ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভূমি ব্যবস্থাপনা তদারকিতে পৃথক সংস্থা গঠনের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ভূমি ব্যবস্থাপনা তদারকিতে পৃথক সংস্থা গঠনের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত ভূমির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা তদারকির লক্ষ্যে একটি পৃথক সংস্থা গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তায় জমির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, যাতে মানুষ অধিক উপকৃত হয়। তিনি বুধবার তাঁর কার্যালয়ে জাতীয় ভূমি ব্যবহার কমিটির প্রথম বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে এ নির্দেশ দিয়ে বলেন, জমির সুষ্ঠু ব্যবহার এবং আবাদি জমিতে যেন শিল্প ও আবাসন গড়ে না ওঠে তাও নিশ্চিত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ও কমিটির প্রধান শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ কে এম শামিম চৌধুরী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে এ কথা বলেন। খবর বাসসর। শেখ হাসিনা বলেন, আবাদি জমিতে কোন শিল্পাঞ্চল, শিল্পকারখানা ও আবাসন গড়ে তোলা যাবে না। এছাড়া ভূমির সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ ও জলাশয়ও সংরক্ষণ করতে হবে। তিনি বলেন, বছরের পর বছর পরিকল্পিত নগরায়ন না হওয়ায় আবাদি জমির পরিমাণ কমছে। জমি সাশ্রয়ের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে মানুষের জন্য বসতবাড়ি নির্মাণের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কম জমিতে বেশি আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া যেখানে সেখানে শিল্পকারখানা গড়ে তোলা যাবে না। তিনি জমি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়গুলোর দফতর ও অধিদফতসহ সব অধীনস্থ সংস্থাগুলো একই কমপ্লেক্সে নির্মাণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বনভূমি রক্ষার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, বনের জমিতে কোন শিল্পকারখানা নয়। একই সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে ছোট রাস্তা ও বাঁধও নির্মাণ করতে হবে। বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর হত্যাযজ্ঞে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। প্রেস সচিব বলেন, বৈঠকে পল্লী অবকাঠামো বিশেষ করে পল্লী অঞ্চলে পরিকল্পিত আবাসন গড়ে তুলতে ‘গ্রাম উন্নয়ন আইন’ শীর্ষক একটি নতুন আইন প্রণয়ন এবং শহর উন্নয়ন আইনের কঠোর বাস্তবায়ন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইন যুগোপযোগী করার প্রস্তাব করা হয়। বৈঠকে আবাসন এবং শিল্প-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে জমি অধিগ্রহণের আগে ভূমির অঞ্চলভিত্তিক নক্সা (জোনিং ম্যাপস অব ল্যান্ড) তৈরি করতে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়। এতে ভূমি বিভাজন (ল্যান্ড জোনিং) ও ভূমির অঞ্চলভিত্তিক নক্সা সম্পর্কে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সরকারের কর্মকর্তাদের অবহিত করতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার পরামর্শ দেয়া হয়। বৈঠকে সড়ক, মহাসড়ক ও সংযোগ সড়ক নির্মাণে যথাসম্ভব উর্বর কৃষিজমি এড়িয়ে অঞ্চল বিভাজন আইন (জোনিং ল) প্রণয়নের প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে ভূমি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়। এতে বলা হয়, শিল্পকারখানা নির্ধারিত শিল্পাঞ্চল বা বিসিকের শিল্পাঞ্চল বা অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে নির্মাণ এবং সব উপজেলায় নির্ধারিত সময়ে ভূমি বিভাজন প্রতিবেদন প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। বৈঠকে জাতীয় ভূমি ব্যবহার কমিটিতে ভূমি প্রতিমন্ত্রীর পাশাপাশি রেলমন্ত্রী ও রেল মন্ত্রণালয়ের সচিবকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিবর্গসহ কমিটির সদস্যবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এই সভায় উপস্থিত ছিলেন।
×