ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক অপ্রতিদ্বন্দ্বী ॥ বার্নিকাট

প্রকাশিত: ০৮:০৪, ৬ মার্চ ২০১৫

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক অপ্রতিদ্বন্দ্বী ॥ বার্নিকাট

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বিশ্বে ‘অপ্রতিদ্বন্দ্বী’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নব নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিজিএমইএর কার্যালয়ে সংগঠনটির নেতাদের সঙ্গে তৈরি পোশাকের বর্তমান অবস্থা নিয়ে এক বৈঠকে বার্নিকাট এমন মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি বলেন, কিভাবে চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করতে হয় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত এটা করে বিশ্ববাসীকে দেখিয়েছে। তবে, আরও অনেক কিছু করার আছে। এ জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানান বার্নিকাট। এছাড়া ৫০ বিলিয়ন ডলারের রফতানি লক্ষ্যমাত্র অর্জন ও বিজিএমইএর সঙ্গে চলমান সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন তিনি। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সামাজিক পরিবর্তনে তৈরি পোশাকশিল্প বড় ভূমিকা রাখছে। এছাড়া পরিবেশ উন্নয়ন ইস্যুতে বিশ্ববাসীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে অনেক ভাল উদ্যোগ নিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে- ঝুঁকিপূর্ণ তৈরি পোশাক কারখানাগুলো বন্ধ করে দেয়া, কারখানা সংস্কারের কাজ অব্যাহত রাখা, তৈরি পোশাক কারখানায় পরিদর্শক নিয়োগ, কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন চালু এবং শ্রম আইনের বাস্তবায়ন করা। তবে, পোশাকশিল্প মালিক, শ্রমিক, ট্রেড ইউনিয়ন এবং আন্তর্জাতিক কমিউনিটি মিলে আলোচনা করে শ্রম আইনের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের পরামর্শ দেন তিনি। বৈঠকে বার্নিকাট মাত্র সাড়ে তিন মিনিটে তাঁর বক্তব্য শেষ করেন। এর আগে বিজিএমইএ সভাপতি মোঃ আতিকুল ইসলাম গার্মেন্টস খাতের অগ্রগতির বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও দুর্বলতার চিত্র তুলে ধরে বলেন, এই মুহূর্তে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জই তৈরি পোশাকশিল্পের প্রধান চ্যালেঞ্জ। পোশাক খাতের উন্নয়নে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা খুব জরুরী বলে উল্লেখ করেন তিনি। বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে পোশাক খাতে বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। রানা প্লাজার পরে আমরা অনেক কাজ করেছি। এ্যাকর্ড ও লায়েন্স ৩ হাজার ৫০০ কারখানার মধ্যে ২ হাজার ৩২৫টি পরিদর্শন করে মাত্র ২৯টি কারখানাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মতামত দিয়েছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে এসব কারখানা বন্ধ করে দিয়েছি। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশে তৈরি পোশাক কারখানার পরিবেশ অনেক উন্নত হয়েছে। এখানে এমন ‘প্লাটিনাম কারখানা’ রয়েছে; যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের ‘প্লাটিনাম কারখানা’র চেয়েও উন্নত। এছাড়া ৩০ টি ‘গ্রীন কারখানা’ তৈরির কাজ চলছে বলেও তিনি নব নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে জানান। বাংলাদেশের শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে উল্লেখ করে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ২০০৬ সালে শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ছিল ১ হাজার ৬৬২ টাকা। সেখানে ২০১৩ সালে তা বৃদ্ধি করে ৫ হাজার ৩০০ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর এ পর্যন্ত ৮৩ হাজার ৬৭৮ শ্রমিককে অগ্নিনিরাপত্তা প্রশিক্ষণ এবং ২০ হাজার ১৮৮ জন মধ্যমসারির কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ’র সহসভাপতি মোঃ শহীদুল্লাহ আজিম, রিয়াজ বিন মাহমুদ সুমন, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও আব্দুস সালাম মুর্শেদী প্রমুখ।
×