ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোহামেডানকে হারিয়ে ফাইনালে মুক্তিযোদ্ধা

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ৩ মার্চ ২০১৫

মোহামেডানকে হারিয়ে ফাইনালে মুক্তিযোদ্ধা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলায় অবশেষে জয়ের হাসি হাসলো সাদা-কালো শিবিরই/নব্বই দশকের ‘ড্রিম টিম’ বা ‘অল রেডস্’রাই। সোমবার ফেডারেশন কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মোহামেডানকে টাইব্রেকারে (সাডেন ডেথে) ৪-৩ (১-১) গোলে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে যায় ঢাকা বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। কোয়ার্টারে ঢাকা আবাহনীকেও হারানোর কৃতিত্ব দেখিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা। এ জয়ে মুক্তিযোদ্ধা আগামী ৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে (বিকেল সোয়া ৫টায়) শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডের মোকাবেলা করবে। টাইব্রেকারে প্রথম ৫ শটে উভয় দলই করে ৩টি করে গোল। মোহামেডানের পক্ষে গোল করেন মোবারক, অরূপ ও জনি। মিস করেন ফয়সাল ও সবুজ। ফয়সালের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। সবুজের শট ফিরিয়ে দেন মুক্তির গোলরক্ষক তিতুমীর চৌধুরী টিটু। পক্ষান্তরে মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে গোল করেন এনামুল, আশরাফুল ও শাহেদ। মিস করেন কামারা ও ফেকরি। কামারার শট মোহামেডানের গোলরক্ষক মোহাম্মদ নেহাল প্রতিহত করেন। আর ফেকরির শট পোস্টে লেগে মিস হয়। এরপর শুরু হয় টাইব্রেকারের দ্বিতীয় পর্ব- ‘সাডেন ডেথ’। এই পর্বে মোহামেডান ২টি শট নিয়ে দুটিই মিস করে। আর মুক্তিযোদ্ধা সমান শট নিয়ে একটি গোল করে। ফলে সার্বিকভাবে মুক্তিযোদ্ধা জয়ী হয় ৪-৩ গোলে। মোহামেডানের শট দুটি মিস করেন গিনির ডিফেন্ডার মানসা সিলিয়া এবং মিডফিল্ডার হাবিবুর রহমান সোহাগ। দুটি শটই দক্ষতার সঙ্গে ফিরিয়ে দেন তিতুমীর। আর সাডেন ডেথে মুক্তির প্রথম শটটি বদলী ফরোয়ার্ড আনোয়ার হোসেন। তার শট আটকে দেন নেহাল। কিন্তু ডিফেন্ডার আনিসুল আলম সুইট গোল করতে ব্যর্থ হননি। তার শটটি গোলে পরিণত হলে উল্লাসে ফেটে পড়ে মুক্তি শিবির। আর হারের বেদনায় ভেঙ্গে পড়ে সাদা-কালো শিবির। মজার ব্যাপার হচ্ছেÑ এবারের ফাইনালের লাইনআপ মিলে গেছে গত আসরের ফাইনালের লাইনআপের মতো! গত আসরের ফাইানালে শেখ জামাল ১-০ গোলে পরাভূত করেছিল মুক্তিকে। সোমবার ম্যাচের ১৮ মিনিটে মোহামেডানের মিডফিল্ডার বিপলু আহমেদের শট মুক্তির বারে লেগে ফেরত আসে। ৩৩ মিনিটে মুক্তিযোদ্ধার গিনির ফরোয়ার্ড কামারা সারবাকে ফাউল করেন মোহামেডানের গোলরক্ষক মোহাম্মদ নেহালকে। রেফারি আজাদ রহমান পেনাল্টির নির্দেশ দেন। মুক্তিযোদ্ধার অধিনায়ক-ফরোয়ার্ড এনামুল হক গোল করেন (১-০)। ৫০ মিনিটে মিডফিল্ডার আবু সাঈদ জুয়েলের ক্রসে তৌহিদুল আলম সবুজ পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হলে গোলবঞ্চিত হয় মোহামেডান। ৬১ মিনিটে মুক্তিযোদ্ধার এক ডিফেন্ডার হেড দিয়ে বল বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হলে মোহামেডানের গিনির ফরোয়ার্ড ইসমাইল বাঙ্গুরা আগুয়ান গোলরক্ষককে একা পেয়ে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে তীব্র শটে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান (১-১)। এ আসরে আগে ১০ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়া মোহামেডান ‘ডি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শেষ আটে নাম লেখায়। তাদের সংগ্রহ ছিল ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট। গ্রুপ ম্যাচে তারা ২-১ গোলে হারায় রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিকে। পরের ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করে ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেডের সঙ্গে। কোয়ার্টারে ২-১ গোলে পরাভূত করে ফেনী সকার ক্লাবকে। পক্ষান্তরে ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ হয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। তারা ২ খেলায় ৪ পয়েন্ট নিয়ে শেষ আটে উন্নীত হয়। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে তারা ৪-০ গোলে উত্তর বারিধারাকে হারালেও পরের ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের সঙ্গে। কোয়ার্টারে মুক্তিযোদ্ধা ১-০ গোলে হারায় অপর ফেবারিট ঢাকা আবাহনী লিমিটেডকে। ফেডারেশন কাপের ২৭তম আসরে মুক্তিযোদ্ধা ৭ বার ফাইনাল খেলেছে। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ৩ বার রানার্সআপ হয়েছে ৪ বার। তারাই এ আসরের সর্বশেষ রানার্সআপ (২০১৩ আসরে শেখ জামাল ধানমণ্ডির কাছে হেরে)। পক্ষান্তরে ১৪ বার ফাইনাল খেলেছে দেশের ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব মোহামেডান। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ১০ বার। আর রানার্সআপ হয়েছে ৪ বার। এখন দেখার বিষয়, ফাইনালে ফেবারিট শেখ জামাল ধানমণ্ডিকে হারিয়ে গত আসরের ফাইনালে হারের বদলা নিতে পারে কি না মুক্তিযোদ্ধা।
×