ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

জাতীয় জাদুঘরে অপ্রকাশিত কুষান মুদ্রাবিষয়ক সেমিনার

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ১১ মার্চ ২০১৫

জাতীয় জাদুঘরে অপ্রকাশিত কুষান মুদ্রাবিষয়ক সেমিনার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত অপ্রকাশিত কুষাণ মুদ্রা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাদুঘরের মুদ্রা ও লিপি গবেষক ড. মোঃ শরিফুল ইসলাম। প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. শরীফ উদ্দিন আহমেদ, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টের অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুসনে জাহান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আকসাদুল আলম। সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. আবদুল মমিন চৌধুরী। ড. মোঃ শরিফুল ইসলাম তাঁর প্রবন্ধে বলেন, মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পর ভারতবর্ষের রাজনৈতিক ঐক্য দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সুযোগে বহিরাগত জাতি ভারতে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করে। প্রথমে গ্রীক তারপর শক-পার্থিয়ান এবং পরিশেষে আগমন ঘটে কুষাণদের। প্রাচীন চীনের ইউনি জাতি হিউংনু নামক জাতির সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে হিন্দুকুশ পর্বত অতিক্রম করে কুষাণ জাতি ভারতবর্ষে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চল দখল করে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। ব্যবসায়িক লেনদেনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশেও কুষাণ মুদ্রার প্রচলন ঘটে। প্রাপ্ত মুদ্রা থেকে দেখা যায় বাংলাদেশে তিন ধরনের কুষাণ মুদ্রা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে মূল অনুকৃতি ও তাম্র মুদ্রা। জাদুঘরে দুইশত ষোলটি কুষাণ মুদ্রা সংরক্ষিত আছে। সভাপতির বক্তব্যে ড. আবদুল মমিন চৌধুরী বলেন, নিদর্শন সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং গবেষণা জাদুঘরের মূল কাজ। এ বিষয়ে ড. মোঃ শরিফুল ইসলাম প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গবেষণাপত্র রচনা করছেন যা ইতিহাস বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দশ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নাট্যাৎসব শুরু কাল ॥ কাল বৃহস্পতিবার থেকে শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হচ্ছে ১০ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব ও নাট্য সংলাপ। ‘দ্বিতীয় ঢাকা আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব’ শিরোনামের এই উৎসবটির যৌথ আয়োজক ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের (আইটিআই) বাংলাদেশ কেন্দ্র ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। বর্ণিল এ উৎসবের চারটি বিদেশী দলসহ অংশ নেবে দেশের ২৩টি দল। মঙ্গলবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন আইটিআইয়ের সম্মানিক সভাপতি রামেন্দু মজুমদার, আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্রের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ, উৎসব পরিচালক দেবপ্রসাদ নাথ, নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মিনু হক, আহমেদ গিয়াস, আইরিন পারভীন লোপা, বাবুল বিশ্বাস প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের উৎসবে বিদেশী নাটক ও অপেরার পাশাপাশি মঞ্চস্থ হবে দেশের ২৪টি নাটক। