ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ত্রিদেশীয় সিরিজের সমালোচনায় রবি শাস্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ৫ মার্চ ২০১৫

ত্রিদেশীয় সিরিজের সমালোচনায় রবি শাস্ত্রী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপের ঠিক আগেই কার্লটন মিড-ত্রিদেশীয় সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং ভারত। এই সিরিজের আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও ভরাডুবি হয়েছিল কোহলি-ধোনিদের। মোট কথা বিশ্বকাপের আগে তিন মাস কোন জয়ের দেখা পায়নি মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। আর তাই ক্রুদ্ধ ভারতের টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, ত্রিদেশীয় সিরিজের পর দলটা মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল। ছেলেদের রিচার্জ হয়ে ফুরফুরে মেজাজে বিশ্বকাপে নামার জন্য ক্রিকেট থেকে বিশ্রামের প্রয়োজন ছিল। তাই আমি মনে করি ত্রিদেশীয় সিরিজে খেলাটা সময় এবং শক্তি নষ্ট করা ছাড়া আর কিছুই ছিল না।’ অস্ট্রেলিয়া সফরে পুরোপুরিই ব্যর্থ ছিল ভারত। আর সেই ব্যর্থতা থেকে বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু করে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত। এরপর দীর্ঘ ২৩ বছর পর প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকাকেও বিশ্বকাপের মঞ্চে পরাজয়ের স্বাদ উপহার দেয় তারা। আরব আমিরাতের বিপক্ষেও বড় জয় পায় মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। সেই সঙ্গে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষস্থানটাও দখল করে রেখেছে ধোনি-কোহলিরা। আর বিশ্বকাপে দলের পারফর্মেন্সে তৃপ্ত শাস্ত্রী, ‘দলের সকল খেলোয়াড়ের ওপরই আমার ভরসা ছিল। আর সেটাই হচ্ছে। আমার মতে সবকিছু সঠিকভাবেই এগোচ্ছে।’ ভারত সবসময়ই ব্যাটিংনির্ভর দল। এই গল্পটা অনেকেরই জানা। তবে একাদশতম বিশ্বকাপে চমকের নাম ভারতের বোলিং। ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে ভারতীয় বোলাররাও অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছেন। ব্যাটিং-বোলিংয়ের সঙ্গে ফিল্ডিংয়েও নজর কুড়িয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। ফিটনেসের দিক দিয়ে বিশ্ব-ক্রিকেটে এই মুহূর্তে সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে ভারত। এ বিষয়ে ৫২ বছর বয়সী রবি শাস্ত্রী বলেন, ‘আমি পেছনে ফিরে তাকাতে ভালবাসি না। আবার অদূর ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতেও আগ্রহী নই। তবে এটুকু জোর গলায় বলতে পারি যে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মাপকাঠিতে এই দলটায় কয়েকজন অসাধারণ ফিল্ডার রয়েছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে এটাই আমার দেখা সেরা ভারতীয় ফিল্ডিং ইউনিট।’ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে দ্যুতি ছড়িয়েছেন বিরাট কোহলি। চার টেস্টে চার সেঞ্চুরির সৌজন্যে সর্বোচ্চ ৬৯২ রান করেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরির দেখা পান বিরাট কোহলি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটাই ছিল প্রথম কোন ভারতীয় ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরি। আর বিরাট কোহলির ব্যাটিংয়েও মুগ্ধ শাস্ত্রী। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কোহলিকেই সেরা ভারতীয় পারফর্মার হিসেবে দেখছেন তিনি, ‘যতদূর মনে পড়ে, অস্ট্র্রেলিয়ার মাটিতে বিরাটের মতো ব্যাটিং করতে আমি আর কোন ভারতীয়কে দেখিনি। শচীন টেন্ডুলকার এবং ভি ভি এস লক্ষ্মণকে মাথায় রেখেই এ কথা বলছি। আমাকে এমন একজন ভারতীয় ব্যাটসম্যান দেখান যিনি চার টেস্ট সিরিজে চারটিতেই সেঞ্চুরি করেছে। সত্যি কথা বলতে কোহলি অসাধারণ। টেস্ট সিরিজে ও দাপট দেখিয়েছিল বলেই আমরা অস্ট্র্রেলিয়া শিবিরে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পেরেছিলাম। এই প্রত্যাশা যে কোন ক্রিকেটারকে চাপে ফেলে দেবে। আমাদের উচিত ওকে ওর নিজের মতো ক্রিকেট খেলতে দেয়া।’ সম্প্রতি ভারতের সাজঘরে ধোনি-কোহলির সম্পর্ক নিয়ে নানান গুঞ্জন শোনা গেছে। তাতে মনোযোগ না দিয়ে বরং মাঠের বাইরে ফেলে দিতে বললেন টিম ডিরেক্টর, ‘যদি কেউ এ ধরনের আজগুবি বিষয় নিয়ে নিজের সময় নষ্ট করবে মনে করে তাহলে করতে পারে। আমি বা দলের কেউই এই গুজব নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তিত নই। ধোনি এই ভারতীয় দলের নেতা সে-বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। গত ৮ বছর ধরে এই দলটাকে চালাচ্ছে সে। সবসময়ই সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয় দলকে। প্রকৃতপক্ষে সীমিত ওভারে ধোনি অসাধারণ ক্রিকেটার। দেশকে অসংখ্য ম্যাচে জয় এনে দিয়েছে সে। যা সাজঘরে বাকিদের অনুপ্রেরণা যোগায়। একজন যোগ্য নেতা হিসেবেই ও সতীর্থদের থেকে সম্মান পেয়ে থাকে।’
×