ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আছেন নাম্বার ওয়ান

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

আছেন নাম্বার ওয়ান

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ ক্রীড়াঙ্গনে ‘ম্যাচ ফ্যাক্টস’ বলে একটি কথা কথা আছে। সংস্করণের ধারায় অনেকে যেটিকে ‘ইন দ্য স্পটলাইট’ও বলে থাকেন। ব্যকরণগতভাবে বর্তমান-অতীতের দ্বন্দ্ব থাকলেও, দুটি বাক্যই যে মোড় ঘুরিয়ে দেয়া পারফর্মার বা ঘটনার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, তা নিয়ে এতটুকু সন্দেহ নেই। আজকের বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের ‘স্পটলাইট’ নিয়ে গুগল করে দেখুন, মুহূর্তে হাজির হাজারও লিঙ্কÑ সাকিব আল হাসান ভার্সেস গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, সাকিব ভার্সেস এ্যারন ফিঞ্চ, সাকিব ভার্সেস মিচেল জনসন ..., আরে বাবা এত ঝামেলার দরকার কী, সাকিব ভার্সেস অস্ট্রেলিয়া লিখে দিলেই তো হলো! অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে অভিজ্ঞ আর বর্ষীয়ান তারকা ব্র্যাড হ্যাডিন বলেছেন, ম্যাচে সাকিবের ওপর থেকে চোখ সরালেই বিপদে পড়তে হবে। নিয়মিত অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের মতে, বাংলাদেশের হয়ে ম্যাচে মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন এমন তিন-চারজন খেলোয়াড়ের মধ্যে সাকিবই এগিয়ে। টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি-বিন মর্তুজা গাব্বায় অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য গোটা দল নিয়ে আরেক সতীর্থের দ্বারস্থ! কে তিনি? সাকিব আল হাসান। দুইবার বিগব্যাশে অংশ নেয়ার সুবাদে অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশন সম্পর্কে অভিজ্ঞতায় তিনিই যে এগিয়ে। এগিয়ে অভিজ্ঞতা, অর্জন, পারফর্মেন্স, সব বিচারেই। সাকিব কেবল সতীর্থদের চেয়ে এগিয়ে নন, এগিয়ে প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া দলের যে কারও চেয়ে। কুলীন অসিরা হ্যাটট্রিকসহ রেকর্ড চারবার বিশ্বকাপ জিততে পারে, একসঙ্গে টেস্ট, ওয়ানডে, টি২০ তিন ঘারনার ক্রিকেটেই সেরা অলরাউন্ডার কী তারা পেয়েছে? সাকিব জাত প্রতিভা। বড় ম্যাচের বড় পারফর্মার। অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপেক্ষ অনানুষ্ঠানিক, পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের কাছে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচেই হার, চারটিতেই অনুজ্জ্বল সাকিব। বাংলাদেশ অলিম্পিক অডিটরিয়মে এক অনুষ্ঠানে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসানের আক্ষেপ, ‘আমার দলে নাম্বার ওয়ান, এ হার মেনে নেয়া যায়? আশা করছি মূল মঞ্চে জ্বলে উঠবে সে।’ সাকিব তো আসলে মূল মঞ্চেরই নায়ক। ২০০৬-১৫ নয় বছরের ক্যারিয়ারের ক্রিকেট বিশ্ব অনেকবারই তা দেখেছে। জ্বলে উঠলেন মোক্ষম সময়ে। বাইরে যা-ই বলুন, আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ নিয়ে মাশরাফিদের ভেতরে যে একটা অজানা আশঙ্কা ছিল, জয়ের পর খোদ অধিনায়কও সেটি স্বীকার করেছেন! সাকিব খেললেন সাকিবের মতো। ২৯.১ ওভারে শীর্ষ চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে মাত্র ১১৯ রানÑ অজানা শঙ্কায় অগণিত ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ। পঞ্চম উইকেটে মুশফিককে নিয়ে ১১৪ রানের জুটি, তাও ১৫.৩ ওভারে, পাওয়ার প্লেতে ৫ ওভারে ৪৮! সাজঘরে ফেরার আগে ৫১ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৬৩ রানের দুরন্ত ইনিংস সাকিবের। বাংলাদেশ পেল ২৬৭ রানের চ্যালেঞ্জ। আফগান জুজু তাড়িয়ে ১৬২ রানের বিশাল জয়ের পথে বল হাতে ২ উইকেট। এই না হলে ‘নাম্বর ওয়ান’? ক্লার্ক-হ্যাডিনদের ভয়টা তাই অমূলক নয়। থেমে যাক ঘূর্ণিঝড় মার্সিয়া, জ্বলে উঠুক সাকিব, গাব্বায় লেখা হোক টাইগার ক্রিকেটের নতুন ইতিহাস।
×