ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংসদে কঠোর সমালোচনা

তালেবান স্টাইলে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে খালেদা জিয়া ক্ষমতা দখল করতে চান

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

তালেবান স্টাইলে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে খালেদা জিয়া ক্ষমতা দখল করতে চান

সংসদ রিপোর্টার ॥ বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা সন্ত্রাসী কর্মকা-ের কঠোর সমালোচনা করে সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা বলেছেন, জনগণ নয় পেট্রোলবোমা ও তালেবান স্টাইলে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে চান। তাই দানবের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে তিনি মানবের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছেন। যুগে যুগে মানবের বিরদ্ধে দানবের আক্রমণে দানবেরই পরাজয় ঘটেছে। সেদিন বেশি দূরে নয় জনগণের রুদ্ধরোষে খালেদা জিয়ারও পরাজয় ঘটবে। তাঁরা রাষ্ট্রদ্রোহ ও সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার জন্য মাহমুদুর রহমান মান্না ও সাদেক হোসেন খোকার বিচারের দাবি জানান। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এ দাবি জানান। আলোচনায় অংশ নেন সরকারী দলের আবদুল মান্নান, প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, শামসুল হক টুকু, সামশুল হক চৌধুরী, খন্দকার আবদুল বাতেন, মমতাজ বেগম, ফাতেমা তুজজোহরা, ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ হাফিজুর রহমান, জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নান, তরিকত ফেডারেশনের এম এ আউয়াল প্রমুখ। সরকারী দলের আবদুল মান্নান বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান জামায়াতের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়েই ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। ওই নির্বাচন না হলে থাইল্যান্ডের মতো অবস্থার সৃষ্টি হতো। তিনি বলেন, এখন মানবের বিরুদ্ধে দানবের আক্রমণ চলছে। কিন্তু সারা পৃথিবীতেই মানবের কাছে দানবের পরাজয় ঘটেছে, বাংলাদেশেও ঘটবে। মান্না-খোকার টেলিফোনালাপের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, মান্না হচ্ছেন একই অঙ্গে বহুরূপ। তিনি নানা সময়ে নানা দল করেছেন। এখন সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। রাষ্ট্রদ্রোহ ও নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকায় মাহমুদুর রহমান মান্নাকে গ্রেফতার করা যেতেই পারে। কিন্তু তাকে গ্রেফতার নিয়ে নতুন কোন নাটক করা হচ্ছে কি-না, তা খুঁজে বের করতে হবে। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, খালেদা জিয়া তা-বলীলা ও জ্বালাও-পোড়াও চালিয়ে মানুষ হত্যা করছেন। সরকারে থাকুক আর বিরোধী দলে থাকুক, খালেদা জিয়া মানুষ হত্যাই পছন্দ করেন। ক্ষমতায় থাকতেও সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ নানা হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছেন। এখনও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েই যাচ্ছেন। এই বিকারগ্রস্ত নেত্রীর চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ বলেন, বাঙালী জাতি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে না পারে সেজন্য বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস-হত্যা-নাশকতা চালাচ্ছে। কিন্তু পৃথিবীর কোন শক্তিই বাঙালীর অগ্রযাত্রা ব্যহত করতে পারবে না। জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নান বলেন, ক্ষমতালিপ্সু কিছু মানুষ দেশের স্বপ্ন, অগ্রগতি ও মানুষের অধিকারকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। অশান্তির আগুনে পুরো দেশকে ছারখার করে দিচ্ছে। পেট্রোলবোমা দিয়ে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় যেতে চাচ্ছে। কিন্তু মানুষ হত্যা করে কখনও ক্ষমতায় আসা যায় না। তাই এ সব দ্রুত বন্ধ করতে হবে। কঠোরহস্তে দমন করতে হবে। ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ হাফিজুর রহমান বলেন, দেশের উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত হয়ে স্বাধীনতাবিরোধী শত্রুরা নৈরাজ্য চালিয়ে দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে নেমেছে। এদের কোন জনসম্পৃক্ততা বা জনসমর্থন নেই। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করার ক্ষমতা নেই। সে কারণেই নাশকতা, তালেবান স্টাইলে ধ্বংসযজ্ঞ ও মানুষ হত্যা করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে চায়। শুধু প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে জনগণকে সম্পৃক্ত করে এই অপশক্তিকে শক্ত হাতে মোকাবেলা করতে হবে। সরকারী দলের আবদুল বাতেন বলেন, ঠা-া মাথায় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া মানুষ হত্যা করছেন। অথচ মানুষ হত্যাকারী বহাল তবিয়তে কার্যালয়ে নিজেকে নিজে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। ঘৃণ্য এ সব হত্যাকা-ে তথাকথিত সুশীল সমাজের বিবেক কি সামান্যও নাড়া দেয় না। কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম বলেন, বিএনপি-জামায়াত কখনও জনগণের রাজনীতি করে না, শুধুমাত্র ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। বিক্ষুব্ধ জনগণ মাঠে নেমেছে, নাশকতাকারীদের ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করছে। মানুষের এ রুদ্বরোষ থেকে বিএনপি নেত্রীও রেহাই পাবেন না।
×