ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

অমিত শাহ্’র সঙ্গে টেলিফোনের গল্প ছয় কংগ্রেসম্যানের সই জাল দেশের ভাবমূর্তি ক

প্রকাশিত: ০৭:৫৩, ৯ মার্চ ২০১৫

অমিত শাহ্’র সঙ্গে টেলিফোনের গল্প ছয় কংগ্রেসম্যানের সই জাল দেশের ভাবমূর্তি ক

সংসদ রিপোর্টার ॥ সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপার্সনের ভারতের বিজেপি সভাপতির সঙ্গে টেলিফোনে আলাপের মিথ্য গল্প প্রচারে দেশের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একইভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছয়জন কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জাল করে বিবৃতি প্রচারের ঘটনায় বিব্রতকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। তবে ওই দুটি জালিয়াতির পেছনে একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার একটি অপপ্রয়াস ছিল, যার দায়-দায়িত্ব কোনভাবেই সরকার ও জনগণের ওপর বর্তায় না। রবিবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারী দলের সংসদ সদস্য তাজুল ইসলামের লিখিত প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির কল্যাণে এ সমস্ত হীন কার্যকলাপ থেকে নিজেদের দূরে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের মধ্যে এবং তদুপরি ভারতের বিজেপি এবং কংগ্রেস উভয় দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বর্তমানে যে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান, তার কারণে মিথ্যা টেলিফোন আলাপের ঘটনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোনরূপ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলেই আমি মনে করি। ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জাল করি বিবৃতি প্রদান প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব দরবারে বাঙালী জাতির ভাবমূর্তি ও গ্রহণযোগ্যতা যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সে বিষয়ে বর্তমান সরকার সচেষ্ট রয়েছে। এ প্রেক্ষিতে ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিষয়ক হাউস কমিটির চেয়ারম্যান এবং পত্রিকায় যেসব কংগ্রেসম্যানের নাম উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, তাদের কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং উক্ত বিষয়ে উল্লিখিত কার্যালয়সমূহের মতামত জানতে চেয়েছেন। উক্ত কার্যালয়সমূহ থেকে উক্ত ঘটনার বিপরীতে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং তাঁরা নিশ্চিত করেছেন এ রকম কোন বিবৃতি তাদের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত হয়নি। বাংলাদেশ দূতাবাস মার্কিন সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন। সরকারী দলের সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের প্রশ্নের জবাবে আবুল হাসান মোহাম্মদ আলী জানান, সম্পদের ন্যায্য হিস্যাসহ তিনটি অমীমাংসিত বিষয়ে পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে অদ্যাবধি কোন প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি। পাকিস্তানের সঙ্গে আগামীতে অনুষ্ঠিতব্য সকল আনুষ্ঠানিক/অনানুষ্ঠানিক বৈঠকেও নিষ্পত্তির লক্ষ্যে যথাযথ গুরুত্ব সহকারে উত্থাপিত হবে। পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের দেনা/পাওনা অর্থাৎ উত্তরসূরী রাষ্ট্র হিসেবে অবিভাজিত সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা আদায়, বাংলাদেশের পক্ষ হতে পাকিস্তানের কাছে দীর্ঘ অমীমাংসিত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর একটি। মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সব আনুষ্ঠানিক বৈঠকেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দেনা-পাওনাসহ তিনটি ইস্যুই পাকিস্তানের কাছে জোরালোভাবে উত্থাপন করা হয়ে আসছে। এরূপ বৈঠকের মধ্যে ১৯৭৭, ১৯৮০, ১৯৮৯, ১৯৯২, ১৯৯৭, ২০০৩, ২০০৪, ২০০৫, ২০১০, ২০১২ সালের বৈঠকসমূহ অন্যতম। আনুষ্ঠানিক বৈঠক ছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ে শীর্ষ বৈঠক কিংবা বহুপাক্ষিক বৈঠকের সাইডলাইনেও সম্পদের হিস্যাসহ তিনটি অমীমাংসিত বিষয় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হয়। বেগম ওয়াসিকা আয়শা খানের প্রশ্নের জবাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী আরও জানান, শুধু ইসরাইল ছাড়া বিশ্বের প্রায় সব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং প্রত্যক্ষ সহযোগিতা আছে। বর্তমানে বিশ্বের ৫৩টি দেশে বাংলাদেশের ৬৯টি মিশন রয়েছে। এছাড়া পোল্যান্ড ও ডেনমার্কে আরও দুটি পূর্ণাঙ্গ দূতাবাস স্থাপনের সমস্ত প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। হাবিবুর রহমান মোল্লার প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ব্যাপারে আমাদের সরকার বদ্ধপরিকর। এ বিষয়ে সমন্বিত কূটনৈতিক ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সরকার কর্তৃক গৃহীত নানা পদক্ষেপের ফলে সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা দ্রুত ও উল্লেখযোগ্য হ্রাস পেয়েছে।
×