ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দীর্ঘমেয়াদী হঠকারী কর্মসূচী প্রত্যাখ্যান করেছে মানুষ

রংপুরে আট জেলায় জনজীবন স্বাভাবিক

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

রংপুরে আট জেলায়  জনজীবন স্বাভাবিক

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট, ২২ ফেব্রুয়ারি ॥ লালমনিরহাটসহ রংপুর বিভাগের আট জেলায় বিএনপি-জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোটের হরতাল অবরোধ জনগণ প্রত্যাখান করেছে। জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়ে গেছে। বিরোধীদলের রাজনৈতিক কর্মসূচীকে জনতার সাড়া নেই। জনগণ বিরোধী দলের কর্মসূচীতে দুর্বৃত্তায়ন হিসেবে নিয়ে শাস্তির দাবি করেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় রাজনীতির নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় রয়েছে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ঠাকুরগাঁও জেলার নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরাকার পঞ্চগড়ের, বিএনপির রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু জেলা লালমনিরহাট ও বিএনপির যুগ্ন-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর জেলা কুড়িগ্রাম। এ সব জেলা শহর ও গ্রামের কোন রাজনৈতিক কর্মসূচী নেই। বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের কোন নেতাকর্মীকে হরতাল ও অবরোধে মিছিল মিটিং ও পিকেটিং করতে দেখা যাচ্ছে না। হরতাল ও অবরোধের ভয়কে জয় করে সাধারণ মানুষ নিত্যনৈমিত্তিক কাজ করছে। সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে গেছে। বিএনপি জামায়াত হয়ে পড়েছে জনবিচ্ছিন্ন একটি রাজনৈতিক দল। রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা, নীফামারী ও পঞ্চগড় জেলার সঙ্গে দূরপাল্লার ও আন্তঃজেলার বাসট্রাক চলাচল স্বাভাবিক হয়ে গেছে। বুড়িমারী স্থলবন্দর হতে পণ্য বোঝাই ট্রাক দেশের অভ্যন্তরে চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। রংপুরের জেলাগুলোতে রাজনৈতিক কর্মসূচীর নামে সাধারণ মানুষকে বিএনপি-জামায়াত জিম্মি করতে চেয়েছিল। সাধারণ মানুষের ওপর বিএনপি-জামায়াতের হামলাও সাধারণ মানুষ প্রতিরোধ করতে শুরু করেছে। লালমনিরহাটের মহেন্দ্রনগরে বিএনপি-জামায়াতের দুর্বৃত্তরা হরতালে দোকান বন্ধ করতে হামলা চালায়। এ সময় সাহসী মানুষগুলো দুবৃর্ত্তদের গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। এরপর হতে লালমনিরহাটে আর কোন বিএনপি-জামায়াতের দুর্বৃত্তদের কোথাও হামলা করতে দেখা যায়নি। জনপ্রতিরোধের মুখে বিএনপি-জামায়াত এখন কোনঠাসা হয়ে গেছে। তাই জনজীবনে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চ্যলাতা। লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর, বিসিক শিল্পনগরী, নিউ মার্কেট, সুপার মার্কেট, বাসট্রেন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। সবখানে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত পদচারণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কোথাও হরতাল ও অবরোধের ছোঁয়া দেখা যায়নি। তিস্তা সেতুর টোলপ্লাজা সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকাল হতে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। চট্টগ্রাম হতে কুড়ি চাকার ২৫টি গাড়ি এসেছে তিস্তা দ্বিতীয় সেতুর নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে। এদিকে জনজীবন স্বাভাবিক হওয়ায় সবজির বাজারের এর প্রভাব পড়েছে। হরতালের দিন থাকা স্বত্ত্বেও রাস্তার ধারে কৃষি শ্রমিকদের ফুলকপি, বাঁধাকপি, আলু, বেগুন, টমেটসহ নানাজাতের সবজি ট্রাকে বোঝাই করতে দেখা গেছে। ট্রাক বোঝাই সবজি ঢাকা, চট্রগ্রাম, খুলনা, কুমিল্লাসহ নানা অঞ্চলে চলে যাচ্ছে। এর ফলে আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন দু’দিন আগে দুই টাকা কেজি কেউ কিনেনি। এখন দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন জাতের সবজি ৪ টাকা হতে ৭ টাকা কেজিতে বিক্রয় হচ্ছে। এক সময়ে মির্জা ফখরুল, রিজভী ও জমির উদ্দিনের নেতৃত্ব সাধারণ নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধাভরে মেনে চলত। এখন সেই অবস্থা আর নেই। মির্জা ফখরুল, রিজভী নাশকতার মামলায় জেলে, দুলু ও গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে চলে গেছে। কর্মীরাও বিএনপির হঠকারী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত র্দীঘমেয়াদী হরতাল অবরোধ কর্মসূচী হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
×