ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফেডারেশন কাপ ফুটবল

রাসেলকে হারিয়ে ফাইনালে শেখ জামাল

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২ মার্চ ২০১৫

রাসেলকে হারিয়ে ফাইনালে শেখ জামাল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আফসোস করতেই পারে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেড। পুরো ম্যাচে ভাল খেলে এবং এক গোলে এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচের পরাজিত দল তারাই! দুই দলের মধ্যে ধুন্ধুমার দ্বৈরথে জয়ের শেষ হাসি হাসল শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডই। রবিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফেডারেশন কাপ ফুটবলের প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচে এই দুই শিরোপা প্রত্যাশী ফুটবল ক্লাবের মধ্যে জয়ী হয় জামালই। তারা জেতে ২-১ গোলে। ২০১৩ আসরের চ্যাম্পিয়ন জামালের পক্ষে গোল করেন নাসির উদ্দিন চৌধুরী এবং এমেকা ডার্লিংটন। আর ২০১২ আসরের শিরোপাধারী রাসেলের পক্ষে গোল করেন জাহিদ হাসান এমিলি। এ জয়ে ফাইনালে নাম লেখাল কোচ মারুফুল হকের দল জামাল। আগামী ৫ মার্চ ফাইনালে তারা মোকাবেলা করবে দ্বিতীয় সেমির (মোহামেডান বনাম মুক্তিযোদ্ধা) জয়ী দলের বিরুদ্ধে। মজার বিষয়Ñ সেমির আগ পর্যন্ত রাসেল কোন গোল হজম করেনি। অথচ সেমির ম্যাচে ২ গোল খেয়ে টুর্নামেন্ট থেকেই বিদায় নিতে হলো তাদের! পক্ষান্তরে জামাল আবারও প্রমাণ করল, অন্য দলের চেয়ে তাদেরই ম্যাচ টেম্পারমেন্ট অনেক বেশি। কোয়ার্টারের ম্যাচেও তারা এভাবেই হারিয়েছিল ব্রাদার্সকে। সে ম্যাচে ১-২ গোলে পিছিয়ে থেকেও জামাল খেলার ৮২ মিনিটে গোল করে সমতা আনে। পরে খেলা অতিরিক্ত সময় ও টাইব্রেকারে গড়ায়। সেখানেও জেতে জামাল। রবিবারের সেমির প্রথম ম্যাচে ৩৯ মিনিটে রাসেলের নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড কিংসলে চিগোজিকে নিজেদের বক্সে ফাউল করেন জামালের ডিফেন্ডার ইয়ামিন মুন্না। রেফারি তৈয়ব পেনাল্টির নির্দেশ দেন। ফরোয়ার্ড জাহিদ হাসান এমিলি গোল করতে ব্যর্থ হননি (১-০)। প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে প্রায় মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে জামালের বক্সে ঢুকে তীব্র শট নেন কিংসলে চিগোজি। কিন্তু তার শট ডান পোস্টে লেগে মাঠের বাইরে চলে যায়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে জামালের বক্সে বল নিয়ে ঢুকে পড়েন কিংসলে। তিনি শট নিতে গেলে আগুয়ান গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল বক্স ছেড়ে বাইরে এসে বল ধরেন। এর ফলে রাসেলের মন্টেনিগ্রার কোচ ড্রাগান ডুকানোভিচ লাল কার্ড আশা করেছিলেন। কিন্তু রেফারি জামালের গোলরক্ষককে হলুদ কার্ড দেখালে তা মানতে পারেনি রাসেলের খেলোয়াড়রা। তারা মাঠ ছেড়ে চলে যেতে উদ্যত হন। এতে খেলা বন্ধ থাকে প্রায় ৫ মিনিট। পরে ক্লাব কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে আবারও মাঠে নামে রাসেলের প্লেয়াররা। ৬২ মিনিটে বল নিয়ে রাসেলের বক্সে ঢুকে ৪ ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে চমৎকার শটে গোল করেন দলীয় অধিনায়ক-ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন চৌধুরী (১-১)। যখনই মনে হচ্ছিল খেলা অতিরিক্ত সময়ে বা টাইব্রেকারে গড়াবে, তখনই ৮৯ মিনিটে গোল করে বসে জামাল! বাঁ প্রান্ত থেকে ওয়েডসনের উঁচু ক্রসে চমৎকার হেডে বল জালে পাঠান জামালের এমেকা ডার্লিংটন (২-১)। রাসেলের গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদ লিটনের চেয়ে দেখা ছাড়া করার কিছুই ছিল না। খেলা শেষ হলে রেফারিকে ঘিরে ধরে নাজেহাল করতে যান রাসেলের খেলোয়াড়রা। এ সময় পুলিশ হস্তক্ষেপ করলে এ যাত্রায় রক্ষা পান তৈয়ব হাসান। ফেডারেশন কাপের ইতিহাসে এ নিয়ে টানা ৫ বার ফাইনাল খেলার রেকর্ড গড়ল শেখ জামাল। এর আগে ২০১০, ১১, ১২ ও ১৩ সালে ফাইনাল খেলে তারা। চ্যাম্পিয়ন হয় ২০১১ ও ১৩ সালে। এমন রেকর্ড একমাত্র ঢাকা আবাহনীরই আছে। তারাও খেলেছে টানা ৫ বার ফাইনাল (১৯৯৪, ৯৫, ৯৭, ৯৯ ও ২০০০ সালে; চ্যাম্পিয়ন হয় ১৯৯৭, ৯৯ ও ২০০০ সালে। ১৯৯৬ ও ৯৮ সালে টুর্নামেন্ট হয়নি) চলমান আসরে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শেষ আটে নাম লেখায় জামাল। ২ খেলায় তাদের সংগ্রহ ৬ পয়েন্ট। গ্রুপে তারা হারায় ফেনী সকার ক্লাবকে ৪-১ এবং টিম বিজেএমসিকে ৭-০ গোলে (এই স্কোর এ আসরের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড)। কোয়ার্টারে ব্রাদার্সকে টাইব্রেকারে হারায় ৫-৪ (২-২) গোলে (টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি ১৫ গোল জামালের। বিপরীতে হজম করেছে মাত্র ৪ গোল। পক্ষান্তরে ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে রাসেল। গ্রুপ ম্যাচে তারা উত্তর বারিধারাকে ৫-০ গোলে হারায় এবং গোলশূন্য ড্র করে মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে। কোয়ার্টারে ২-০ গোলে হারায় চট্টগ্রাম আবাহনীকে। এখন দেখার বিষয়, ফাইনালে জামাল তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে কোন দলকে পায়।
×