ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বার্ড ফল্টে আশুগঞ্জ বিদ্যুত কেন্দ্রে বিপর্যয়

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১২ মার্চ ২০১৫

বার্ড ফল্টে আশুগঞ্জ বিদ্যুত কেন্দ্রে বিপর্যয়

রশিদ মামুন ॥ আকস্মিকভাবে আশুগঞ্জ বিদ্যুত কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার মূল কারণ উদ্ঘাটন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ধারণা করা হচ্ছে বার্ড ফল্ট বা পাখির কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। কারিগরি ত্রুটিতে সোমবার সন্ধ্যায় আশুগঞ্জ বিদ্যুত কেন্দ্রের ছয় ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। বলা হচ্ছে ১৩২ কেভি লাইন ট্রিপ (বন্ধ) করায় প্রথমে আশুগঞ্জ-৫ নম্বর ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে একে একে অন্য ইউনিটগুলো বন্ধ হয়ে যায়। তবে ১৩২ কেভি লাইন কেন ট্রিপ করল তার সুনির্দিষ্ট কারণ বের করতে পারেনি তদন্ত কমিটি। এখনও পর্যন্ত যা বলা হচ্ছে তা অনুমান নির্ভর। সাম্প্রতিক সময়ে ব্লাক আউট ঘটনা দেশজুড়ে আলোচিত। আন্ডার ফ্রিকোয়েন্সির কারণে লাইন ট্রিপ করে সারাদেশ একসঙ্গে অন্ধকারে তলিয়ে যায়। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোথায় কিভাবে কারিগরি ত্রুটি হয়েছিল তা উদ্ঘাটন করতে পারেনি তদন্ত কমিটি। বিদ্যুত কেন্দ্রগুলোর সুরক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নেয়ায় বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। আর সুনির্দিষ্টভাবে উদ্ঘাটন না হওয়ায় ভবিষ্যত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না। জানতে চাইলে পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক মাহবুবু সারওয়ার-ই-কায়নাত জনকণ্ঠকে বলেন, বিদ্যুত কেন্দ্রের এ ধরনের সমস্যা উদ্ঘাটন না হওয়ার পেছনে দুটি কারণ রয়েছে। একটি হচ্ছে হয় তো তদন্ত কমিটিতে যথাযথ দক্ষতার লোক নেই। নয় তো একাধিক বিষয়কে বিপর্যয় ঘটার মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করতে গিয়ে আসল বিষয় হারিয়ে যায়। তদন্তে মূল কারণ চিহ্নিত না করা গেলে এ ধরনের ব্যবস্থা কিভাবে মোকাবেলা করা যাবে জানতে চাইলে প্রকৌশলী কায়নাত বলেন, চিহ্নিত না হওয়ার কোন কারণ নেই। পাখির কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সেখানে সুনির্দিষ্ট কিছু উপাত্ত পাওয়া যাবে। আর সেগুলো না পেলে অন্য কোন কারণে তা হতে পারে, যার খোঁজ করে বের করা সম্ভব। সোমবার সন্ধ্যায় এক সঙ্গে ৯০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জাতীয় গ্রিডের উপর চাপ পড়ে। ওই দিন সন্ধ্যায় বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো ৭১০ মেগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহ করছিল। বিদ্যুতের সরবরাহ লাইন ১৩২ কেভি ট্রিপ করায় প্রথমে পাঁচ নম্বর ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। একে একে ওভার ফ্রিকোয়েন্সির (সরবরাহের তুলনায় সঞ্চালন ব্যবস্থা সীমিত) কারণে একে একে সব ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। ওই রাতেই সব ইউনিট আবার চালু করা সম্ভব হয়। বিদ্যুত কেন্দ্রটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদ্যুত কেন্দ্র। এক সঙ্গে সব ইউনিট বন্ধ হয়ে গেলে আশপাশের এলাকায় বিপর্যয় দেখা দেয়। পাওয়ার স্টেশনে বিদ্যুত বিপর্যয়ের ঘটনায় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির কর্মকর্তারা মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে কেন এই বিপর্যয় সুনির্দিষ্ট কারণ উদ্ঘাটন করতে পারেননি। জানতে চাইলে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূরুল আলম জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা ধারণা করছি বার্ড ফল্ট বা পাখির কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।
×