ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রুদ্ধশ্বাস টাইব্রেকারে শেখ জামাল ৫ (২)-৪ (২) ব্রাদার্স ইউনিয়ন

সেমিতে শেখ জামাল ধানমণ্ডি

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সেমিতে শেখ জামাল ধানমণ্ডি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম ম্যাচটাই যেন হলো ফাইনালের মতো। আর তাতে জয়ী শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেড। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘ফেডারেশন কাপ’ ফুটবল আসরের উত্তেজনাকর ম্যাচে জামাল টাইব্রেকারে (সাডেন ডেথ) ৫-৪ (২-২) গোলে হারায় ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেডকে। স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে আসা অনেক দর্শকই মন্তব্য করেন, ‘খেলল ব্রাদার্স, আর জিতল শেখ জামাল!’ গোপীবাগের ক্লাব ব্রাদার্স আক্ষেপ করতেই পারে, কেননা, তারা ম্যাচে দ্বিতীয় গোল করে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত সেই লিড ধরে রাখতে পারেনি! জামাল প্রমাণ করল, তাদের ম্যাচ টেম্পারমেন্ট অন্য যে কোন দলের চেয়ে অনেক বেশি। এ জয়ে সেমিফাইনালে নাম লেখাল কোচ মারুফুল হকের দল শেখ জামাল। তারা সেমিতে খেলবে আগামী ১ মার্চ। টাইব্রেকারে উভয় দলই প্রথম পাঁচ শটে গোল করে ৪টি করে (৪-৪)। জামালের পক্ষে গোল করেন লিওনেল, নাসির, রায়হান ও ইয়াসিন। ব্রাদার্সের পক্ষে ওয়ালসন, এ্যাডামস, জারমেইন ও শফিকুল। জামালের ইয়াসিন খানের উঁচু শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ব্রাদার্সের জিতুর গড়ানো শট সাইডবারে লেগে ফিরে আসে। এরপর শুরু হয় টাইব্রেকার নাটকের দ্বিতীয় পর্ব। জামালের ওয়েডসন গোল করে দলকে এগিয়ে নেন। ব্রাদার্সের হাবিব মিয়ার গড়ানো শট ঝাঁপিয়ে পড়ে আটকে দেন জামালের গোলরক্ষক মাজহারুল ইসলাম হিমেল। জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে পড়ে মনজুর কাদেরের দল। ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শেষ আটে নাম লেখায় জামাল। ২ খেলায় তাদের সংগ্রহ ৬ পয়েন্ট, করে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি ১১ গোল। বিপরীতে হজম করেছে ১ গোল। গ্রুপে তারা হারায় ফেনী সকার ক্লাবকে ৪-১ এবং টিম বিজেএমসিকে ৭-০ গোলে (এই স্কোর এ আসরের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড)। পক্ষান্তরে ভারতীয় কোচ সৈয়দ নঈম উদ্দিনের ব্রাদার্স হচ্ছে ‘ডি’ গ্রুপের রানার্সআপ। ২ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ২ পয়েন্ট। গোল করেছে ২টি, খেয়েছেও সমান গোল। তারাই এ টুর্নামেন্টের একমাত্র দল, যারা কোন ম্যাচে না জিতেই ওঠে শেষ আটে! প্রথম ম্যাচে তারা ১-১ গোলে ড্র করে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির সঙ্গে। এরপরের ম্যাচেও একই ব্যবধানে ড্র করে ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের সঙ্গে। এ আসরে গতবারও ব্রাদার্স গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে কোয়ার্টারে উন্নীত হয়েছিল। সেবার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কাছে ২-০ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছিল গোপীবাগের দলটি। প্রথমার্ধের ৪৫ মিনিটে প্রথম গোল করে জামাল। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে ব্রাদার্সের বক্সে ঢুকে শট নেন জামালের গাম্বিয়ান মিডফিল্ডার ল্যান্ডিং ডার্বোয়ে। তার শট ব্রাদার্সের অভিজ্ঞ গোলরক্ষক বিপ্লব ভট্টাচার্য্য ফেরালেও তা ফস্কে যায়। জামালের সুযোগ সন্ধানী হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড লিওনেল সেইন্ট-প্রিয়ক্স বল পেয়ে বিপ্লবকে কাটিয়ে বাঁ পায়ে শট নিয়ে বল পাঠান জালে (১-০)। দ্বিতীয়ার্ধে গোল করে সমতা আনে ব্রাদার্স। ৫১ মিনিটে তাদের হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড অগাস্টিন ওয়ালসন পাস দেন সতীর্থ কাউসার আলীকে। তিনি বল নিয়ে জামালের বক্সে ঢুকে তীব্র শটে গোল (১-১)। ৫৬ মিনিটে ব্রাদার্সের নাইজিরিয়ান ডিফেন্ডার এ্যাডামস জানকাসা। তিনি বল নিয়ে জামালের বক্সে ঢুকে বল জালে পাঠান (২-১)। যখন মনে হচ্ছিল ব্রাদার্সই জিততে যাচ্ছে, তখনই ৮২ মিনিটে সমতা আনে জামাল। রুবেল মিয়ার ক্রসে বল পেয়ে জামালের গাম্বিয়ান মিডফিল্ডার ল্যান্ডিং ডার্বোয়ে লক্ষ্যভেদ করেন (২-২)। এরপর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। কিন্তু নির্ধারিত ৩০ মিনিটে কেউই গোল করতে না পারলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।
×