ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সহিংসতা ছাড়ুন

প্রকাশিত: ০৯:২১, ৪ মার্চ ২০১৫

সহিংসতা ছাড়ুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাটসহ বিভিন্ন দেশের বেশ ক’জন রাষ্ট্রদূত। বৈঠকে আন্দোলনে সহিংসতা পরিহার করতে খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কূটনীতিকরা। আর খালেদা জিয়া চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে সংলাপের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন বলে জানা যায়। উল্লেখ্য, বিএনপি জোটের হরতালের মধ্যে গাড়ি নিয়েই খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে যান বিদেশী রাষ্ট্রদূতরা। বৈঠক শেষে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার গ্রেগ উইলকক সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার স্থিতিশীলতা দরকার। একই সঙ্গে মানুষের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা, গণতন্ত্র, প্রবৃদ্ধি, মানবাধিকার ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য চলমান আন্দোলনে সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া আমরা বিরোধী দলগুলোকে মত প্রকাশের স্বাধীনতার সুযোগ দেয়ারও পক্ষে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাংলাদেশকে সহযোগিতারও আশ্বাস দেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোকে একে অপরের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে হবে। বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ করতেই আমরা এ বৈঠকে অংশ নিয়েছি। ১ মার্চ আমরা চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলাম। বৈঠকের বিষয় নিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। আমরা দুই পক্ষকেই পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থা স্থাপন করে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নিরসন করতে বলেছি। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে এ বৈঠকের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই বলা হয়নি। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা ও চলমান টানা অবরোধ-হরতাল কর্মসূচীসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতেই কূটনীতিকরা এ বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। বৈঠকে বার্নিকাট ছাড়াও ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূত পিয়েরে মায়াদন, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত হুসেইন মুফতুগলু, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, সুইডেন, স্পেন, ফ্রান্স, ও জাপানের রাষ্ট্রদূতরা অংশ নেন। অন্যদের সঙ্গে আগে দেখা হলেও ঢাকায় দায়িত্ব নিয়ে আসার পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটের সঙ্গে খালেদা জিয়ার এটাই প্রথম সাক্ষাত। খালেদার সঙ্গে দেখা করার আগে এই কূটনীতিকরা গুলশানে অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশনে সমবেত হন। বার্নিকাট পতাকাবাহী গাড়িতে করেই ওই হাইকমিশনের যান। পরে তারা একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে গুলশানের ৮৬ নম্বর সড়কে বিএনপির চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে যান। সাদা মাইক্রোবাসটির সামনে-পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের পুলিশ প্রোটেকশনের দুটি গাড়ি ছিল। ৬টা ৩৫ মিনিটে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। এ সময় কার্যালয়ের ফটকে তাদের স্বাগত জানান খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী এ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। এরপর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান তাদের খালেদা জিয়ার কাছে নিয়ে যান। উল্লেখ্য, খালেদা জিয়া বাসা ছেড়ে গুলশান কার্যালয়ে আসার পর এর আগে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্য ও তুরস্কের রাষ্ট্রদূত এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একটি প্রতিনিধি তার সঙ্গে সাক্ষাত করেন। রাত সাড়ে ৮টায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক শেষে গুলশান কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান বিদেশী কূটনীতিকরা। ২৫ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর থেকেই খালেদা জিয়ার গ্রেফতারের বিষয়টি আলোচনায় আসে। সরকারের তরফ থেকেও তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠে। এ পরিস্থিতিতে বিদেশী কূটনীতিকরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
×