ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পরমাণু সমঝোতায় বাধা

প্রকাশিত: ০৪:২০, ১১ মার্চ ২০১৫

পরমাণু সমঝোতায় বাধা

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের উচ্চকক্ষ সিনেটের রিপাবলিকান দলীয় সদস্যরা ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির বিষয়ে তাদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। তারা হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন চুক্তি ভবিষ্যত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বা কংগ্রেস বাতিল করে দিতে পারেন। খবর এএফপি ও ওয়াশিংটন পোস্ট অনলাইনের। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরান কোন পরমাণু চুক্তি করলে সেটা বারাক ওবামা যতদিন প্রেসিডেন্ট আছেন ততদিনই টিকবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন রিপাবলিকান দলের সিনেটররা। সোমবার ইরানকে উদ্দেশ করে লেখা খোলা চিঠিতে ৪৭ জন রিপাবলিকান সিনেটর এ কথা বলেছেন। সিনেটের সাতজন ছাড়া রিপাবলিকান দলের বাকি সবাই ওই খোলা চিঠিটিতে সই করেছেন। তবে ডেমোক্র্যাট দলের কেউ এতে সই করেননি। তারা রিপাবলিকান সহকর্মীদের এই পদক্ষেপকে চমক বলে অবহিত করেন। আরকানসা থেকে নির্বাচিত রিপাবলিকান দলীয় সদস্য টম কটন লিখিত চিঠিতে বলা হয়, ওবামা ও ইরানী নেতৃবৃন্দের মধ্যে হতে যাওয়া চুক্তিটি হবে একটি ‘নির্বাহী সমঝোতা’। ভবিষ্যত মার্কিন প্রেসিডেন্ট কলমের ছোঁয়ায় এটি বাতিল করে দিতে পারেন বা ভবিষ্যতে কংগ্রেস চুক্তির ধারাগুলো সংশোধন করতে পারে। চিঠির কথাগুলো জনসমক্ষে আসার কিছুক্ষণ এ বিষয়ে ওবামা নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, রিপাবলিকানরা ইরানের সঙ্গে চলমান পরমাণু আলোচনায় বাধা দিচ্ছে। ওবামা বলেন, ‘ইরানের কট্টরপন্থী নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে যে রকম সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় পরিহাসের বিষয় হলো রিপাবলিকান দলীয় কতিপয় সদস্য সে রকম আচরণ করছেন।’ ওবামার ভাষায় এ যেন, ‘একটি অস্বাভাবিক জোট।’ প্রায় একই ধরইের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন এর মধ্য দিয়ে সংবিধানের মর্যাদাকে হেয় করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সিনেটে আমার ৩৬ বছরের অভিজ্ঞতায় আমি দেখি নাই বাইরের কোন দেশকে সরাসরি উপদেশ দিয়ে কোন সিনেটরকে এমন চিঠি লিখেছেন। হতে দেশটির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বৈরী সম্পর্ক চলছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, সংবিধান প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে প্রেসিডেন্ট দেশটির সঙ্গে কোন অর্থপূর্ণ সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবেন না।’ চিঠিটি এমন এক সময় করা হলো যখন ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতায় পৌঁছাতে এক মাসেরও কম সময় রয়েছে। ওবামা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, ভবিষ্যতে চুক্তির ধারা পরিবর্তন না হয় সে জন্য চুক্তিটি কংগ্রেসের কাছ থেকে অনুমোদন করিয়ে করিয়ে বাধ্যবাধকতা নেই। কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে চুক্তিটি করলে তা পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে প্রচলিত প্রটোকল ভঙ্গ করা হবে কী না সে প্রসঙ্গে সোমবার হোয়াইট হাউসের প্রেসিডেন্ট জশ আর্নেস্ট বলেছেন চিঠিতে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাকে খাটো করে দেখান হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সামনে একমাত্র যে বিকল্পটি খোলা থাকে তা হলো সামরিক সংঘাত। প্রস্তাবিত চুক্তিতে ইরানের জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্র এমন স্তরে সীমিত রাখার কথা বলা হয়েছে যে, তেহরান যদি কোন কারণে আন্তর্জাতিক পরমাণু পরিদর্শকদের দেশ থেকে বের করেও দেয় তবুও দেশটির পরমাণু বোমা তৈরির পর্যায়ে আসতে অন্তত এক বছর সময় দরকার হবে। এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ রিপাবলিকানদের ওই খোলা চিঠিকে ‘প্রচারণার কূটচাল’ অভিহিত করেছেন।
×