ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আত্মবিশ্বাসী টাইগাররা শ্রীলঙ্কাকে হারাতে

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

আত্মবিশ্বাসী টাইগাররা শ্রীলঙ্কাকে হারাতে

মিথুন আশরাফ ॥ সব দিকেই পিছিয়ে থাকছে বাংলাদেশ। মেলবোর্ন ক্রিকেট মাঠে যেখানে শ্রীলঙ্কা ১৭ ওয়ানডে খেলেছে, সেখানে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত খেলেইনি। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে নয়টায় যেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে নামবে, সেটিই হবে মেলবোর্নে বাংলাদেশের খেলা প্রথম ম্যাচ। এই মাঠকে ভালভাবে চেনার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকছে শ্রীলঙ্কাই। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা এখন পর্যন্ত ৩৭ ওয়ানডে খেলেছে। বাংলাদেশ জিততে পেরেছে চার ম্যাচে। ম্যাচ জয়েও পিছিয়েই থাকছে মাশরাফিরা। তবে দুটি এমন জায়গা আছে, যে জায়গাতে এগিয়ে থেকেই নামবে বাংলাদেশ। একটি, বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার চেয়ে ১ পয়েন্ট বেশি (৩ পয়েন্ট) থাকা আর দলে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান থাকা। এই এগিয়ে থাকার আত্মবিশ্বাস এখন বাংলাদেশকে জিতিয়ে দিলেই হয়। ঐতিহ্যে ভরা মেলবোর্ন মাঠ। এ মাঠে খেলার স্বপ্ন প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই থাকে। আজ যারা বাংলাদেশের একাদশে থাকবেন, তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়ে যাবে। এই স্বপ্নে ভেসে না গিয়ে শ্রীলঙ্কাকে এখন গুড়িয়ে দিতে পারলেই হলো। পারবে বাংলাদেশ তা করতে? বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা আত্মবিশ্বাসী সুরেই বলেছেন, ‘আমরা জেতার জন্যই নামব।’ শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা অবশ্য এ মাঠে খেলার স্বপ্ন আগে বহুবার পূরণ করে নিয়েছেন। এবার তাই মাঠের ঐতিহ্যের ভেলায় নিজেদের ভাসিয়ে দেবেন না নিশ্চয়ই। বিশ্বকাপের ম্যাচ। আবার বাংলাদেশের বিপক্ষে জিততেই হবে। তা না হলে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পথ কঠিন হয়ে পড়বে। এমন ম্যাচের আগে শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস সমীহের সুরেই কথা বলছেন, ‘আমাদের একটি জয় দারকার ছিল। জয়ের ধারায় ফিরতে বিকল্প ছিল না। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় পেয়েছি। এখন সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই।’ বাংলাদেশও তো বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত কোন ম্যাচই হারেনি। প্রথমবার এমনটি হলো। ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭ ও ২০১১ সালের বিশ্বকাপে খেলে বাংলাদেশ। পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলছে। এর আগে প্রথম ম্যাচে শুধু ২০০৭ সালেই জিতেছে, ভারতের বিপক্ষে। সেই ছন্দ আর ধরে রাখা যায়নি। এবার প্রথম ম্যাচেই জিতেছে। আফগানিস্তানকে ১০৫ রানে হারিয়েছে। এরপর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি হয়নি। বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। তাই ১ পয়েন্টও পেয়েছে বাংলাদেশ। পরপর দুই ম্যাচে পয়েন্ট পেয়ে আজ নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে খেলতে নামবে। যদি জয় মিলে যায় তাহলে অপরাজিতই থাকবে বাংলাদেশ। সেই সুখ বাংলাদেশকে কোয়ার্টার ফাইনালের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে রাখবে। শ্রীলঙ্কাও একই দলকে হারিয়েছে। তবে একটু কষ্ট করেই জিততে হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৯৮ রানে হারের পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪ উইকেটে জয় পেয়েছে। তবে মাত্র ১০ বল বাকি থাকতে। আফগানদের বিপক্ষেই এমন দশা হয়েছে শ্রীলঙ্কার, সেখানে বাংলাদেশ তো আরও কঠিন প্রতিপক্ষ। ম্যাচটি হবে অবশ্য মেলবোর্নে। যে মাঠে আগে ব্যাট করা দল ৩০০ রানের বেশি করতে পারলেই, জয়ের সম্ভাবনায় থাকবে। এবার বিশ্বকাপে এ মাঠে দুটি ম্যাচ হয়েছে। দুটিতে তাই দেখা গেছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৪২ রান করে ১১১ রানের বড় জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আরেকটি ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩০৭ রান করে ১৩০ রানের জয় তুলে নিয়েছে ভারত। তাই তো মাশরাফি ৩০০ রানের দিকেই নজর দিচ্ছেন। বলেছেন, ‘বিশ্বকাপ শুরুর আগে কেউই আসলে চিন্তা করেনি অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড কন্ডিশনে ৩০০ করে রান হবে। এটা দেখেও ভাল লাগছে। বোলারদের জন্য একটু চ্যালেঞ্জিং। তার পরও বলব বিশ্বকাপে হাইস্কোরিং ম্যাচ দেখতেই সবাই চায়, পছন্দও করে। আবার সেই সঙ্গে ভাল বোলিং করতে পারলে একটা বেনিফিট পাওয়া যায়। আমাদের ব্যাটসম্যানদের কথা বললে বলব অবশ্যই তারা পারে। যদি আমরা শুরুটা ভাল করি তবে পারব। আমরা হয় তো ৩০০ না পারলেও কাছাকাছি যেতে পারব।’ সেই রকম কিছু ব্যাটসম্যানরা করে দেখাতে পারলে বাংলাদেশের জয়ও সম্ভব হয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশের মেলবোর্নে খেলার অভিজ্ঞতা না থাকলেও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিবের এ মাঠে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। বিগব্যাশে খেলতে গিয়ে মেলবোর্ন মাঠে খেলেছেন সাকিব। তার অভিজ্ঞতা ক্রিকেটারদের মাঝে ভালভাবে ছড়িয়ে দিতে পারলে আর যে ম্যাচগুলো হয়েছে তা থেকে অভিজ্ঞতা নিতে পারলে বাংলাদেশও জিততে পারে। সেটিই সবার প্রত্যাশা।
×