ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এ্যাবটের ক্যারিয়ারসেরা বোলিং ;###;২১ রানে পরাজিত আয়ারল্যান্ড

বিশাল জয়ে আইরিশদের থামাল প্রোটিয়ারা

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৪ মার্চ ২০১৫

বিশাল জয়ে আইরিশদের থামাল প্রোটিয়ারা

মোঃ মামুন রশীদ ॥ আরেকটি বিশাল জয় তুলে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা। চলতি বিশ্বকাপের শুরুটা ভাল না হলেও টানা দুটি বড় জয়ে নিজেদের ফিরে পেল প্রোটিয়া শিবির। মঙ্গলবার ক্যানবেরার মানুকা ওভালে বিশ্বকাপের একমাত্র ম্যাচে ‘বি’ গ্রুপের খেলায় দুর্বলতর আয়ারল্যান্ডকে ২০১ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ব্যাট করে ওপেনার হাশিম আমলার ১৫৯ ও ফাফ ডু প্লেসিসের ১০৯ রানের সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ৪১১ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। এটি ছিল বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংস। তবে বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। ২০০৭ বিশ্বকাপে বারমুডার বিরুদ্ধে ৫ উইকেটে ৪১৩ রান করে বিশ্বকাপের সেরা দলীয় সংগ্রহ এখনও ভারতের দখলে। জবাব দিতে নেমে কাইল এ্যাবট ও মরনে মরকেলের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ৪৫ ওভারে ২১০ রানেই গুটিয়ে যায় আয়ারল্যান্ড। এ্যান্ডি বালবিরনি সর্বোচ্চ ৫৮ রান করেন। এ্যাবট ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করে ২১ রানে চারটি আর মরকেল ৩৪ রানে তিনটি উইকেট শিকার করেন। চার ম্যাচে তিন জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ‘বি’ গ্রুপে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে আর প্রথম হার দেখল আয়ারল্যান্ড। তিন ম্যাচে দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে আইরিশদের অবস্থান চারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিশ্বকাপ ইতিহাসে ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ব্যবধানে (২৫৭ রান) জয় তুলে নেয় তারা। সে কারণে উজ্জীবিতই ছিল প্রোটিয়া শিবির। ক্যানবেরায় আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে আরেকটি পরীক্ষা। আইরিশরা এবার বিশ্বকাপের তৃতীয় দিনেই সবচেয়ে বড় অঘটন ঘটিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দিয়ে। আরব আমিরাতের বিরুদ্ধেও জয় তুলে নিয়ে দারুণ আত্মবিশ্বাসী আইরিশরা। টস জিতে যাওয়ার পর ব্যাটিং তুলে নেয় প্রোটিয়ারা। তবে ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই ওপেনার কুইন্টন ডি কককে (১) হারিয়ে বসে। কিন্তু এরপর আর ভুল করেননি আমলা ও প্লেসিস। এ দু’জন দ্বিতীয় উইকেটে ২৪৭ রানের রেকর্ড জুটি গড়ে তোলেন এ দু’জন। বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে দ্বিতীয় উইকেটে এর আগে সেরা জুটি ছিল ভিলিয়ার্স ও জ্যাক ক্যালিসের। ২০০৭ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ১৭০ রানের জুটি গড়েছিলেন তাঁরা। আমলা ও প্লেসিস দু’জনই শতক আদায় করে নেন। আগের দুই ম্যাচেও ফিফটি হাঁকানো প্লেসিস আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। এবার সেটিকে তিনি শতকে পরিণত করলেন। প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে আসা প্লেসিসের এটি ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি। তিনি ১০৯ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ১০৯ রান করে বিদায় নেন। তবে আমলা তখনও থামেননি। প্রথম দুই ম্যাচে ১১ ও ২২ রান করা আমলা ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে ৬৫ রানের ইনিংস খেলে রানে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সেটাকে সত্য করে তিনি এবার ক্যারিয়ারের ২০তম শতক আদায় করে নেন। আমলার শতরান পাওয়ার পেছনে ভূমিকা আছে এড জয়েসের। ব্যক্তিগত ১০ রানের মাথায় কেভিন ও’ব্রায়েনের বলে ক্যাচ তুলে দিলেও তা ধরতে ব্যর্থ হন জয়েস। এরপর আর সুযোগ দেননি আমলা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২০তম শতক পাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি এখন সবচেয়ে দ্রুততম। ১১১ ওয়ানডেতে ১০৮ ইনিংস খেলেই ২০ শতক পেয়েছেন ৩১ বছর বয়সী আমলা। আগের রেকর্ডটি ছিল ভারতের বিরাট কোহলির। তিনি ১৩৩ ইনিংস খেলেছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ওয়ানডেতে সর্বাধিক ২১ শতক হাঁকানো হার্শেল গিবসের কাছাকাছি উঠে এসেছেন তিনি, আর ছুঁয়ে ফেলেছেন সতীর্থ ভিলিয়ার্সকে (উভয়ের ২০ সেঞ্চুরি)। শেষ পর্যন্ত ১২৮ বলে ১৬ চার ও ৪ ছক্কায় ক্যারিয়ারসেরা ১৫৯ রান করে বিদায় নেন তিনি। এদিন ভিলিয়ার্স (২৪) ব্যর্থ হলেও ডেভিড মিলারের ২৩ বলে ৪৬ ও রিলি রোসাউ ৩০ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৬১ রানের দুটি অপরাজিত ইনিংস খেলেন। ফলে ৪ উইকেটে ৪১১ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এটি বিশ্বকাপে তাদের সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংস। আগের ম্যাচেই ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে ৪০৮ রান তুলেছিল ৫ উইকেটে। বিশাল সংগ্রহ তাড়া করতে নেমে আইরিশরা মাত্র ৪৮ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে। তিন পেসার ডেল স্টেইন, এ্যাবট ও মরকেলের গতির তোড়ে বিধ্বস্ত আইরিশদের হয়ে হাল ধরেন বালবিরনি ও কেভিন। ষষ্ঠ উইকেটে ৮১ রানের জুটি গড়েন তাঁরা। তবে বালবিরনি ৫৮ ও কেভিন ৪৮ রানে ফিরে যাওয়ার পর আর কেউ বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ৫ ওভার বাকি থাকতেই ২১০ রানে গুটিয়ে যায় তারা। ২০১ রানের জয় তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপে এ নিয়ে মোট ৫ বার দুই শতাধিক রানের ব্যবধানে জয় পেল প্রোটিয়ারা। অন্য যে কোন দলের মধ্যে এটিই সর্বাধিক। এ্যাবট ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করে ২১ রানে ৪ উইকেট দখল করেন।
×