ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

না’গঞ্জে নির্মমতার বলি হচ্ছে নিষ্পাপ শিশু

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

না’গঞ্জে নির্মমতার বলি হচ্ছে নিষ্পাপ শিশু

রুমন রেজা, নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জে স্বার্থ হাসিলের নিষ্ঠুর বলি হচ্ছে শিশুরা। একই দিনে নির্মম হত্যাকা-ের শিকার দুই শিশুর লাশ উদ্ধারের ঘটনা মানুষকে প্রবলভাবে নাড়া দিয়েছে। শিশুরা যে শুধু হত্যার বলি তা নয়, তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে হত্যায় সহযোগিতার মতো জঘন্য কাজে। ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ নেয়ার পরও রূপগঞ্জে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে ৫ বছরের শিশু সাদমান জিহাদ আপনকে। বাবার সঙ্গে স¤পত্তিগত বিরোধকে কেন্দ্র করে খুন হয়েছে এই নি®পাপ শিশু। ৪ দিন নিখোঁজ থাকার পর ২৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বিরাবো এলাকায় মাটি চাপা দিয়ে রাখা আপনের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত সাদমান জিহাদ আপন ওই এলাকার জাহিদের ছেলে। জাহিদের সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাই. আবুল বাশারের পরিবারের স¤পত্তিগত বিরোধ রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই বিরোধের জের ধরেই আপনকে অপহরণের পর ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মুক্তিপণ দেয়ার পরও অপহরণকারীদের চিনে ফেলায় আপনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে ফতুল্লা থানার পোস্ট অফিস এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীর থেকে ৫ বছরের শিশু সুমনের দু’চোখ উপড়ানো ও জবাই করা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সুমন ফতুল্লা শাহজাহান রি রোলিং মিল এলাকার শিখারাণীর ভাড়াটে দিনমজুর নুরুদ্দিন মিয়ার ছেলে। পুলিশ একই বাড়ির ভাড়াটে কাঞ্চন মিয়ার ছেলে রবিনকে আটক করে। রবিন ২৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চাঁদনী রূপমের আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়। উম্মোচিত হয় এই বর্বোরোচিত হত্যাকা-ের রহস্য। রবিন আদালতকে জানায়, তার বাবা কাঞ্চন মিয়াই দুই চোখ উপড়ে হত্যা করেছে সুমনকে । কাঞ্চন মিয়ার বাম চোখ নষ্ট। কোন চিকিৎসক তাকে বলেছে, চোখ পাওয়া গেলে তা প্রতিস্থাপন করা যাবে। এজন্য চোখ নেয়ার জন্য ঘটানো হয়েছে এই হত্যাকা-। সুমনকে ডেকে নিয়ে আসা হয় রবিনের মাধ্যমে। কাঞ্চন মিয়া পলাতক রয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি ফতুল্লা থানার লামাপাড়া এলাকায় জ্যোসনা বেগম নামে এক নারীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। লাশ গুম করার জন্য ৩০০ টাকার বিনিময়ে সালাম ও জুনায়েত নামে দুই শিশু শ্রমিককে দিয়ে মাটি খোঁড়ানো হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাতে আড়াইহাজার থানার জাঙ্গালিয়া এলাকায় মরিয়ম নামে ৪ বছরের এক শিশুকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে সৎমা নিলুফা । একই কায়দায় হত্যার চেষ্টা করে নিহতের বড় বোন সাত বছরের মিমকে। লোকজন তাকে উদ্ধার করে। পুলিশ নিলুফাকে গ্রেফতার করেছে। নিলুফা জানিয়েছে,সে অন্তঃসত্ত্বা ছিল। স্বামী ও সতীন শাহীদা ওষুধ খাইয়ে ভ্রƒণ হত্যা করায় সে তাদের ওপর প্রতিশোধ নিতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। স্বার্থের কারণে নি®পাপ শিশুকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা মানুষকে আলোড়িত করেছে।
×