিত্র প্রকাশ করেছে। যা সারাবিশ্বকে যেমন স্তম্ভিত, তেমনি আতঙ্কিত করে তুলছে। আইএসের হামলায় তেলক্ষেত্রটির ১১ জন নিরাপত্তারক্ষী নিহত হয়। লিবিয়ায় কার্যত এখন কোন সরকার নেই। মার্কিন হামলায় গাদ্দাফি সরকারের পতনের পর থেকেই কয়েক বছর ধরে লিবিয়ায় চরম অশান্ত অবস্থা বিরাজ করছে। আইএস ছাড়াও বিভিন্ন জঙ্গীগোষ্ঠী সেখানে সহিংসতায় লিপ্ত। একই অবস্থা ইরাকেও। দুটি দেশেই একসময় প্রচুর বাংলাদেশী শ্রমিক কর্মরত ছিল। দেশ দুটি থেকে বহু শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছে। লিবিয়া থেকে সে সময় প্রায় ৩৬ হাজার বাংলাদেশী ফিরে এসেছিল। আরও ১৫ হাজার এখন বৈধভাবে রয়েছে। তবে বৈধ অবৈধ মিলিয়ে ৫০ হাজারের মতো হবে। এরা প্রায় সবাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেদেশে কর্মরত রয়েছে। গৃহযুদ্ধপ্রবণ দেশগুলোতে কর্মরত বাংলাদেশীদের জীবনের নিরাপত্তা ক্ষীণ হয়ে এসেছে। নিরাপত্তা যেন দেয়ারও কেউ নেই। লিবিয়ার ত্রিপোলীতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা বলেছেন, অপহৃত দু’জন বাংলাদেশীকে উদ্ধারে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। জঙ্গীরা এখনও মুক্তিপণ বা অন্য কিছু দাবি করেনি। অপহৃতদের উদ্ধারে সরকারকে এ উদ্যোগ নিতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশও এক ধরনের জঙ্গীবাদী তৎপরতায় আক্রান্ত। নানাস্থানেই বোমার কারখানা মিলছে, ঘোষণা দিয়ে মানুষ হত্যা চলছে, আইএস জঙ্গীদের চেয়েও এরাও কম নয়। তাই সরকারের উচিত জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশী জঙ্গীদের তৎপরতা বন্ধ করা। কোন ধরনের জঙ্গীবাদ দেশবাসী পছন্দ করে না। সব ধরনের জঙ্গীবাদই গণতন্ত্রের শত্রু, শান্তির শক্র, মানবতার শত্রু।
×