স্টাফ রিপোর্টার ॥ সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেলবাহী ট্যাঙ্কার ডুবির ঘটনায় জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকারের সমীক্ষা প্রতিবেদন অগ্রহণযোগ্য ও বিজ্ঞানসম্মত নয় বলে মত প্রকাশ করেছে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি ও পরিবেশ সংগঠন বাপা। একই সঙ্গে তারা বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার মাধ্যমে সুন্দরবনকে রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে। এ সব সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সম্প্রতি জাতিসংঘ ও সরকারের যৌথদলের পক্ষ থেকে সুন্দরবনের তেল বিপর্যয় নিয়ে পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ট্যাঙ্কার ডুবির ফলে সুন্দরবনের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি বলে মত প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্ব সংস্থা ও সরকারের এ বক্তব্য ভবিষ্যতের সুন্দরবনের জন্য ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে বলে অভিমত প্রকাশ করা হয়।
শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ মতামত প্রকাশ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দুর্ঘটনার ১৪ দিন পর যৌথদল কাজ শুরু করে। মূলত ওই মুহূর্তের দৃশ্যমান আলামতের ভিত্তিতে যৌথদলের পক্ষ থেকে সমীক্ষা রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। এ দীর্ঘ সময়ে জোয়ার-ভাঁটায় ভেসে যাওয়ার পর অবশিষ্ট তেলÑ দর্শনভিত্তিক হওয়ার ফলে কোনভাবেই এটি যথাযথ সমীক্ষা হিসেবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সার্বিক পর্যালোচনার জন্য গঠিত চারটি উপদলের মোট ১৮ জন বিশেষজ্ঞের মধ্যে মাত্র ২ জন বিদেশী বিশেষজ্ঞ থাকায় এ প্রতিবেদনে প্রচ্ছন্ন সরকারী প্রভাব প্রতিয়মান হয় বলেও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া যৌথদল দুর্ঘটনার কারণ মোটেও পর্যালোচনা করেনি। তেমনি এ ঘটনায় বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সামাজিক ও পেশাজীবী কোন সংগঠনকে কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়নি। এ অবস্থায় সুন্দরবন রক্ষায় অবিলম্বে যথাযথ বিজ্ঞান ও বাস্তবভিত্তিক গবেষণার মাধ্যমে তেল বিপর্যয়ের কারণ ও ক্ষতি নিরূপণ করে তা মোকাবেলার প্রয়োজনীয়তার ওপরও তাগিদ দেয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে বাপার সাধারণ সম্পাদক ডাঃ আব্দুল মতিন বলেন, জাতিসংঘ ও সরকারের সমন্বয়ে দেয়া প্রতিবেদন অপূর্ণাঙ্গ, আংশিক। এটি বিজ্ঞানসম্মত নয়। প্রতিবেদন তৈরিতে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। যৌথদলের পক্ষ থেকে ট্যাঙ্কার ডুবির ফলে সুন্দরবনের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি বলে মত প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্বসংস্থা ও সরকার প্রদত্ত এ বক্তব্য সুন্দরবনের ভবিষ্যতের জন্য ব্যাপক ক্ষতির কারণ হতে পারে। দুর্ঘটনার পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্বউদ্যোগে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি প্রতিবেদনেই দেখা গেছে এ ঘটনায় সুন্দরবনের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হবে।