ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তুর্কী প্রেসিডেন্টের খাবারে বিষ আছে কিনা পরীক্ষা করা হয়

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ৮ মার্চ ২০১৫

তুর্কী প্রেসিডেন্টের খাবারে বিষ আছে কিনা পরীক্ষা করা হয়

অতীতে সাবধানী রাজা ও ফেরাউনরা নিজেদের প্রাণরক্ষায় যে কৌশল অবলম্বন করতেন তার আধুনিক রূপায়ন ঘটেছে তুরস্কে। সেদেশের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগানের খাবার তিনি খাওয়ার পূর্বে কোন মানুষ টেষ্টারের দ্বারা পরীক্ষিত হয় না- তা হয় গবেষণাগারে। এরদোগানের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. সেভদেত এরদল এ সপ্তাহে প্রকাশ করেছেন যে, রাজধানী আঙ্কারায় প্রেসিডেন্টের ৬০ কোটি ডলারের জাঁকালো প্রাসাদের এক হাজার কক্ষের অন্তত একটি কক্ষে বিশেষ খাদ্য বিশ্লেষণ গবেষণাগার করা হবে। এটিতে প্রেসিডেন্টের খাবারে তাঁকে হত্যার প্রচেষ্টায় ব্যবহৃত হতে পারে এমন তেজষ্ক্রিয় পদার্থ, বিষ কিংবা কোন বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়া আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা হবে। ডা. এরদল মঙ্গলবার তুর্কি সংবাদপত্র ‘হুরিয়াত’-এ প্রকাশিত এক সাক্ষাতকারে বলেন, বিশ্বজুড়ে এখন আর শুধু অস্ত্রের সাহায্যেই রাজনৈতিক নেতাদের হত্যা করা হয় না, বরং খাবারে বিষাক্ত পদার্থ মিশিয়েও গুপ্তহত্যা চালানো হয়। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, পাঁচজন সদাপ্রস্তুত বিশেষজ্ঞ দিনে ১৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালনের সময় প্রেসিডেন্টের খাবারে কোন সন্দেহজনক পদার্থ আছে কিনা তা বিশ্লেষণ এবং তাঁর সকল পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করেন। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করে গত আগস্টে দেশের প্রথম সরাসরি নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এরদোগান তাঁর আড়ম্বরপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন। প্রতিপক্ষরা তাঁকে ক্রমশ অধিক কর্তৃত্বপরায়ণ নেতা হয়ে ওঠার জন্য তাঁর নিন্দা করে বলেছেন, তিনি একজন সুলতানের ভাবভঙ্গি অনুসরণ করেন। তাঁর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ বিশ্বের বৃহত্তম নির্বাহী বাসস্থানের অন্যতম। এটি হোয়াইট হাউসের ৩০ গুণেরও বেশি বড়। এই সমালোচনা উপহাসের রূপ নেয় যখন গত জানুয়ারিতে ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে প্রাসাদের সিঁড়ির পাশে ওসমানী আমলের ঢং-এ বর্মপরিহিত তলোয়ার, বর্শা ও ঢালসজ্জিত ১৬ জন যোদ্ধা তাঁকে স্বাগত জানায়। সোশ্যাল মিডিয়া একে ‘অটোমান সার্কাস’ বলে আখ্যায়িত করেছে। ডা. এরদল এরদোগানের খাবার পরীক্ষার পদ্ধতি সম্পর্কে যে তথ্য ফাঁস করেছেন তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন কিছু খাদ্যের নমুনা এমনকি পরীক্ষার জন্য অন্য নগরীর ল্যাবেও পাঠানো হয়। এসব বিষয়কেও সমালোচকরা এরদোগানের বাড়াবাড়ি করার একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে একজনের অহংবোধের বিস্তার হিসেবে দেখছেন, যিনি ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আছেন। বিশ্বের প্রায় প্রত্যেক নেতা, অবশ্যই খাদ্য নিরাপত্তার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করেন এবং আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্কও একজন খাদ্যের গুণমান নির্ধারক (ফুড টেস্টার) ছিলেন। তবে, একজন প্রেসিডেন্টের চিকিৎসক এভাবে সব খুঁটিনাটি ফাঁস করে দেবেন এটা বিরল ঘটনা। প্রেসিডেন্টের দফতরের একজন প্রতিনিধি বুধবার বলেন, ডা. এরদল এ বিষয়ে আর কোন সাক্ষাতকার দেবেন না। -ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস।
×