ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নাটকীয় আত্মসমর্পণ

বরিশালে সন্ত্রাসী নান্নু বাহিনীর অস্ত্রভাণ্ডার অক্ষত

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ৩ মার্চ ২০১৫

বরিশালে সন্ত্রাসী নান্নু বাহিনীর অস্ত্রভাণ্ডার অক্ষত

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ তেরো গ্রামের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লক্ষাধিক নিরীহ জনসাধারণ দীর্ঘদিন থেকে জিম্মি হয়ে পড়া চিহ্নিত সন্ত্রাসী নান্নু বাহিনীর প্রধান নান্নু মৃধাকে সম্প্রতি গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার বিকেলে ওই বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডসহ দু’আসামি বরিশালের একটি আদালতে নাটকীয়ভাবে আত্মসমর্পণ করার পর তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হলেও সন্ত্রাসী বাহিনীর অস্ত্রভা-ার রয়ে গেছে অক্ষত। এলাকাবাসী আসামিদের রিমান্ডে এনে সন্ত্রাসী বাহিনীর অস্ত্র উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। গৌরনদী থানার এস আই নজরুল ইসলাম জানান, নন্দনপট্টি গ্রামের আলোচিত খাদেম সরদার হত্যা মামলার প্রধান আসামি, দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক সম্রাট নান্নু মৃধা হত্যা মামলা দায়েরের পর থেকে আত্মগোপনে ছিল। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে নান্নুকে পার্শ্ববর্তী কালকিনি থানার করিমগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। জানা গেছে, সন্ত্রাসী নান্নু বাহিনীর বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করায় ২০১৪ সালের ১৩ অক্টোবর রাত আটটার দিকে খাদেম সরদার (৬০) ও তার ছোট পুত্র আসলাম সরদারকে (২৫) সন্ত্রাসী নান্নু মৃধা ও তার সহযোগীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এতে ঘটনাস্থলেই খাদেম সরদার নিহত ও তার পুত্ররা গুওুতর আহত হয়। সরেজমিনে বার্থী ইউনিয়নের মাদকের স্বর্গরাজ্য বলে খ্যাত রাজাপুর, নন্দনপট্টি, বেজগাতি, উত্তর ধানডোবা, গোরক্ষডোবা, দক্ষিণ ধানডোবা, উত্তর মাদ্রা, বাঙ্গিলা, দক্ষিণ মাদ্রা, ধুরিয়াইল, সাজুরিয়া, চেঙ্গুটিয়া ও রামসিদ্ধি গ্রামঘুরে ভুক্তভোগী গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সন্ত্রাসী নান্নু বাহিনীর ভয়ঙ্কর সব অজানা কাহিনী। নন্দনপট্টি গ্রামের মৃত সফিউদ্দিন মৃধার বড়পুত্র পান্নু মৃধা ১৯৯৬ সালে বার্থী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তার সহদর নান্নু মৃধা ও সেন্টু মৃধা। ফলে খুব সহজেই গৌরনদীর শীর্ষ সন্ত্রাসী বার্থীর হাবুল প্যাদার সন্ত্রাসী গ্রুপের সেকেন্ড ইন কমান্ডের দায়িত্ব পান নান্নু মৃধা। বিগত ওয়ান ইলেভেনের সময় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে হাবুল প্যাদা নিহত হওয়ার পর তার অস্ত্রভা-ার নান্নুর কাছেই অক্ষত থেকে যায়। পরবর্তীতে নান্নু তার নিজ নামে ‘নান্নু বাহিনী’ নামের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে। ওই বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডের দায়িত্ব পালন করে নান্নুর সহদর সেন্টু মৃধা ও কটকস্থল গ্রামের হারুন সিকদারের পুত্র আল-মাদানী সিকদার। এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে ২০১১ সালে নান্নু মৃধা নিজের সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রভাবে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। এরপর আর থেমে থাকতে হয়নি তাকে ও তার বাহিনীর সদস্যদের। বরিশাল জেলার উত্তর জনপদে মাদক সরবরাহের একক আধিপত্য বিস্তার করে নান্নু বাহিনী।
×