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলার নন্দন মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসব উদ্বোধন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। জমকালো আয়োজনে উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কোরিওগ্রাফিতে অংশ নেবেন বিভিন্ন নাট্যদলের কর্মীরা। তবে উদ্বোধনী দিনে থাকবে না কোন নাটকের প্রদর্শনী। শুক্রবার থেকে শিল্পকলার জাতীয় নাট্যশালার মূল হল, এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হল ও স্টুডিও থিয়েটার নাট্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবে প্রতিদিন সন্ধ্যায় ৩টি করে মোট ২৪টি নাটক মঞ্চস্থ হবে। এছাড়া ‘সহিংসার বিরুদ্ধে নাটক’ এবং ‘নাটক : শিল্পের প্রত্যুত্থান’ শিরোনামে নাট্য বিষয়ক দুটি সংলাপের আয়োজন করা হবে উৎসবে। এবারের উৎসবে চীনের দুটি অপেরা দল অংশ নিচ্ছে। এছাড়া ভারতের কলাক্ষেত্র মণিপুর মঞ্চস্থ করবে কানাইলালের নির্দেশনায় নাটক ‘দ্রৌপদী’। এর আগে ঢাকার মঞ্চে ‘ডাকঘর’ মঞ্চস্থ করে দারুণ প্রশংসিত হয়েছিল দলটি। এবারের উৎসবের অন্যতম চমক হতে যাচ্ছে কলাক্ষেত্র মণিপুরের ‘দ্রৌপদী’ নাটকটি।’ বৃহস্পতিবার উৎসবের উদ্বোধনী সন্ধ্যায় কোন নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে না। শুক্রবার থেকে উৎসবের নাটকগুলো মঞ্চস্থ হবে। ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হবে আরণ্যক নাট্যদলের প্রযোজনা ‘ভঙ্গবঙ্গ’, আগন্তুক রেপার্টরী প্রযোজনা ‘অন্ধকারে মিথেন’ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ প্রযোজনা ‘কবি’। ১৪ মার্চ মঞ্চস্থ হবে সৃষ্টি কালচারাল সেন্টার প্রযোজনা ‘বাঁদী-বান্দার রূপকথা’। এটি মঞ্চস্থ হচ্ছে ইন্দিরা গান্ধী সংস্কৃতি কেন্দ্রের সৌজন্যে। একই সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হবে বটতলা প্রযোজনা ‘দ্য ট্রায়াল অব মালাম ইলিয়া’ ও থিয়েট্রেক্স প্রযোজনা ‘দক্ষিণাসুন্দরী’। ১৫ মার্চ মঞ্চস্থ হবে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় প্রযোজনা ‘নাম-গোত্রহীন মান্টোর মেয়েরা’, পদাতিক নাট্য সংসদ (টিএসসি) প্রযোজনা ‘ম্যাকবেথ’ ও নাট্যম রেপার্টরী প্রযোজনা ‘সাইকেলঅলা’। ১৬ মার্চ মঞ্চস্থ হবে সেন্টার ফর এশিয়ান থিয়েটার প্রযোজনা ‘ম্যাকাব্রে’, প্রাচ্যনাট প্রযোজনা ‘ট্র্যাজেডি পলাশবাড়ী’, মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় প্রযোজনা ‘প্রমিথিউস’। ১৭ মার্চ মঞ্চস্থ হবে চীনের ইয়াংফু প্রমোশন এ্যান্ড প্রটেকশন সেন্টার প্রযোজনা ‘গ্যামলার ওয়াং প্রিপেয়ার্স দ্য নিউ ইয়ার’ ও ‘রোমান্স ইন বিটিং দ্য বার্ডস্’, আরশীনগর প্রযোজনা ‘সে রাতে পূর্ণিমা ছিল’, পদাতিক বাংলাদেশ প্রযোজনা ‘পোড়ামাটি’। ফ্রাংকোফোনি উৎসব শুরু কাল ॥ ঢাকায় নিযুক্ত ফরাসী ভাষাভুক্ত সাত দেশের কূটনৈতিক মিশনের উদ্যোগে ঢাকা ও চট্টগ্রামে কাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হছে ১০ দিনব্যাপী ফ্রাংকোফোনি উৎসব। মঙ্গলবার সকালে ধানম-ির আঁলিয়স ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকায় ফ্রাংকোফোনিভুক্ত দেশের রাষ্ট্রদূতরা। তাঁরা বলেন, শুধু একই ভাষাভুক্ত হওয়াই বড় কথা নয়, ফ্রাংকোভুক্ত দেশগুলো তাদের শিক্ষা, অর্থনীতি, গণতন্ত্র ও সংস্কৃতিসহ সার্বিক বিষয়ে একে অপরের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করে থাকে। আর এর ফলে এই ভাষাভুক্ত দেশগুলো সমানতালে উন্নতি ও অগ্রগতি লাভ করবে। উৎসব প্রসঙ্গে তাঁরা বলেন, ফ্রাংকোফোনি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৯৯৫ সাল থেকে প্রতিবছরই পৃথিবীর অনেক দেশে ফ্রাংকোফোনি সপ্তাহ পালন করা হচ্ছে। বাংলাদেশের ঢাকা ও চট্টগ্রামে এই সপ্তাহ চলাকালে ঢাকায় দূতাবাস রয়েছে এমন সাত ফ্রাংকোফোনিভুক্ত দেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শন, বিতর্ক, আর্ট প্রদর্শনীসহ নানা কর্মসূচী পালন করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ফরাসী রাষ্ট্রদূত মিস সোফি আবার্ট, কানাডার রাষ্ট্রদূত বিনয়েট পিয়েরে লারামি, মিসরের রাষ্ট্রদূত মাহমুদ এজ্জাত, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত এম এনগুয়েন কুয়াং থুচ, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মিস ক্যারোলাইন ট্রওটুয়েলার এবং মরোক্কোর চার্জ ডি এ্যাফেয়ার্স সাইয়েদ কাশমি।
×