অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশে তার চলমান ৫৮টি প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা শুরু করেছে। পর্যালোচনার ভিত্তিতে সংস্থাটি এ সব প্রকল্পের অগ্রগতি, বাস্তবায়নে সমস্যা এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অর্থায়নের বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেবে।
জানা যায়, কৃষি মন্ত্রণালয়ে গত মঙ্গলবার থেকে এই পর্যালোচনা সভা শুরু হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আনোয়ার ফারুক।
এডিবির বাংলাদেশ কার্যালয়ের মুখপাত্র গোবিন্দ বার জানিয়েছেন, এডিবির অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের পর্যালোচনা কার্যক্রম রবিবার থেকে শুরু হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহ এই পর্যালোচনা কার্যক্রম চলবে। এ সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে পৃথক পৃথক সভা হবে। বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি, বর্তমান অবস্থা, অগ্রগতির হার কমÑ এমন প্রকল্পগুলোর সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয় সভায় পর্যালোচনা করা হবে।
জানা গেছে, এডিবির অর্থায়নে বর্তমানে বাংলাদেশে ৫৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ সব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২৬ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে কৃষি খাতে এডিবির অর্থায়নে বাস্তবায়ন হচ্ছে ছয়টি প্রকল্প। এ সব প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫ কোটি ৯০ হাজার মার্কিন ডলার।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাস্তবায়নসাপেক্ষ নদীভাঙ্গন প্রতিরোধ ও কৃষি সেচ- এ দুটি প্রকল্প মোটামুটি শুরু করার পর্যায়ে রয়েছে। এ দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ও যৌথভাবে কাজ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে। নদীভাঙ্গন রোধে গৃহীত প্রকল্পে সাড়ে ৬ কোটি ডলার এবং কৃষি সেচ প্রকল্পে ৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার ঋণ সহজ শর্তে দিচ্ছে এডিবি।
উল্লেখ্য, এডিবি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ এ সংস্থার সদস্যপদ লাভ করার পর থেকে এ পর্যন্ত এডিবি বাংলাদেশকে এক হাজার ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি ঋণ সহায়তা দিয়েছে। ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে এডিবি প্রধানত বিদ্যুত, জ্বালানি, স্থানীয় সরকার, পরিবহন, শিক্ষা, কৃষি, পানিসম্পদ ও সুশাসন খাতকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে। এছাড়া চার বছর (২০১২-২০১৫) মেয়াদে ছয়টি খাতে ৩৬১ কোটি ৪০ লাখ ডলার ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এডিবি। এর মধ্যে রয়েছে কৃষি ও প্রাকৃতিক সম্পদ খাতে ২৩ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, শিক্ষা খাতে ৩৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার, জ্বালানি খাতে মোট ৯১ কোটি ৬০ লাখ ডলার, আর্থিক খাতে ২৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ও পরিবহন খাতে ৯৯ কোটি মার্কিন ডলার। এ ছাড়া শহর উন্নয়ন খাতেও ৮৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার ঋণ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংস্থাটি।