ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথম স্কটিশ হিসেবে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি

কোয়েটজারের চমক

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৬ মার্চ ২০১৫

কোয়েটজারের চমক

জিএম মোস্তফা ॥ ১৯৯৯ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো খেলার সুযোগ পায় স্কটল্যান্ড। গত ১৬ বছর ধরেই ক্রিকেটের এই বড় মঞ্চের অতিথি স্কটিশরা। কিন্তু দুর্ভাগ্য। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে জয়ের কোন অভিজ্ঞতা নেই তাদের। ছিল না কোন ব্যাটসম্যানের শতরানের ইনিংসও। তবে অতীত সব ইতিহাসকে পেছনে ফেলে নতুন ইতিহাস গড়লেন কাইল কোয়েটজার। স্কটল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরির মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। বৃহস্পতিবার নেলসনের, সেক্সটন ওভালে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম স্কটিশ ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি করলেন কাইল কোয়েটজার। এটি কোয়েটজারের দ্বিতীয় শতরানের ইনিংস। স্কটিশ একাদশে কোয়েটজারই একমাত্র ব্যাটসম্যান যার দুটি সেঞ্চুরি আছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৩৪ বলে ১৫৬ রানের ঝলমলে এক ইনিংস উপহার দেন কোয়েটজার। এর আগে ২০১৩ সালে ক্যারিয়ারের প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন তিনি। সেখানে তার প্রতিপক্ষ ছিল আফগানিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন অঙ্কের মাইলফলক স্পর্শ করেন ছক্কা মেরে। আর ম্যাচ শেষে এর পেছনের গল্পটার কথাও জানালেন তিনি। এ বিষয়ে ৩০ বছর বয়সী কোয়েটজার বলেন, ‘ম্যাচে অন্যপ্রান্তের ব্যাটসম্যানরা নিয়মিত বিরতিতেই আউট হয়ে যাচ্ছিল। যা আমার জন্য ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। মূলত এ কারণেই ছক্কা মেরে তিন অঙ্কের কোটা পূর্ণ করি।’ কোয়েটজারের ইনিংসটি সাজাতে ১৭টি চার ও ৪টি ছক্কা উপহার দেন। ক্রিজে অবস্থান করেছিলেন ১৯৮ মিনিট। বাংলাদেশের বিপক্ষে শুরুটা বেশ ভালভাবেই করেছিল স্কটল্যান্ড। কিন্তু তারপরও শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারায় হতাশ স্কটিশ অধিনায়ক প্রিস্টন মোমসেন। এর আগে জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচেও। কিন্তু নিজেদের অভিজ্ঞতার কারণে শেষ পর্যন্ত আফগানদের কাছেও পরাজয় মানতে বাধ্য হয় তারা। তবে এবার বাংলাদেশের বিপক্ষে হারার পর হতাশাটা যেন আরও বেড়ে গেল স্কটিশদের। এ বিষয়ে অধিনায়ক প্রিস্টন বলেন, ‘আমি খুবই হতাশ। বিশেষ করে আফগানদের কাছে আগেই ১ উইকেটে হারায়। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের প্রথমার্ধটা আমাদেরই ছিল। কিন্তু ভাল শুরু করেও শেষ পর্যন্ত আমি হতাশ। এর জন্য দলের সবাই দায়ী।’ বৃহস্পতিবার টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে স্কটল্যান্ড। আর কোয়েটজারের সেঞ্চুরির সৌজন্যেই ৩১৮ রান সংগ্রহ করে তারা। যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে স্কটিশদের সর্বোচ্চ রান। এর ফলে জয়ের স্বপ্নও বুনেছিল তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই আশায় গুড়েবালি। তবে স্কটল্যান্ডের অধিনায়ক প্রিস্টন মোমসেন অভিজ্ঞতাটাকেই দায়ী করেছেন। এ বিষয়ে ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের শত শত একদিনের ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেই তুলনায় আমাদের সংখ্যা অনেক কম। আর এ কারণেই তারা সহজেই তিন শ’ রানের বড় বাধাকে টপকাতে সক্ষম হয়েছে।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতাম যে আজ (বৃহস্পতিবার) প্রথম জয়ের বিশাল সুযোগ ছিল। কিন্তু পারিনি। এখন বিশ্বকাপের বাকি সময়টাতে কী ঘটবে তা নিশ্চিত করে বলাটা কঠিন। আমি মনে করি এখনও আমাদের অনেক কিছুরই শেখার প্রয়োজন। আলোচনার ভিত্তিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন। তবে সহযোগী ক্রিকেট দল হিসেবে মনে হয় না যে আমাদের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।’ একাদশতম বিশ্বকাপে ইতোমধ্যেই চারটি ম্যাচ খেলেছে স্কটল্যান্ড। তার সবটিতেই পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছে স্কটিশরা। এর ফলে ‘এ’ গ্রুপে সবার নিচে অবস্থান করছে স্কটল্যান্ড। তারপরও বিশ্বকাপে বাকি থাকা ম্যাচগুলো থেকে জয় নিয়ে দেশে ফিরতে মরিয়া প্রিস্টন মোমসেনের দল।
×