ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খালেদার গুলশান কার্যালয়ে গ্রেফতার আতঙ্ক

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

খালেদার গুলশান কার্যালয়ে গ্রেফতার আতঙ্ক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খালেদা জিয়ার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর থেকেই বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে। যে কোন সময় খালেদা জিয়া ও এ কার্যালয়ে অবস্থানকারীদের গ্রেফতার করা হতে পারে- এমন আশঙ্কা থেকে সবাই নিজেদের মধ্যে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা সেরে নিয়েছেন এবং যে কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে খালেদা জিয়া সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। বুধবার বিকেল থেকেই খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। বিএনপির যুগ্মমহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদের নামে পাঠানো এক গায়েবি বিবৃতিতে বলা হয়, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের যে কোন পদক্ষেপ সরকারের পতনকেই ত্বরান্বিত করবে। বুধবার সকালে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের বিশেষ আদালতে চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এ খবর শুনেই খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে অবস্থানকারীরা নড়েচড়ে বসেন। বিকেলে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা গুলশান থানায় পাঠানোর পর চারিদিকে গুজব ছড়িয়ে পড়ে খালেদা জিয়াসহ ওই কার্যালয়ে অবস্থানকারী সবাইকে গ্রেফতার করা হবে। এ খবর গুলশান কার্যালয়ে পৌঁছলে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ ৩ জানুয়ারি থেকে সেখানে অবস্থান করা দলের নেতাকর্মী ও অফিস স্টাফদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়ে যায়। খবর শুনে খালেদা জিয়া তাঁর কার্যালয়ে থাকা সবার সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথা সেরে ফেলেন। এ ছাড়া তিনি যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবাইকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। এ সময় তিনি লন্ডনে ফোন করে বড় ছেলে তারেক রহমানসহ বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে আন্দোলন কর্মসূচী ও পরবর্তী করণীয় নিয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে রাখেন বলে জানা গেছে। গতকাল দুপুরে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া গ্রেফতার হলে হবেন, রাজনীতি করলে গ্রেফতার অস্বাভাবিক কিছু নয়। রাজনীতিকদের গ্রেফতার হতেই হয়। বিভিন্ন মহল থেকে বলাবলি করা হচ্ছে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর যে কোন সময় খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা যাবে। উপর মহলের নির্দেশ পাওয়া মাত্র পুলিশ এসে খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে। অথবা গুলশান কার্যালয়কেই সাবজেল ঘোষণা করা হবে। এমনকি বর্তমানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকা দলের অন্য নেতাকর্মী ও অফিস স্টাফদেরও বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেফতার করা হতে পারে। আর এ কারণেই বর্তমানে সেখানে অবস্থানরত সবার মধ্যেই অস্থিরতা বেড়ে গেছে বলে জানা গেছে। মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করার পর আন্দোলনের ভবিষ্যত নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়ে। খালেদা জিয়াসহ গুলশান কার্যালয়ে অবস্থানকারীদের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দেয়। এর পর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় গুলশান কার্যালয়ে গ্রেফতার আতঙ্ক বেড়ে যায়। তাই তারা ভেতর থেকেই বিভিন্ন মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরবর্তী পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন। এদিকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর বুধবার বিকেল থেকেই খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের সামনে মিডিয়াকর্মীদের ভিড় বাড়ে। ওই এলাকায় গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতাও বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে গুলশান কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থানকারীরা মাঝে মধ্যেই দ্বিতীয় তলার বারান্দা ও ছাদে উঠে আশপাশের রাস্তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন। পরোয়ানা পর্যালোচনায় আইনজীবীদের বৈঠক ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা পর্যালোচনা করতে বিএনপিপন্থী সিনিয়র আইনজীবীরা বৈঠক করেছেন। বুধবার সন্ধ্যায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক বিচারপতি টিএইচ খানের মোহাম্মদপুর তাজমহল রোডের বাসায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন প্রমুখ। বৈঠককালে টিএইচ খানের বাসার সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক প্রহরায় ছিলেন। গ্রেফতারের পদক্ষেপ সরকারের পতনকেই ত্বরান্বিত করবে- সালাহউদ্দিন ॥ আবারও অজ্ঞাত স্থান থেকে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব সালাহউদ্দিনের নামে গায়েবি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। বুধবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এ বিবৃতিতে বলা হয়- খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের যে কোন পদক্ষেপ সরকারের পতনকেই ত্বরান্বিত করবে।
×