ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সৌরবিদ্যুতে সম্ভাবনা

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সৌরবিদ্যুতে সম্ভাবনা

এটা অস্বীকার করার কিছু নেই যে, বিগত ছয় বছরে দেশে বিদ্যুতের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। দেশের বহু জেলায় গ্রামপর্যায়ে নতুন করে বিদ্যুত বিতরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। চোখে পড়ার মতোই বিদ্যুত সেক্টরের অগ্রযাত্রা অব্যাহত। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ৭৭টি বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি সই হয়েছে। এতে আগামীতে ১১ হাজার ৫০৯ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদিত হবে। জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরপর্ব থেকে জানা যায়, দেশের মোট জনসংখ্যার ৬৮ শতাংশ বিদ্যুত সুবিধার আওতায়। কিন্তু সৌরবিদ্যুতেও যে দেশ এগিয়ে চলেছে, বলা যায় নীরব বিপ্লব সাধিত হয়েছে, সেটাও উল্লেখ করার মতো। দেশে সৌরবিদ্যুতের প্রসার বাড়ছে যেভাবে তাতে ধারণা করা হচ্ছে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে যাবে বিকল্প এ বিদ্যুত। এশিয়ার ভেতর বাংলাদেশকে বলা হবে সোলার নেশন। সরকার ঘোষণা দিয়েছে, ২০১৭ সালের মধ্যে দেশে সৌরবিদ্যুত ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬০ লাখে উন্নীত করা হবে। সভ্য মানুষের জীবন বিদ্যুতের ওপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। ঘরোয়া বা দাফতরিক যে কোন পর্যায়ে বিবিধ প্রয়োজনে বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীলতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বিদ্যুতহীনতার কথা কল্পনাও করা যায় না। সাতটি সুবিধা মেলে সূর্যের সহায়তা নিয়ে তৈরি বিদ্যুত শক্তিতে। বিদ্যুত চলে গেলে এটি যে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ব্যবহার করা যায়, এটা অবশ্য সবারই জানা। গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশে কিছুটা বিদ্যুত ঘাটতি দেখা যায়। সে সময় বাড়িতে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকলে লোডশেডিংয়ের সময়ও বিরতিহীন বিদ্যুত পাওয়া সম্ভব। তাছাড়া সৌর ব্যবস্থার খরচ ক্রমেই হাতের নাগালে চলে আসছে। এখন বাংলাদেশে এটিই সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন শক্তির উৎস। এটি আইপিএস সিস্টেমের চেয়ে অপেক্ষাকৃত ভাল একটি বিকল্প ব্যবস্থা। বলা চলে, সৌরবিদ্যুত ব্যবস্থা একটি আশীর্বাদস্বরূপ। এটা বড় সুসংবাদ যে এখন প্রতিমাসে প্রায় ৮০ হাজার পরিবারের ঘরে সোলার প্যানেল বসছে। যেখানে পল্লীবিদ্যুতের খুঁটি নেই সেখানে গৃহস্থ ও কিষাণ বাড়ির ঘরের চালার ওপর অথবা ইটের বাড়ির ঘরের ছাদে সূর্যের আলো ধরে রাখার প্যানেল স্থাপন করা হচ্ছে। অনেক আবাদী জমির ধারে ঘর বানিয়ে প্যানেল বসিয়ে সৌরবিদ্যুতে সেচ কাজও চলছে। সব মিলিয়ে সৌরবিদ্যুতের যে বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, সেটা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে এই কাজ আরও এগিয়ে নেয়া দরকার। সেই সঙ্গে এ খাতে প্রণোদনার ব্যবস্থা নেয়াও জরুরী।
×