ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দুই টাউটের কথা-

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২ মার্চ ২০১৫

দুই  টাউটের  কথা-

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে রমনা থানা ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। আর ক্ষমতার পালাবদলে এখন তিনি রমনা থানা প্রজন্মলীগের সভাপতি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন অন্ত নেই। শনিবার রাতে ছিনতাই করার পর হাতেনাতে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। এখন রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে থানা থেকে ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করছেন তার স্বজনরা। এ জন্য মামলার বাদীকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশের ভাষায় তিনি চিহ্নিত টাউট। গ্রেফতারকৃত ওই যুবকের নাম শৈবাল হোসেন প্রিন্স। তার অপর সঙ্গীও ক্ষমতাসীন দলের এক নেত্রীর সন্তান আলী হোসেন জীবন। নাছোড়বান্দা পুলিশ। দুজনের বিরুদ্ধে দ-বিধির ৩৯২ ধারায় মামলা দিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে। পুলিশ জানায়, শনিবার রাতে ১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে শৈবাল হোসেন প্রিন্সকে। ছাড়া পেতে এখন নিজেকে দাবি করছেন রমনা থানা প্রজন্মলীগের সভাপতি হিসেবে। তার ছিনতাইয়ে সঙ্গী ছিলেন আলী হোসেন জীবন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গ্রেফতারকৃত জীবন নিজেকে ১৯ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ছেলে হিসেবে দাবি করছেন। এই দুই দাবিদারের বিরুদ্ধে মামলা করায় বাদী আসিফ কিবরিয়াকে ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে। ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী আসিফ কিবরিয়া রমনা থানায় মামলায় অভিযোগ করেছেন, শনিবার রাত সোয়া বারোটায় ইস্কাটনের দিলু রোডে দুই যুবক ধারাল অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে ২ হাজার ৭০০ রিঙ্গিত, ৮৯৫ ডলার ও একটি পাওয়ার ব্যাংক ছিনতাই করে। এ সময় তাকে মারধর করা হয়। পরে বিষয়টি টহল পুলিশকে জানালে কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা দুই ছিনতাইকারীকে ইস্কাটন থেকে আটক করে। পুলিশ জানায়, পরে আসিফ ছিনতাইকারীদের চিহ্নিত করলে দুজনের বিরুদ্ধে দ-বিধির ৩৯২ ধারায় মামলা করা হয়। মামলার বাদী আসিফ কিবরিয়া অভিযোগ করেন, মামলার পর থেকে দুই আসামির স্বজনরা তাদের রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জনকণ্ঠকে জানান, রাস্তায় প্রিন্সের পোস্টার দেখি। পোস্টার থাকলেই কি আর নেতা হয়। এরা আসলে চিহ্নিত টাউট। নিজেদের বাঁচাতে রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহারের চেষ্টা করছে। থানার একটি সূত্র বলছে, বিগত বিএনপি সরকারের সময়ে ঢাকা মহানগরীর ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড (সাবেক ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড) ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন প্রিন্স। তখনও ছিনতাই ও মাদক গ্রহণের মতো অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার কিছুদিনের মধ্যে প্রিন্সের ভোল পাল্টে যায়। তিনি আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সখ্য তৈরি করেন। এরপর এক সময় রমনা থানা প্রজন্মলীগের সভাপতি বনে যান তিনি।
×