ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কিউই-অসি আগুন লড়াই

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

কিউই-অসি আগুন লড়াই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আগুন লড়াই, হাইভোল্টেজ ম্যাচ, বিশেষণে ইতস্তত চলে এসেছে! ভারত-পাকিস্তান, ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবারের বিশ্বকাপে যত ম্যাচ নিয়ে আগাম উত্তাপের ইঙ্গিত ছিল, তার সবই হয়েছে একতরফা, ম্যাড়ম্যাড়ে! তবু আজকের নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ নিয়ে আলাদা করে ভাবতে বাধ্য। সেটি যতটা না দু’দলের অতীত-পরিসংখ্যান তার চেয়ে সম্প্রতি নৈপুণ্যের জন্য। অবিশ্বাস্য ক্রিকেট খেলছে ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম ও মাইকেল ক্লার্কের দল। কী টেস্ট, কী ওয়ানডে, প্রতিক্ষকে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়ে নিজেদের বিজয় পতাকা ওড়াচ্ছে তারা। বিশ্বকাপেও অব্যাহত রয়েছে সেই ধারা। ৩ খেলায় ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে পুল ‘এ’এর শীর্ষে কিউইরা। ২ খেলায় ১ জয় ও ১ ম্যাচের পয়েন্ট ভাগাভাগি করে (৩) তৃতীয় স্থানে অসিরা। তার চেয়ে বড় দু’দলের কম্বিনেশন। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংÑ প্রতিটি পজিশনে দুর্দান্ত সব পারফর্মারে ঠাসা। বিশ্বকাপের সফল দল অস্ট্রেলিয়ার কথাই ধরা যাক। ইনজুরি থেকে সেরে ওঠার পর ফিটনেসের ঘাটতির জন্য প্রথম ম্যাচে না থাকা নিয়মিত অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে আজ। বাদ পড়তে পারেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক জর্জ বেইলি অথচ ক্লার্কের অনুপস্থিতিতে অসাধারণ নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন তিনি। জেমস ফকনার পুরোপুরি সুস্থ হলে ছিটকে যেতে হবে শেন ওয়াটসনকে! গত বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর মাঝের সময়টাতে অস্ট্রেলিয়া এত চমৎকার সমন্বয় তৈরি করেছে যে দলটির রিজার্ভ বেঞ্চেও এখন বিশ্বমানের পারফর্মার। ১৯৭৪ থেকে এ পর্যন্ত দু’দল ১২৫ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়ে ৮৫টিতেই জয় অস্ট্রেলিয়ার। নিউজিল্যান্ডর ৩৪টিতে। বিশ্বকাপে ৮ বারের লড়াইয়ে ৬ বারই হেরেছে নিউজিল্যান্ড। এখনও পর্যন্ত শিরোপার দেখা পায়নি কিউইরা, যেখানে রেকর্ড পঞ্চম ট্রফি জয়ের স্বপ্ন অসিদের চোখে। অস্ট্রেলিয়ার ফেবারিট হওয়াটা তাই স্বাভাবিক। কিন্তু নিউজিল্যান্ড রেসে উঠে এসেছে নৈপুণ্যের জোরে। অসাধারণ খেলছে মার্টিন ক্রোর উত্তরসূরিরা। বিশ্বকাপের ঠিক আগেই দ্বিপক্ষীয় সিরিজে তারা উড়িয়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের মতো সাবেক চ্যাম্পিয়নদের। ম্যাককুলামের ভা-ারে আছেন মার্টিন গাপটিল, কোরি এ্যন্ডারসন, রস টেইলর, লুক রনকি, টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ডরাÑ যারা প্রত্যেকে নিজ নিজ পজিশনে ভয়ঙ্কর পারফর্মার। দীর্ঘ ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক ক্লার্কও তা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘অতীত পরিসংখ্যান দিয়ে এই নিউজিল্যান্ডকে বিচার করা যাবে না। অসাধারণ ক্রিকেট খেলেই তারা এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের ফেবারিটের তালিকায় তুলে এনেছে। তার ওপর খেলতে হবে তাদেরই মাটিতে। সুতরাং ম্যাচটি আমাদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ।’ অন্যদিকে ফেবারিটের তকমা নিয়ে ডুবতে চান না ম্যাককুলাম। কিউই সেনাপতির কণ্ঠে ভাল খেলার প্রত্যয়। জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে মরিয়া তিনি। ম্যাচটি নিয়ে তাই আলোচনার শেষ নেই। অভিজ্ঞ অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান ব্র্যাড হ্যাডিন যেমন বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড অসাধারণ ক্রিকেট খেলছে। এবারের আসরে সবাই কিউইদের কথা বলছে। তাদের বিপক্ষে খেলাটা আমাদের জন্য সহজ হবে না। অকল্যান্ডে উত্তেজনার এক ম্যাচই অপেক্ষা করছে।’ বলেন ৩৭ বছর বয়সী হ্যাডিন। আরেক তারকা স্টিভেন স্মিথের মতে ‘কিউইদের হারাতে হলে আমাদের সামর্থ্যরে সবটুকু ঢেলে দিতে হবে। ইংলিশদের কিউইরা কিভাবে উড়িয়ে দিয়েছিল তা আমরা দেখেছি। তাদের ব্যাটিং লাইন যেমন শক্তিশালী তেমনি বোলিং লাইনআপও দুর্দান্ত। নিজেদের মাঠে তারা সব সময়ই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ।’ কিউই গ্রেট মার্টিন ক্রো অবশ্য মনে করেন এই ম্যাচটিই হবে ম্যাককুলামদের জন্য শক্তির-যাচাই। ‘সবাই নিউজিল্যান্ডকে অন্যতম ফেবারিট হিসেবে দেখছে। তবে আমি মনে করি ম্যাককুলমাদের সমর্থ্যরে বড় পরীক্ষাটা হয়ে যাবে এ ম্যাচেই। অস্ট্রেলিয়া বড় আসরের বড় দল। ওরা স্নায়ুর চাপ জয় করে ম্যাচ বের করে নিতে পারঙ্গম। সুতরাং মাঠে ভাল খেলার পাশাপাশি আমাদের সব কিছুতেই জিততে হবে।’
×