ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ছোট দলের বড় লড়াই ॥ আজ আয়ারল্যান্ড-জিম্বাবুইয়ে জিততে মরিয়া দু’দল

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৭ মার্চ ২০১৫

ছোট দলের বড় লড়াই ॥ আজ আয়ারল্যান্ড-জিম্বাবুইয়ে জিততে মরিয়া দু’দল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জিম্বাবুইয়ে টেস্ট খেলুড়ে দল, আয়ারল্যান্ড আইসিসির সহযোগী সদস্য। জিম্বাবুইয়ের ভা-ারে ব্রেন্ডন টেইলর-হ্যামিল্টন মাসাকাদজার মতো বিশ্বমানের ক্রিকেটার। স্বাভাবিক বিচারে তাই জিম্বাবুইয়েরই আজ এগিয়ে থাকার কথা। কিন্তু কথা যখন বিশ্বকাপ নিয়ে তখন সমীকরণ বদলে যেতে বাধ্য, অভাবিত নৈপুণ্যে যে বাধ্যতা তৈরি করেছে আইরিশরা! অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডের আত্মবিশ্বাসের দৃঢ়তাকে তাই ঔদ্ধত্যের মতো শোনায় ‘যখন সব কিছু আপনার নিয়ন্ত্রণে তখন প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবার সময় কোথায়!’ বলেন কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্নে বিভোর আইরিশ সেনাপতি। ৩ খেলায় ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পুল ‘বি’এর পঞ্চম স্থানে আয়ারল্যান্ড। রান রেটের সৌজন্যে ওপরে থাকলেও তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার পাকিস্তানের পয়েন্টও সমান ৪। তবে আয়ারল্যান্ড ম্যাচ একটি কম খেলেছে। সে অর্থে ‘উন্মুক্ত’ পুল ‘বি’ থেকে কোয়ার্টারে ওঠার সুযোগ রয়েছে আয়ারল্যান্ডের। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই সাবেক চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে চমক দেখায় আইরিশরা। সেই ম্যাচের কথা উল্লেখ না করলে বিশ্বকাপের আইরিশ-চমকের অনেক কিছু অজানা থেকে যাবে! আগে ব্যাটিং করে উইন্ডিজ যখন ৩০৪ রান করে, তখন অনেকে ধরেই নিয়েছিলেন এক তরফা হবে ম্যাচ। কিন্তু পল স্টারলিং, এড জয়েস ও নাথান ও’ব্রায়েনের তিন-তিনটি ম্যারথন হাফ সেঞ্চুরির সৌজন্যে ইতিহাস রচনা করে আয়ারল্যান্ড। ১৩ ওভারে ৭১, এরপর ২ উইকেটে ১৭৭, ৩ উইকেটে ২৭৩! ম্যাচের নায়ক স্টারলিং ৮৪ বলে ৯২, অপর দুই তারকা এড জয়েস ৬৭ বলে ৮৪ ও নাথান ও’ব্রায়েন ৬০ বলে অপরাজিত থাকেন ৭৯ রানে। ৪.১ ওভার হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আয়ারল্যান্ড! আরও একবার চমক দেখায় সহযোগী দেশটি। বিশ্বকাপের তিনবার তিন শ’র বেশি রান টপকে জয় পায় আয়ারল্যান্ড। ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে এমন ঘটনাই যেখানে মাত্র পাঁচটি, তার তিনটিতেই নাম তাদের! অনেকে সেটিকে অঘটন বলেন। সেটিই বাস্তব। তবে অধিনায়ক তা মানতে রাজি নন। ‘অনেকে উইন্ডিজের বিপক্ষে আমাদের জয়কে অঘটন হিসেবে দেখেন। আমি কোনভাবেই তা মানি না। আমরা প্রতিটি ম্যাচে জয়ের প্রস্তুতি নিয়েই এসেছি! লক্ষ্য কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা।’ আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২ উইকেটের ঘাম ঝরানো জয়ের পর অবশ্য শক্তিধর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে বড় ব্যবধানে হারে তারা। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা আর জিম্বাবুইয়ে এক নয়। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে জয়ের সামর্থ্য রয়েছে আইরিশদের। ‘আগেও বলেছি, প্রতিপক্ষ নিয়ে কখনও ভাবী না আমরা। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য জয়। জিম্ববুইয়েকে হারিয়ে কোয়ার্টারের পথে এগিয়ে যেতে চাই। আমাদের হাতে বিশ্বমানের পারফর্মার রয়েছে, সবাই জ্বলে উঠলে যে কোন দলকে হারানো সম্ভব।’ যোগ করেন পোর্টারফিল্ড। খুব বাড়িয়ে বলেননি। বল হাতে জন মুনি, ম্যাক্স সরেনসেন, স্পিন ভেল্কিতে তরুণ জর্জ ডকরেল খুবই চাতুর্যময়। অলরাউন্ড পজিশনে পল স্টারলিং, ভ্রাতৃদ্বয় নেইল ও’ব্রায়েন ও কেভিন ও’ব্রায়েন ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম। ব্যাট হাতে অধিনায়ক পোর্টারফিল্ড, এড জয়েস তো আন্তর্জাতিক মানের। সুতরাং দুর্বল আরব আমিরাতের বিপক্ষে ৪ উইকেটের কষ্টের জয়ের পর আসরে দ্বিতীয় জয়ের স্বপ্ন দেখা জিম্বাবুইয়ের জন্য কাজটা মোটেই সহজ হবে না। অবশ্য আইরিশদের বিপক্ষে জিততে আশাবাদী ব্রেন্ডন টেইলর। জিম্বাবুইয়ে অধিনায়ক যেমন বলেন, ‘আসরে এ পর্যন্ত একটি মাত্র জয়, বাকি তিনটিতে হার দেখে অনেকে আমাদের সম্পর্কে ভুল ধারণা হবে। তবে সব ম্যাচেই আমরা শতকরা ৮০ ভাগ ভাল ক্রিকেট খেলেছি! কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি করতে হবে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয় তুলে নিতে খুবই আত্মবিশ্বাসী আমরা।’ ওয়ানডেতে মুখোমুখি লড়াইয়েও এগিয়ে টেস্ট খেলুড়ে জিম্বাবুইয়েই। ৫ বারের মোকাবেলায় ৩ বারই জয় তাদের, ১টিতে হার ও ১টি ম্যাচ ‘টাই’ হয়। মাত্র ১ রান হলে চতুর্থ জিম্বাবুইয়ান হিসেবে ৫ হাজার রানের মাইল ফলকে নাম লেখাবেন টেইলর, তার সামনে তিন সাবেক তারকা এ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার ও এ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল। আজ ভাল কিছু করতে তাই মরিয়া হয়ে থাকবেন জিম্বাবুইয়ে অধিনায়ক।
×