ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সুদ কম থাকায় কৃষিঋণ বিতরণে অনাগ্রহ

৭ মাসে বিতরণ ৮ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

৭ মাসে বিতরণ ৮ হাজার কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ অন্য খাতের তুলনায় কৃষি ঋণে সুদহার কম হওয়ায় সরকারী ও বেসরকারী ব্যাংকগুলো এ ঋণ বিতরণে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের হয়রানি এবং মামলার ভয়ে কৃষকরা ব্যাংকবিমুখ হয়ে পড়ছেন। ফলে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ কমেছে। চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংকগুলো কৃষি খাতে আট হাজার ৪৮৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। আগের বছরের একই সময়ে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল আট হাজার ৮১৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এ হিসেবে সাত মাসে ঋণ বিতরণ কমেছে ৩৩৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বা তিন দশমিক ৮০ শতাংশ। জানা গেছে, অগ্রাধিকার খাত হিসেবে এ খাতে ঋণ বিতরণ বাড়াতে বিভিন্ন সময়ে ব্যাংকগুলোর প্রতি নির্দেশনা দিয়ে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরও কৃষিতে ঋণ বিতরণ না বেড়ে উল্লেখযোগ্যহারে কমেছে। মূলত অন্য খাতের তুলনায় কৃষি ঋণে সুদহার কম হওয়ায় ব্যাংকগুলো এ ঋণ বিতরণে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। মূলত ঋণ নিতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি এবং মামলার ভয়ে কৃষকরা ব্যাংকবিমুখ হয়ে পড়ছেন বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কৃষিঋণ বিতরণ বাড়াতে সম্প্রতি কৃষি খাতে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণে বর্তমানে নির্ধারিত হারের তুলনায় ২ শতাংশ সুদ কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১ জানুয়ারি থেকে কৃষকরা সর্বোচ্চ ১১ শতাংশ সুদে কৃষিঋণ নিতে পারছেন। আগে যেখানে সুদ গুনতে হতো ১৩ শতাংশ। গত বছরের ২১ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আমানত ও ঋণের সুদ হারের নি¤œমুখী প্রবণতা বিবেচনায় অগ্রাধিকার খাত হিসেবে কৃষি ও পল্লী ঋণের সুদ হারের উর্ধসীমা ১৩ শতাংশের পরিবর্তে ১১ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো। একই সঙ্গে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ কৃষকদের মামলার হয়রানি থেকে মুক্তি দেয়ার পাশাপাশি আপোস রফার মাধ্যমে চলমান মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি করতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত সোমবার রাষ্ট্রীয় ও বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, সঠিক সময়ে পণ্য পরিবহন করতে না পারাসহ বিভিন্ন কারণে কৃষক কৃষি ঋণের বকেয়া পরিশোধ করতে পারছেন না। বকেয়া পরিশোধ না করায় কৃষিঋণ গ্রাহকদের নামে ব্যাংকগুলো প্রায় দুই লাখ সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করেছে। এর মধ্যে অন্তত ১০ হাজার কৃষক গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ অবস্থায় কৃষকদের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করতে আপোস-মীমাংসার মাধ্যমে মামলাগুলো প্রত্যাহার করে নতুন ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে ব্যাংকগুলোকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে বলা হয়েছে।
×