ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সোয়াইন ফ্লু নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্টাফ রিপোর্টার ॥ সোয়

প্রকাশিত: ০৮:৪৭, ৫ মার্চ ২০১৫

সোয়াইন ফ্লু নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী  স্টাফ রিপোর্টার ॥ সোয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সোয়াইন ফ্লু মোকাবেলায় বাংলাদেশ প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, ভারতের কয়েকটি রাজ্যে সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস সংক্রমণে বাংলাদেশে আতঙ্কের কিছু নেই। এখন পর্যন্ত কোন সোয়াইন ফ্লু রোগী শনাক্ত হয়নি। বিমানবন্দর, সমুদ্র ও স্থলবন্দরে থার্মাল স্ক্যানার মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে বিশেষ সার্ভিল্যান্স টিম কাজ করছে। সারাদেশে সতর্ক বার্তা পাঠানো হয়েছে। ওষুধ, ভ্যাকসিনসহ সব ধরনের মেডিক্যাল উপকরণ মজুদ রয়েছে। আর চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের এ বিষয়ে দেয়া হয়েছে প্রশিক্ষণ। বুধবার ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁও-এ ‘অভিবাসন ও স্বাস্থ্য’ বিষয়ক আঞ্চলিক পরামর্শ সভার উদ্বোধনকালে তিনি একথা বলেন। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইএমও), জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ), ইউএনএইডস এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্যসচিব সৈয়দ মন্জুরুল ইসলাম, প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার মোঃ ইফতেহার হায়দার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. এ পারানিথরন বক্তৃতা করেন। দুই দিনব্যাপী এই আঞ্চলিক সভায় বাংলাদেশ ছাড়াও থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নেপাল, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও ফিলিপিন্স থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তা এবং চিকিৎসকগণ অংশ নিচ্ছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, অনেক বছর ধরেই সোয়াইন ফ্লুর বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রেখেছে সরকার। দেশে সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন মৌসুমী ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা ঘটে। ভাইরাসসহ যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষেত্রে প্রতিবারই সফলতা দেখিয়ে আসছে বাংলাদেশ। আফ্রিকায় ব্যাপক আকারে সংক্রমিত ইবোলা ভাইরাস মোকাবেলার ক্ষেত্রে সফলতা এসেছে। দীর্ঘ বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের ফ্লু মোকাবেলা করে অভ্যস্ত হয়ে গেছি আমরা। তাই ফ্লু মোকাবেলায় বিশেষ সার্ভিলেন্স টিম অনেক বছর ধরেই অব্যাহত রয়েছে। এই পূর্বপ্রস্তুতির সঙ্গে বাড়াতে হবে জনসচেতনতা। প্রয়োজনীয় ওষুধ সংগ্রহ মজুদ রাখা হয়েছে। বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালসহ দেশের ৬৪ জেলা হাসপাতালে বিশেষ ইউনিট পৃথকভাবে খোলা হয়েছে। কোন ব্যক্তি সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ওই ইউনিটে প্রেরণ করে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ঢাকা বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে স্থাপিত সাতটি থার্মাল স্ক্যানার বিদেশ থেকে বিশেষ করে ভারত থেকে আগত যাত্রীদের জ্বর পরীক্ষার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। সব বন্দরে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সেখানে কর্তব্যরত মেডিক্যাল টিমগুলোকে সতর্ক থেকে এই সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। সকলকে ভালভাবে হাত ধোয়ার পরামর্শ দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সাবান দিয়ে হাত ধুলেই সোয়াইন ফ্লু’র জীবাণু ধ্বংস হয়ে যায়। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অভিবাসীদের অবদানের কথা তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য অভিবাসীদের সুস্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে সরকার তাঁদের স্বাস্থ্যমান উন্নতিতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। সৌদি আরবে শ্রমিক প্রেরণের সময় তাঁদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার উদ্যোগ নিবে। এক্ষেত্রে নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকার বিশেষ নজর দিবে। সংসদ রিপোর্টার জানান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বুধবার রাতে জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেছেন, সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত একজন রোগীকেও পাওয়া যায়নি। তাই সোয়াইন ফ্লু নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানো উচিত নয়। অহেতুক আতঙ্ক সৃষ্টি না করার জন্যও গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নাসিম বলেন, বর্তমান সরকার এই ভাইরাস নিয়ে সম্পূর্ণ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
×