ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালে বিয়ে পাগল পুলিশ অফিসার ॥ স্ত্রী নির্যাতন

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ৭ মার্চ ২০১৫

বরিশালে বিয়ে পাগল পুলিশ অফিসার ॥ স্ত্রী নির্যাতন

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ স্ত্রীকে তিন মাস বাসায় আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ নগরীর কাউনিয়া থানার উপ-পরিদর্শক ওয়ারেছ হোসেনকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত দশটার দিকে কাউনিয়া থানার ওসি তদন্ত সেলিম রেজা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সূত্রমতে, এর আগে ওইদিন বিকেলে কাউনিয়া থানাধীন চৌধুরীপাড়ার রহিম মিয়ার আবাসিক ভবনের নিচতলার একটি তালাবদ্ধ ফ্ল্যাট থেকে এসআই ওয়ারেছের স্ত্রী অপ্রাপ্তবয়স্ক হাবিবা আক্তারকে বন্দীদশা থেকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় ওসি সেলিম রেজা, এসআই শাহীনসহ পুলিশের একাধিক সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির বিভাগীয় প্রধান এ্যাডভোকেট মুনিরা বেগম উপস্থিত ছিলেন। নগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোঃ জিল্লুর রহমান জানান, তারা হাবিবা আক্তারের অভিযোগ শুনে রাতে এসআই ওয়ারেছকে প্রাথমিকভাবে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করেছেন। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হাবিবার মা মাহফুজা বেগম বলেন, দেড় বছর পূর্বে বন্দরথানাধীন রাজারব্রিজ সংলগ্ন তাদের গ্রামের বাড়িতে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে তদন্তে যান এসআই ওয়ারেছ। তখন তার কন্যা হাবিবা নগরীর শের-ই-বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। ওই সময় ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক হাবিবাকে বিয়ে করেন ওয়ারেছ। তিনি আরও বলেন, গত তিন মাস থেকে তার কন্যাকে শারীরিক নির্যাতন করে আসছে এসআই ওয়ারেছ। বিষয়টি তিনি মহিলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দকে জানানোর পর বৃহস্পতিবার বিকেলে কাউনিয়া থানা পুলিশের সহায়তায় হাবিবাকে ঘরে তালাবদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ সময় উপস্থিত সংবাদ কর্মীদের কাছে হাবিবা বলেন, তাকে প্রায়ই হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করত এসআই ওয়ারেছ। সূত্রে আরও জানা গেছে, রংপুর জেলা সদরের সাতচত্ব¡র স্টেশন রোড এলাকার সেলিম উদ্দিনের পুত্র ওয়ারেছ ১৯৯৪ সালে পুলিশের কনস্টবল পদে চাকরি নেয়। ওই বছরই সে বিয়ে করে। তার প্রথম স্ত্রী আসমা বেগমের ঘরে তিনটি সন্তান রয়েছে। বছর দুয়েক আগে নগরীর নথুল্লাবাদে এক মেয়ের বিয়ে নিয়ে ঝামেলা হলে এসআই ওয়ারেছ নিজেই ওই মেয়েকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করে। পরবর্তীতে ছয় মাস পর তাকে ঘর থেকে বের করে দেয়া হয়। এরপরই হাবিবাকে সে জোরপূর্বক তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করে। গত তিন মাস থেকে হাবিবাকে তাড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে ভাড়াটিয়া বাসায় আটকের পর অমানসিক নির্যাতন করে আসছিল এসআই ওয়ারেছ। জেলা মহিলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ জানান, কাউনিয়া থানা পুলিশের সহায়তায় তালাবদ্ধ বাসা থেকে তালা ভেঙ্গে হাবিবাকে উদ্ধার করে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় কিশোরীর মুখে নির্যাতনের বর্ণনা শুনে বিস্মিত হন উপ-পুলিশ কমিশানার (উত্তর) মোঃ জিল্লুর রহমানসহ অন্য কর্মকর্তারা। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসআই ওয়ারেছের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সে বলে, অভিযোগগুলোর সব সত্য নয়।
×