ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অবদান রয়েছে তিন বাঙালীরও

ক্যান্সারের নির্ভুল চিকিৎসায় বড় সাফল্য গবেষকদের

প্রকাশিত: ০৪:২২, ১ মার্চ ২০১৫

ক্যান্সারের নির্ভুল চিকিৎসায় বড় সাফল্য গবেষকদের

এক রোগ, একই চিকিৎসা। অথচ পৃথক ফল! এমন নজির প্রায়ই সামনে আসে। বিশেষত ক্যান্সারের ক্ষেত্রে। দেখা যায়, একই কেমোথেরাপি নেয়া দুই ক্যান্সার রোগীর একজন হয়তো বেশ ক’বছর সুস্থ জীবন কাটিয়ে দিলেন। অথচ অন্যজনের মৃত্যু ঘনিয়ে এলো কয়েক মাসের মধ্যে! এই ‘বৈষম্যের’ জন্য ক্যান্সারের বিচিত্র চরিত্রকেই দায়ী করে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ক্যান্সারের প্রতিটা টিউমার ভিন্ন ধরনের। তাই সেগুলোকে বাগে আনতেও ভিন্ন চিকিৎসা বা ওষুধ দরকার। কিন্তু কোন্ রোগীর ওপরে কোন্ ওষুধ ঠিকঠাক কাজ করবে, তা আগে বোঝা যাবে কী করে? বস্তুত ক্যান্সার চিকিৎসায় সাফল্য লাভের পথে এই সমস্যাটি বড় অন্তরায়। বিশ্বের সাতটি প্রতিষ্ঠানের ২৩ বিজ্ঞানীর একটি দল সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখিয়েছেন, কিভাবে ক্যান্সার-টিউমারের অংশকে শরীরের বাইরে এনে তার ওপরে ওষুধ প্রয়োগ করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, কোন্ ওষুধ কার্যকর হবে আর কোন্টা নয়। পুরো প্রক্রিয়ার পোশাকি নাম ‘ক্যান্সস্ক্রিপ্ট।’ শুক্রবার ‘নেচার’ জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণা দলে তিন বাঙালী বিজ্ঞানীও রয়েছেন। তারা হলেন- হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের সহকারী অধ্যাপক শিলাদিত্য সেনগুপ্ত, ভারতের বেঙ্গালুরুর এক গবেষণা সংস্থার এ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর বিশ্বনাথ মজুমদার এবং ওই সংস্থারই প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা প্রদীপ মজুমদার। গবেষণাপত্রের বক্তব্য- ‘ক্যান্সার চিকিৎসায় যাবতীয় জটিলতার মূলে রয়েছে টিউমারের সীমাহীন বৈচিত্র্য।’ যে কারণে ক্যান্সারের ‘অণু-পরিবেশ’ (মাইক্রো এনভায়রনমেন্ট) সদা পরিবর্তনশীল। এই কারণেই প্রতিটি রোগীর টিউমার আলাদা আলাদা। বিশ্বনাথ বলেছেন, বিশেষ ধরনের টিউমারবাহী ইঁদুর ছাড়াও অস্ত্রোপচার বা নিড্ল বায়পসির মাধ্যমে শতাধিক রোগীর টিউমার বাইরে এনে এই পরীক্ষা চালিয়ে সাফল্য পাওয়া গেছে। প্রসঙ্গত, টিউমারের অংশকে শরীরের বাইরে এনে বড়জোর তিন দিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো যায়। পরীক্ষাটি যদি সফলভাবে করা যায়, তাহলে রোগ মোকাবেলার সঠিক অস্ত্র হাতে পাওয়া অনেক সহজ হবে বলে বিশ্বনাথের দাবি। তিনি এই আবিষ্কারকে ‘যুগান্তকারী’ হিসেবেও অভিহিত করেছেন। ‘ক্যান্সস্ক্রিপ্ট’ বেঙ্গালুরুতে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে। -আনন্দবাজার
×