মাহফুজুর রহমান, নিউইয়র্ক থেকে ॥ নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলে দুই ঈদে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছেন মেয়র বিল ব্লাজিও। গত বুধবার মেয়র বিল ডি ব্লাজিও এ ঘোষণা দেয়ার পর সিটির মুসলমানদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। নিউইয়র্কের মুসলমানরা বিষয়টিকে তাঁদের রাজনৈতিক বিজয় হিসেবে দেখছেন।
গত নির্বাচনের আগে ডেমোক্রেট দলের মেয়রপ্রার্থী বিল ডি ব্লাজিও নির্বাচনে জয়ী হলে দুই ঈদে স্কুল ছুটি ঘোষণার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আর তাতে বাংলাদেশীসহ অন্যান্য মুসলমান অভিবাসীরা বিল ব্লাজিওর পক্ষে ব্যাপক প্রচারে যোগ দেন। গত বুধবার মেয়র ডি ব্লাজিওর ঘোষণার পর সিটির স্কুল চ্যান্সেলর ক্যারম্যান ফারিনা জানান, চলতি বছর থেকেই দুই ঈদের ছুটি কার্যকর হবে। এ ঘোষণার ফলে এখন থেকে নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলগুলোতে দুই ঈদে সাধারণ ছুটি থাকবে। সিটির পাবলিক স্কুলগুলোতে আগে থেকেই ইহুদী এবং খ্রীস্টান ধর্মালম্বীদের উৎসবে ছুটি পালিত হয়ে আসছিল। নিউইয়র্কে মুসলমান অভিবাসীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় ঈদে স্কুল ছুটি রাখার দাবি ক্রমশ জোরালো হয়ে উঠছিল। কিন্তু এতে সাড়া না দিয়ে সাবেক মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ ধর্মীয় উৎসবের নামে স্কুল বন্ধ রাখার বিরোধিতা করে আসছিলেন। তারপরও দাবি আদায়ে নিউইয়র্কে মুসলমান অভিবাসীদের সামাজিক সংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুই ঈদে স্কুলে ছুটির দাবি জানাতে থাকে। মেয়র ডি ব্লাজিও ঈদে স্কুল ছুটির ঘোষণা দিয়ে বলেন, সিদ্ধান্তের কারণটি সহজেই বোধগম্য। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক সিটিতে মুসলমান আভিবাসীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। নগরীর উন্নয়নে মুসলমানদের অবদানের স্বীকৃতির জন্যই ঈদের উৎসবে স্কুল ছুটি রাখা হবে বলে তিনি বলেন। ২০০৮ সালে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপ থেকে জানা যায়, নিউইয়র্কের পাবলিক স্কুলের ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী মুসলমান ধর্মাবলম্বী। এই মুসলমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৯৫ ভাগই পাবলিক স্কুলে পড়ে। আর নিউইয়র্কে ৬-১০ লাখ মুসলমান বাস করে বলে ধারণা করা হয়।
নিউইয়র্কের স্কুল চ্যান্সেলর ক্যারম্যান ফারিনা তাঁর তাৎক্ষণিক বক্তব্যে বলেছেন, দুই ঈদে ছুটি ঘোষণার ফলে শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় সহনশীলতা, ভিন্ন ধর্ম এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার ও শেখার অবকাশ পাবে। আরব আমেরিকান এ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক লিন্ডা সারসোর তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, এতদিন ধর্মীয় উৎসব পালন এবং শিক্ষাগ্রহণের জন্য স্কুলে যাওয়ার টানাপড়েনে ঈদের দিনগুলোতে থাকতে হতো আমাদের ছেলেমেয়েদের।
তিনি বলেন, আমেরিকার মুসলমানদের জন্য ঘোষণাটি ঐতিহাসিক। এখানে বসবাসরত মুসলমানরা আমেরিকাকে নিয়ে যেমন গর্বিত, তেমনি মেয়র ব্লাজিওর ঘোষণার মধ্য দিয়ে আমেরিকার মুসলমানদেরও গর্বিত করা হয়েছে বলে লিন্ডা সারসোর তাঁর প্রতিক্রিয়ায় উল্লেখ করেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: