ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নির্ধারিত সময় পার হলেও অর্ধেকও শেষ হয়নি

সুনামগঞ্জে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে ধীরগতি

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ৬ মার্চ ২০১৫

সুনামগঞ্জে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে ধীরগতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ, ৫ মার্চ ॥ জেলায় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ চলছে ধীরগতিতে। নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও এখনও অর্ধেক কাজও সম্পন্ন হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীলরা অর্ধেক কাজ হয়েছে দাবি করলেও সরেজমিনে ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। এ পর্যন্ত ২৫-৩০ ভাগ কাজ হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানালেন, পিআইসি গঠনে বিলম্ব, বিল না পাওয়া ও অবকাঠামোগত নানা সমস্যার কথা। তবে কৃষকদের দাবি কাজে ধীর গতির পিছনে পওবোর দুর্নীতি ও মাঠ পর্যায়ে বাঁধ বাস্তবায়নকারী ও ঠিকাদারদের উদাসীনতা এবং বরাদ্দের টাকা কাজ না করে লুটপাটের মানসিকতা। কৃষকদের অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পিআইসির লোকজন প্রাকৃতিক দুর্যোগের অপেক্ষায় রয়েছেন। দুর্যোগে কাজের আলামত নষ্ট হয়ে গেলে পুরোকাজ বাস্তবায়িত হয়েছে এ দাবি করে বরাবরের মতো বরাদ্দের সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাত করবেন। বর্ষা এলে এ অসমাপ্ত কাজের বিলকে সমাপ্ত দেখিয়ে ‘জরুরী’ কাজেরও অনুমোদন এনে অতিরিক্ত বরাদ্দ নিয়ে এসে লুটপাটে মেতে ওঠে পাউবো। এবারও এ লুটপাটের মচ্ছবের অপেক্ষা করছে পাউবো। পাউবো সূত্র জানিয়েছে, এবার ৪২টি হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে ২৪৩টি পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) ১৫০০ কি.মি হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ করছে। পিআইসি ১৫ কোটি ব্যয়ে ১১০ কি.মি এবং ঠিকাদার ৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৩ কি.মি হাওর উন্নয়ন বাঁধের কাজ করছেন। জানা গেছে, পিআইসি ও ঠিকাদাররা সমানভাবেই বাঁধের কাজে বিলম্ব করে বরাদ্দ লোপাটের চেষ্টা করছে। নির্ধারিত সময় পার হওয়ায় পরও তারা অর্ধেকও কাজ করতে পারেনি। জানা গেছে, গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশনা থাকলেও এখনও ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ কাজ বাকি রয়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছেন, সময় বাড়ানোর জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে পত্র প্রেরণ করা হলেও এখনও সময় বাড়ানোর অনুমতি পাওয়া যায়নি। এদিকে নির্ধারিত সময়ে কাজ না হওয়ায় এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘনিয়ে আসায় হাওর এলাকার কৃষকরা ফসলহানির আশঙ্কা করছেন। জামালগঞ্জ উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা হাওর রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার ইউসুফ আল আজাদ বলেন, এখনও ২৫ ভাগ কাজ শেষ হয়নি। অথচ বলা হচ্ছে অর্ধেকেরও বেশি কাজ শেষ হয়েছে। কাজ শেষ না হওয়ায় কৃষকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বের্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাঈদ আহমদ বলেন, পিআইসির কাজ ৫০ ভাগ শেষ হয়েছে। ঠিকাদাররা ৬০ ভাগ কাজ শেষ করেছেন। দ্বিতীয় দফা বিল না পেলেও পিআইসির কিছু সচ্ছল সদস্য নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে বাঁধের কাজ করছেন বলে তিনি জানান। বাঁধের কাজে কোন অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
×