ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের রেটিং পঞ্চমবারের মতো বিএথ্রি

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ১০ মার্চ ২০১৫

বাংলাদেশের রেটিং পঞ্চমবারের মতো বিএথ্রি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের ব্যাংকিং খাত বর্তমানে সুদৃঢ় ভিত্তি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। বৈশ্বিক মন্দা পরবর্তী প্রভাব এবং ২০১৩ সালের দেশীয় রাজনৈতিক অস্থিরতার ক্ষতিকর প্রভাব কাটিয়ে ২০১৪ সালে এ অর্জন সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সময়োচিত পদক্ষেপ এবং সরকারের সার্বিক সহযোগিতার ফলে সৃষ্ট নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে উঠে অভ্যন্তরীণ ও বহিঃখাতের আঘাত সহনে উল্লেখযোগ্য সক্ষমতা অর্জন করেছে। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা মুডি’স এবং এসএ্যান্ডপি কর্তৃক সম্পাদিত সর্বশেষ রেটিং অনুসারে বাংলাদেশ একাদিক্রমে পঞ্চমবারের মতো (২০১০ হতে ২০১৪ পর্যন্ত) যথাক্রমে বিএথ্রি স্ট্যাবল রেটিং এবং বিবি সভরেন রেটিং উইথ স্ট্যাবল আউটলুক অর্জন করেছে। ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা এবং স্থিতিশীলতা এই রেটিংয়ের অন্যতম প্রধান নিয়ামক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোর আর্থিক সুস্থতা এবং স্থিতিশীলতার অন্যতম পরিমাপক হচ্ছে মূলধন পর্যাপ্ততা। মূলধন পর্যাপ্ততা সংক্রান্ত ব্যাসেল-২ নীতিমালার সফল বাস্তবায়নের পাশাপাশি ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়ন করার জন্যও ইতোমধ্যে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। ব্যাসেল-২ নীতিমালা মোতাবেক ব্যাংকগুলো ডিসেম্বর ’১৪ শেষে ব্যাংকগুলোর মূলধন পর্যাপ্ততার হার দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এ হার ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি সহনের সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। সরকারী এবং বেসরকারী বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের পরিচালনা পর্ষদের এবং ব্যবস্থাপনার কার্যক্রমে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে বেশকিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সাধন করেছে। ব্যাংক কোম্পানি আইনের এ সংক্রান্ত ধারাগুলো সংশোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। ঋণ শ্রেণীকরণ ও প্রভিশনিং নীতিমালা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করায় বর্তমানে ব্যাংকগুলোকে আগের তুলনায় অধিক হারে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। এরপরও ব্যাংকগুলোর মুনাফা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলোর তারল্যের ক্ষেত্রেও কোন ঘাটতি নেই। ব্যাংক খাতে অলস তারল্য মাত্র ৩ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা। যা ৫৬টি ব্যাংক বিবেচনায় অস্বাভাবিক নয়। কলমানি মার্কেটে সুদের হার দীর্ঘদিন ধরে ৭ শতাংশের কাছাকাছি অবস্থান করছে অর্থাৎ কলমানি মার্কেট স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে পর্যাপ্ত তারল্য থাকায় আগের মতো কলমানি মার্কেটে সুদহারে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে না। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, তারল্য সঙ্কট না থাকায় ব্যাংকগুলো এখন প্রকৃত ঋণ গ্রহীতা নির্বাচন করে ঋণ বিতরণ করতে পারছে। বর্তমানে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রমের মাধ্যমে নতুন নতুন খাতে ঋণ প্রবাহকে উৎসাহিত করা হচ্ছে যা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখার পাশাপাশি দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা আনয়নেও ভূমিকা রাখছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের ফলে খাদ্য আমদানি ব্যয় ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হচ্ছে।
×