মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ বান্দরবানের থানচি এলাকার ৩ হাজার ৪৫১ ফুট উচ্চতার মোদক টং দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এর আগে বান্দরবানের কেওক্র্যাডং কিংবা তাজিংডং সর্বত্র পর্বতশৃঙ্গ হিসেবে স্থান করে নিয়েছিল। সম্প্রতি প্রকাশিত ৩০ মিটার সূক্ষ্মতা শাটল রাডার টপোগ্রাফি উপাত্ত থেকে এ প্রমাণ মিলেছে। প্রায় পনেরো বছর আগে গবেষণা রিপোর্ট গত জানুয়ারি মাসে প্রকাশ করেছে আমেরিকার মহাকাশ সংস্থা নাসা ও ভূতত্ত্ব বিষয়ক সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে জাপান ও জার্মানি। এর রিপোর্ট প্রকাশিত হবার পর এ নিয়ে গবেষণা করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভূতথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সাইদুর রহমান চৌধুরী।
আমেরিকার মহাকাশ সংস্থা নাসা ও ভূতথ্য বিষযক সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে জাপান ও জার্মানির সঙ্গে যৌথভাবে গত ২০০০ সালে এনডেভার নামের স্পেস শাটলের সঙ্গে বিশেষভাবে নির্মিত একটি রাডার যন্ত্রের মাধ্যমে পৃথিবীর অধিকাংশ ভূ-ভাগের উচ্চতা জরিপ কাজ চলে। এ জরিপের নাম ছিল শাটল রাডার টপোগ্রাফি মিশন (এসআরপিএম)। বর্তমান সময় পর্যন্ত এ মিশনের ডাটাকেই বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ডিজিটাল উচ্চতার মডেল হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশ তুলনামূলকভাবে কম পাহাড়ী দেশ বিধায় এ নিয়ে বিশ্লেষণে কলোরাডো নিয়মানুযায়ী ৩শ’ ফুটকে শৃঙ্গ বিবেচনার মাত্রা হিসেবে ধরে বাংলাদেশে মোট ৭৫টি পর্বতশৃঙ্গ চিহ্নিত করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও জিওইনফরমেটিক্স বিশেষজ্ঞ সাইদুর রহমান চৌধুরী। এসব শৃঙ্গের উচ্চতা প্রমিন্যান্স ও ক্রমানুসার নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোমবার জনকণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে অধ্যাপক সাইদুর রহমান জানান, এ্যালান ডওসন এর কঠোরতম নিয়ম প্রয়োগ করলে দেশে মোট ৪৪টি পর্বতশৃঙ্গ পাওয়া যায়। প্রখ্যাত পর্বত বিশারদ স্টিভেন ফ্রাই-এর ১৯৭৭ সালের নিয়মে ১৫শ’ ফুট উচ্চতা ও ২৫০ ফুট প্রমিন্যান্স থাকলে তাকে মাইনর বা ছোট পর্বত বলা যায়। এ নিয়মে বাংলাদেশে কতটি শৃঙ্গ আছে তা হিসাব না করলেও তা যে কয়েক শ’ ছাড়িয়ে যাবে তা নিশ্চিত।
ইতোমধ্যে এ গবেষণার ফলাফল ৭৫ পর্বতশৃঙ্গের পূর্ণাঙ্গ তালিকা মানচিত্র আকারে প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের পর্বতশৃঙ্গের সংখ্যা কলোরাডো পদ্ধতিতে ৭৫ আর এ্যালান ডওসন পদ্ধতিতে ৪৪। দেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মোদক টং, উচ্চতা ৩ হাজার ৪৫১ ফুট। কেওক্রাডাংয়ের উচ্চতা ৩ হাজার ২০৫ ফুট, তাজিনডংয়ের ২ হাজার ৭৯২ ফুট, টেমোম্যাসিফ এর উচ্চতা ২ হাজার ৯৫৩ ফুট উচ্চতা হিসেবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে ডুমলং (৩ হাজার ৩০৪ ফুট) ও জাওতœ্যাং (৩ হাজার ২৭১ ফুট)। আর প্রমিন্যান্স ও স্কোর উভয় হিসেবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় টেমোমেসিফ (২ হাজার ৩৬৯ ফুট) ও থেংনাং (১ হাজার ৮৭৭ ফুট)। উল্লেখ্য, ২০০০ ফুটের অধিক উচ্চতার পর্বত দেশে রয়েছে মোট ৭৫টি। এর মধ্যে দুটি খাগড়াছড়িতে ও অবশিষ্ট ৭৩টি বান্দরবানেই অবস্থিত।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: